জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
শরীয়তের বিধান হলো কাহারো সম্পদ তার সন্তুষ্টি ব্যাতিত ব্যবহার করা জায়েজ হবেনা।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا ﴿۲۹﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
(সুরা নিসা ২৯)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى
আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।
আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
পিতা মাতা যদি আপনার কোনো কাজে আপনাকে খরচের জন্য টাকা দেয়,যেমন, তাহলে সে কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরেও টাকা বেঁচে গেলে সেটি পিতা মাতাকে ফেরত দিতে হবেনা।
কেননা পিতা মাতা এই টাকার মালিক আপনাকে বানিয়ে দিয়েছে।
★কিন্তু পিতা মাতা যদি তাদের কোনো কাজ/বাসার কাজ আপনাকে করতে দেয়,যেমন বাজার,বিল পরিশোধ ইত্যাদি। তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি পিতা মাতার পক্ষ হতে উকিল,তাই এক্ষেত্রে কাজ সম্পন্ন করার পর টাকা বেঁচে গেলে সেটি পিতা মাতাকে ফেরত দিতে হবে।
তাদের অনুমতি ছাড়া এই টাকা ব্যবহার করা আপনার জন্য জায়েজ হবেনা।
(০২)
মসজিদে গেলে অনেক সময় শরীর থেকে বিভিন্ন ময়লা পড়ে থাকে যেমন: চুল, পশম, পায়ের বালু, হাঁচি দেয়া ইত্যাদি।
এতে সমস্যা হবেনা।
তবে যথাসম্ভব নিজেই নিজের ময়লা পরিস্কার করলে ভালো হবে।
★তবে অজু খানায় যেহেতু লেখা থাকে, জুতা স্যান্ডেল পড়ে যাওয়া নিষেধ।
সুতরাং এক্ষেত্রে নিয়ম না মানলে সমস্যা হবে।
কেউ নিয়ম মানেনা,এই অজুহাতে নিয়মের খেলাফ কোনো কাজ করা যাবেনা।
(০৩)
এতে তার নিজের উপর জুলুমের গোনাহ হবেনা।
(০৪)
সব ধরনের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য নিম্নোক্ত কাজ জরুরীঃ-
সবসময় সৎ কাজ আঁকড়ে ধরা, অসৎ কাজ পরিহার করা, আল্লাহভীরু মুত্তাকিদের সঙ্গে চলাফেরা করা এবং পাপাচারীদের সঙ্গ ত্যাগ করা।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন ফিতনা তীব্র আকার ধারণ করবে তখন তোমরা সৎ কাজকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরবে এবং অসৎ কাজ হতে বিরত থাকবে। তোমাদের মাঝে বিশেষ লোক যারা রয়েছে তাদের প্রতি মনোনিবেশ করবে এবং সর্বসাধারণকে এড়িয়ে চলবে।’ (আল ফিতান : ৭২১)
ফিতনার যুগে কেউ যদি জান্নাতের উপযুক্ত হতে চায় তার জন্য বিশেষ তিনটা উপায় রয়েছে। হজরত উকবা ইবনে আমির (রা.) বলেন, একদা আমি রাসুলুল্লাহর (সা.) সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং বললাম, সে সময় নাজাতের উপায় কী? তিনি বললেন, নিজের জিহবা আয়ত্তে রাখবে, নিজের ঘরে পড়ে থাকবে এবং নিজের পাপের জন্য কান্না করবে। (মেশকাত : ৪৮৩৭)
ফিতনার যুগে গুরুত্বপূর্ণ একটি অবলম্বন হচ্ছে কোরআন-সুন্নাহ আঁকড়ে ধরা, যা মানুষের মধ্যে না থাকলে যেকোনো সময় ফিতনা গ্রাস করে ফেলতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয় আমি তোমাদের মাঝে এমন বস্তু রেখে যাচ্ছি, তোমরা যদি তা আঁকড়ে ধরে থাক তবে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না। আর তা হলো আল্লাহর কিতাব ও নবীর সুন্নত। (আত-তারগিব ওয়াত তাহরিব : ৪০)
ফিতনার সময় নিজেকে আমলে ব্যস্ত রাখা, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরের পরিবেশে না বের হওয়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, অচিরেই এমন ফিতনার আত্মপ্রকাশ হবে, বসে থাকা ব্যক্তি দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি হতে উত্তম হবে। আর দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি চলমান ব্যক্তি হতে উত্তম হবে। আর চলমান ব্যক্তি দ্রুতগামী ব্যক্তি হতে ভালো থাকবে। (মুসলিম : ৭১৩৯)।
আল্লাহর রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, ‘ফিতনার সময় ঈমানদারের করণীয় হলো সর্বদা চুপ থাকা। এত পরিমাণ চুপ থাকা, যার কারণে কোনো ফিতনা তাকে আকৃষ্ট করতে না পারে। (আল ফিতান : ৭৩৫)
ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর কাছে অধিক পরিমাণে দোয়া করা।
(০৫)
না,এক্ষেত্রেও সেই খারাপ,মন্দ কাজ করা যাবেনা।
(০৬)
এক্ষেত্রে নিজের আত্মীয় স্বজন বা একান্ত আস্থাভাজন বন্ধু থেকে ঋন নিতে পারেন।
ব্যাংক থেকে ঋন নিতে চাইলে সরাসরি টাকা না নিয়ে ব্যবসার পন্য নিতে পারেন।
(০৭)
এগুলো কুফরি নয়।
তবে ইহা ঈমান বিধ্বংসী আকীদা।
,
উক্ত ব্যাক্তি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অন্তর্ভুক্ত থাকবেনা।
তাকে তওবা করে ফিরে আসতে হবে।
(০৮)
ঈমান ভঙ্গের অন্যতম মৌলিক কারণগুলোঃ-
★আল্লাহর ইবাদতের ক্ষেত্রে কাউকে শরিক করা।
★দ্বীনের কোনো বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা।
★জাদু করা বা কুফরি কালাম করা।
★নবি (সা.)’র ফয়সালার তুলনায় অন্য কারও ফয়সালাকে উত্তম মনে করা।
★মুহাম্মাদ (সা.) আনীত কোনো বিধানকে অপছন্দ করা।
★কুরআন, হাদীস,আল্লাহ,রাসুলুল্লাহ সাঃ কে নিয়ে হাসি ঠাট্রা করা।
★কুরআনের কোনো আয়াত অস্বীকার করা।
(০৯)
ঈমান চলে যাওয়ার মতো কুফরি কাজ করলে ঈমান চলে যাবে।
(১০)
নাপাকি থাকা নিয়ে নিশ্চিত হলে আর নাপাকির পরিমাণ এক দিরহাম সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি হলে নামাজ হবেনা।
(১১)
হক আদায় হয়ে যাবে।
(১২)
এখানে নফল দান হয়ে যাবে।
তবে এর দ্বারা কোনো মান্নত বা কাফফারা ইত্যাদি আবশ্যকীয় কিছু সদকাহ উদ্দেশ্য হলে দান কৃত বস্তু যাকে দান করা হলো,সে খরচ না করে থাকলে সেটির নিয়ত করা যাবে।
নতুবা নফল দান হয়ে যাবে।
(১৩)
বিষয়টি সম্পর্কে তার সাথে আলোচনা করে উভয়ের সন্তুষ্টি চিত্তে যেই সিদ্ধান্ত হয়,সেটিই মেনে নিবেন।
(১৪)
এতে হক নষ্ট করা হবেনা।
(১৫)
আপনি বিল পে করার পর বিকাশ আপনাকে যে রিওয়ার্ড পয়েন্ট দেবে, সেটা আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।
(১৬)
মালিক পাওয়া না গেলে আপনি সেটা গরিব মিসকিনকে দান করে দিবেন।
এতো দিনের ব্যবহারের জন্য আপনাকে তওবা করতে হবে।
আর ব্যবহার বাবদ আনুমানিক কিছু টাকা দান করবেন।
(১৭)
এটি যদি অভিজ্ঞতা থেকে প্রমানিত হয়,সেক্ষেত্রে নেয়া যাবে।
তবুও সতর্কতামূলক তাকে দেখানো বা বলা উচিত।
,
তবে এমনিতেই এমন ধারনার ভিত্তিতে কাহারো কিছু অনুমতি ছাড়া নেয়া যাবেনা।
(১৮)
তাদের মধ্যে বোঝা পড়া হয়ে গেলে,মাফ করে দিলে, হক থেকে মুক্ত হয়ে যাবে
(১৯)
এক্ষেত্রে তার বিকাশ/নগদ/বা ব্যাংকে একাউন্টে টাকা পাঠাবেন।
(২০)
এই জন্য নিজেকে সর্বদা সতর্ক রাখতে হবে,সন্দেহ সূচক সকলের থেকে মাফ চেয়ে নিতে হবে।
(২১)
সেক্ষেত্রে উপদেশ দেয়া যাবে।
সমস্যা নেই।
(২২)
পড়ে থাকা কিছু খেলে বা নিলে হক নষ্ট হয়।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতেও তাদের গাছের পড়ে থাকা ফল অনুমতি ছাড়া খাওয়া যাবেনা।
হ্যাঁ যদি তারা অগ্রীম অনুমতি দিয়ে দেয়,তাহলে খাওয়া যাবে।
(২৩)
আবার ওই ভুল হওয়া জায়গা থেকে শুদ্ধ করলে পড়লে নামাজের ক্ষতি হবেনা।
এবং প্রথম রাকাতে সূরা নাস পড়া শুরু করে হঠাৎ সেটা বাদ দিয়ে অন্য সূরা পড়া যাবেনা।
এটি মাকরুহ।
সুরা নাসই পড়তে হবে।
পরবর্তী রাকাত গুলোতেও সুরা নাসই পড়তে হবে।
(২৪)
এটি জায়েজ হবেনা।
তবে আপনি যদি দাম মিটানোর সময় ৮ টাকা মিটিয়ে নেন,সেক্ষেত্রে সমস্যা নেই।
(২৫)
যদি উক্ত নোট এমন ছেড়া হয়ে থাকে যে, তা চলবে তবে এমন ছেড়া নোট সে জানলে নিতো না। তাহলে এমন নোট তাকে দেওয়াটা ধোঁকা ও প্রতারণা হয়েছে। সুতরাং এই ক্ষেত্রে ধোঁকা ও প্রতারণার গুনাহ হবে। আর যদি এমন ছেড়া নোট হয়ে থাকে যে, তা বাজারে অচল। তাহলে ধোঁকা ও প্রতারণার গুনাহ হওয়ার পাশা পাশি হক না আদায় করারও গুনাহ হবে।
বিস্তারিত জানুনঃ-
(২৬)
এভাবে নিয়ত করে দান করা যাবে।