আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
91 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম। 

হুজুর  এখন আমি পরিপূর্ন ঈমানদার না হলেও অন্তত শিরক করি না আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আগে করতাম। বই পড়ে হাত দেখা, জন্ম ছক দেখা, ইত্যাদি শিখতাম ও বিশ্বাস করতাম যে আমি ভবিষৎ বলতে পারি নাউজুবিল্লাহ। 

এখন হুজুর  আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে, মানুষ বা জ্বীন যদি ভবিষ্যৎ বলতে না পারে, তাহলে আমি হাতের রেখা বা জন্ম ছক দেখে কীভাবে বলতাম যে এটি ঘটেছিল ওই সালের ওই দিনে অথবা সামনে এটি ঘটতে যাচ্ছে। "আমি তো জ্বীনদের সাথে সরাসরি কোনো যোগাযোগ করি নাই।"  তাহলে আমি কিভাবে বলতে পারলাম??? এটা ঠিক যে ১০০% মিলে না। কিন্তু হুজুর, যা মিলে তা ইসলাম অনুসারে আমার মাথায় ধরে না যে কিভাবে ভবিষৎ বলতে পারি।

কয়েকটি উদাহরণ দিই। আমি ছক দেখে জানলাম একজনের জন্মের সময় ঝড় বৃষ্টি ছিল। জিজ্ঞাসা করতে তার মা বাবা ঠিকই বললো যে এটি সত্য। আরেকজনের পুলিশি ঝামেলা হয়েছিল। এটিও মিলে গেলো। হাত দেখেও একই অবস্থা। বেশির ভাগই মিলে যায় সব না মিললেও। এমনকি একটা ঘটনা কোন সময়ে ঘটবে  তার হিসেব মোটামুটি ২-৩ বছর কম বেশি করে বলে দেয়া যায়। আর ছক দেখলে মোটামুটি ঠিক সময়টাই বলে দেয়া যায়। 

 কিন্তু নবী সাঃ এর একটি হাদিস হচ্ছে , আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সা: কে গণকদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন এরা কিছুই না। তারপর গণকদের কথা মাঝেমাঝে সত্য হওয়ার ব্যাপারে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু উল্লেখ করলেন। রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, এটা সত্য সংবাদের একটি অংশ বিশেষ যা জ্বীনেরা চুরি করে এবং এ তথ্যের সঙ্গে একশটি মিথ্যা যুক্ত করে তার বন্ধুর কাছে প্রকাশ করে। 

--- বুখারী কতৃক সংগ্রহীত(আরবী - ইংরেজি) খন্ড ৭, পৃষ্ঠা ৪৩৯, হাদীস নং.৬৫৭ //// মুসলিম (ইংরেজি অনুবাদ) খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ১২০৯, হাদিস নং ৫৫৩৫

কিন্তু আমার তো জ্বীনদের সাথে যোগাযোগ নেই। তাহলে কি করে এইসব জ্ঞানের দ্বারা ভবিষৎ প্রায় মিলে যায়??

1 Answer

0 votes
by (684,760 points)
জবাবঃ-
السلام عليكم من التبع الهدي 
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ يَحْيَى، بْنِ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ الْكُهَّانَ كَانُوا يُحَدِّثُونَنَا بِالشَّىْءِ فَنَجِدُهُ حَقًّا قَالَ " تِلْكَ الْكَلِمَةُ الْحَقُّ يَخْطَفُهَا الْجِنِّيُّ فَيَقْذِفُهَا فِي أُذُنِ وَلِيِّهِ وَيَزِيدُ فِيهَا مِائَةَ كَذْبَةٍ " .

আব্দ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ..... আয়িশাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! জ্যোতিষীরা কোন ব্যাপারে আমাদের কোন কথা বলত, অতঃপর তা আমরা বাস্তবে প্রত্যক্ষ করতাম। তিনি বললেন, সেটি একটি বাস্তব সত্য কথা, যা কোন জিন চুরি করে এনে সেটি তার দোসর ঠাকুরের কর্ণে প্রবেশ করাতো, আর সে তার সঙ্গে একশটি অবাস্তব মিথ্যা জুড়ে দিত। (মুসলিম শরীফ ৫৭০৯.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৬২২, ইসলামিক সেন্টার ৫৬৫১)

عَن أبي هُرَيْرَة أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا قَضَى اللَّهُ الْأَمْرَ فِي السَّمَاءِ ضَرَبَتِ الْمَلَائِكَةُ بِأَجْنِحَتِهَا خُضْعَانًا لِقَوْلِهِ كَأَنَّهُ سِلْسِلَةٌ عَلَى صَفْوَانٍ فَإِذَا فُزِّعَ عَنْ قُلُوبِهِمْ قَالُوا: مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ؟ قَالُوا: لِلَّذِي قَالَ الْحَقَّ وهوَ العليُّ الكبيرُ فَسَمعَهَا مُسترِقوا السَّمعِ ومُسترقوا السَّمْعِ هَكَذَا بَعْضُهُ فَوْقَ بَعْضٍ «وَوَصَفَ سُفْيَانُ بِكَفِّهِ فَحَرَّفَهَا وَبَدَّدَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ» فَيَسْمَعُ الْكَلِمَةَ فَيُلْقِيهَا إِلَى مَنْ تَحْتَهُ ثُمَّ يُلْقِيهَا الْآخَرُ إِلَى مَنْ تَحْتَهُ حَتَّى يُلْقِيَهَا عَلَى لِسَانِ السَّاحِرِ أَوِ الْكَاهِنِ. فَرُبَّمَا أَدْرَكَ الشِّهَابُ قَبْلَ أَنْ يُلْقِيَهَا وَرُبَّمَا أَلْقَاهَا قَبْلَ أَنْ يُدْرِكَهُ فكذب مَعَهَا مِائَةَ كَذْبَةٍ فَيُقَالُ: أَلَيْسَ قَدْ قَالَ لَنَا يَوْمَ كَذَا وَكَذَا: كَذَا وَكَذَا؟ فَيَصْدُقُ بِتِلْكَ الْكَلِمَةِ الَّتِي سُمِعَتْ مِنَ السَّمَاءِ . رَوَاهُ البُخَارِيّ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা আকাশমণ্ডলীতে যখন কোন ফায়সালা করেন, তখন সে নির্দেশে মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় তাদের পাখাসমূহ নাড়াতে থাকেন। আল্লাহ তা‘আলার সে নির্দেশটির আওয়াজ সে শিকলের শব্দের মতো যা কোন একটি সমতল পাথরের উপরে টেনে নেয়া হলে শোনা যায়। অতঃপর যখন মালায়িকাহ্ অন্তর হতে সে ভীতি দূর হয়ে যায়, তখন সাধারণ মালাক (ফেরেশতা) আল্লাহর নিকটতম মালাক-কে জিজ্ঞেস করেন, তোমাদের রব্ কি নির্দেশ দিয়েছেন? তাঁরা বলেন, আমাদের প্রভু যা বলেছেন, তা সম্পূর্ণ সঠিকই বলেছেন। (এবং সে নির্দেশটি কি তা জানিয়ে দেন,) এরপর বলেন, আল্লাহ তা‘আলা হলেন সুমহান ও মর্যাদাসম্পন্ন।

আল্লাহর নবী আরো বলেছেনঃ আল্লাহর ফায়সালাকৃত বিধান সম্পর্কে ফেরেশতাদের মধ্যে যেসব আলোচনা হয়, জীন-শায়ত্বনেরা চোরা পথে একজন আরেকজনের উপরে দাঁড়িয়ে শোনার চেষ্টা করে। বর্ণনাকারী সুফ্ইয়ান নিজের হাতের অঙ্গুলিগুলো ফাঁক করে শয়তানরা কিভাবে একজন আরেকজন হতে কিছুটা ফাঁক করে কিভাবে একজন আরেকজন হতে কাছাকাছি দাঁড়ায় তা অনুশীলন করে দেখিয়েছেন। অতঃপর যে শয়তান প্রথমে নিকট হতে শুনতে পায় সে তা তার নিচের শয়তানকে বলে দেয় এবং সে তার নিচের জনকে, এভাবে কথাটি জাদুকর ও গণকের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়।

অনেক সময় এমন হয় যে, ঐ কথাটি পৌঁছার পূর্বেই আগুনের ফুলকি তাদের ওপর নিক্ষেপ করা হয় (ফলে আর তা গণকদের পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না)। আবার কখনো তারকা নিক্ষেপ হওয়ার পূর্বেই তা তাদের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়। অতঃপর তারা ঊর্ধ্বজগতে শুনা সে (সত্য) কথাটির সাথে (নিজেদের মনগড়া) শত শত মিথ্যার মিশ্রণ ঘটিয়ে মানুষের কাছে বলে। আর যখন তাকে বলা হয় যে, অমুক দিন তুমি আমাদেরকে এই এই কথা বলেছিলে, (তা তো মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।) তখন ঐ একটি কথা দ্বারা তার সত্যতা প্রমাণ করা হয়, যা ঊর্ধ্বজগৎ হতে শ্রুত হয়েছিল।
(সহীহ : বুখারী ৪৭০১, ইবনু মাজাহ ১৯৪, আল জামি‘উস্ সগীর ৭৩৬, সহীহুল জামি‘ ৭৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৬, তিরমিযী ৩২২৩।)

وَعَن عَائِشَة قَالَتْ: سَأَلَ أُنَاسٌ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْكُهَّانِ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّهُمْ لَيْسُوا بِشَيْءٍ» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَإِنَّهُمْ يُحَدِّثُونَ أَحْيَانًا بِالشَّيْءِ يَكُونُ حَقًّا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تِلْكَ الْكَلِمَةُ مِنَ الْحَقِّ يَخْطَفُهَا الْجِنِّيُّ فَيَقُرُّهَا فِي أُذُنِ وَلَيِّهِ قَرَّ الدَّجَاجَةِ فَيَخْلِطُونَ فِيهَا أَكْثَرَ مِنْ مِائَةِ كذبة»

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কিছু লোক রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জ্যোতিষীদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেনঃ তারা কিছুই নয়। তারা বলল : হে আল্লাহর রসূল! তারা কোন কোন সময় এমন কথা বলে, যা সত্য ও সঠিক হয়ে থাকে। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঐ কথাটি সত্য যা জীন শয়তান (ঊর্ধ্বজগৎ হতে) ত্বরিত শুনে নেয়। অতঃপর মোরগের করকরানোর মতো শব্দ করে তার বন্ধুর কানে তা পৌঁছিয়ে দেয়। এরপর সে গণক ঐ একটি সত্য কথার সাথে শত শত মিথ্যা মিলিয়ে প্রকাশ করতে থাকে।
(সহীহ : বুখারী ৬২১৩৭, ৭৫৬১; মুসলিম (২২২৮)-১২৩, আহমাদ ২৪৫৭০, বায়হাক্বী’র কুবরা ১৬৯৫৩, আল আদাবুল মুফরাদ ৮৮২, আল মু‘জামুল আওসাত্ব ৬৬৬, সহীহ ইবনু হিব্বান ৬১৩৬, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ২০৩৪৭।)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছেঃ-
আমি ছক দেখে জানলাম একজনের জন্মের সময় ঝড় বৃষ্টি ছিল। জিজ্ঞাসা করতে তার মা বাবা ঠিকই বললো যে এটি সত্য। আরেকজনের পুলিশি ঝামেলা হয়েছিল। এটিও মিলে গেলো। হাত দেখেও একই অবস্থা। বেশির ভাগই মিলে যায় সব না মিললেও। এমনকি একটা ঘটনা কোন সময়ে ঘটবে  তার হিসেব মোটামুটি ২-৩ বছর কম বেশি করে বলে দেয়া যায়। আর ছক দেখলে মোটামুটি ঠিক সময়টাই বলে দেয়া যায়। 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনি যেই জ্ঞান,ছক ইত্যাদির সহায়তা নিয়ে এসব বলে দিচ্ছেন,যার কিছুটা মিলে যাচ্ছে।
এই জ্ঞান,ছক সবই জীন শয়তান থেকে নেয়া জ্ঞ্যান।
সুতরাং এখানে হাদীস সঠিকই রয়েছে।
হাদীসের ব্যাখ্যায় কোনো সমস্যা নেই।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনার প্রতি পরিপূর্ণ ভাবে মুসলিম হওয়ার আহবান রইলো।
আশা করি মুমিনদের জান্নাতী জামায়াতে আপনিও শরীক হবেন,আল্লাহ তায়ালা আপনাকে কবুল করুন।
আমিন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (4 points)
ধন্যবাদ হুজুর। জাযাকাল্লাহ খায়রান।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...