ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
এই হাদীস সত্য।হযরত যায়নাব পর্দার আড়ালে থেকে ট্যানারি কাজ করতেন।তথা চামড়ার কে লবন দ্বারা শুকিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করতেন।
(২)
স্ত্রীর সকল প্রকার প্রয়োজন পূর্ণ করার দায়িত্ব স্বামীর।তবে স্ত্রীর বিলাসিতার দায়িত্ব স্বামীর উপর নয়। হাত খরচ বলতে যদি জরুরত বা হাজত অতিরিক্ত কিছু হয়, তাহলে সেটার দায়িত্ব স্বামীর উপর বর্তাবে না।
(৩)
জ্বী, স্বামীর অনুমতি লাগবে।
(৪)
সে নিজে ঘরে বসে সেলাই ইত্যাদির কাজ করে তারপর উপার্জিত অর্থ থেকে দান সদকাহ করবে।
(৫)
স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ স্ত্রীর নিজস্ব সম্পদ থেকেই হবে। স্ত্রীর নিজস্ব সম্পদ না থাকলে তখন স্বামীর উপর স্ত্রীর চিকিৎসার দায়ভাড় পড়বে।
(৬)
মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বর্ণনা করেন,
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ، أَنَّ أَبَاهُ، قَالَ عَادَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ مِنْ شَكْوَى، أَشْفَيْتُ مِنْهَا عَلَى الْمَوْتِ، فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ بَلَغَ بِي مَا تَرَى مِنَ الْوَجَعِ، وَأَنَا ذُو مَالٍ، وَلاَ يَرِثُنِي إِلاَّ ابْنَةٌ لِي وَاحِدَةٌ، أَفَأَتَصَدَّقُ بِثُلُثَىْ مَالِي قَالَ " لاَ ". قُلْتُ فَبِشَطْرِهِ قَالَ " الثُّلُثُ كَثِيرٌ، إِنَّكَ أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ أَغْنِيَاءَ، خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُونَ النَّاسَ، وَإِنَّكَ لَنْ تُنْفِقَ نَفَقَةً تَبْتَغِي بِهَا وَجْهَ اللَّهِ، إِلاَّ أُجِرْتَ، حَتَّى مَا تَجْعَلُ فِي فِي امْرَأَتِكَ ". قُلْتُ أَأُخَلَّفُ بَعْدَ أَصْحَابِي قَالَ " إِنَّكَ لَنْ تُخَلَّفَ فَتَعْمَلَ عَمَلاً تَبْتَغِي بِهِ وَجْهَ اللَّهِ، إِلاَّ ازْدَدْتَ دَرَجَةً وَرِفْعَةً وَلَعَلَّكَ تُخَلَّفُ حَتَّى يَنْتَفِعَ بِكَ أَقْوَامٌ، وَيُضَرَّ بِكَ آخَرُونَ، اللَّهُمَّ أَمْضِ لأَصْحَابِي هِجْرَتَهُمْ، وَلاَ تَرُدَّهُمْ عَلَى أَعْقَابِهِمْ، لَكِنِ الْبَائِسُ سَعْدُ ابْنُ خَوْلَةَ ". قَالَ سَعْدٌ رَثَى لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ أَنْ تُوُفِّيَ بِمَكَّةَ.
বিদায় হাজ্জের (হজ্জ) সময় আমি রোগে আক্রান্ত হয়ে মরণাপন্ন হয়ে পড়েছিলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সময় আমাকে দেখতে এলেন। তখন আমি বললাম আমি যে রোগ-ষন্ত্রনায় আক্রান্ত তাতো আপনি দেখছেন। আমি একজন ধনবান লোক। আমার একটি মেয়ে ছাড়া আর কেউ ওয়ারিস নেই। তাই আমি কি আমার দু’তৃতীয়াংশ মাল সাদাকা করে দিতে পারি? তিনি বললেনঃ না। আমি বললাম তবে অর্ধেক মাল? তিনি বললেনঃ না। এক তৃতীয়াংশ অনেক। তোমার ওয়ারিসদের লোকের কাছে ভিক্ষার হাত প্রসারিত করার মত অভাবী রেখে যাওয়ার চাইতে তাদের ধনবান রেখে যাওয়া তোমার জন্য অনেক উত্তম। আর তুমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টিটি লাভের জন্য যা কিছুই ব্যয় করবে নিশ্চয়ই তার প্রতিদান দেওয়া হবে। এমন কি (সে উদ্দেশ্যে) তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে লুকমাটি তুলে দিয়ে থাকো তোমাকে এর প্রতিদান দেওয়া হবে।
আমি বললাম তা হলে আমার সঙ্গীগণের পরেও কি আমি বেঁচে থাকবো? তিনি বললেন নিশ্চয়ই তুমি তাদের পরে বেঁচে থাকলে তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য যা কিছু নেক আমল করনা কেন, এর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা ও সম্মান আরও বেড়ে যাবে। আশা করা যায় যে, তুমি আরও কিছু দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকবে। এমন কি তোমার দ্বারা অনেক কাওম উপকৃত হবে। আর অনেক কাওম ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তারপর তিনি দুআ করলেন ইয়া আল্লাহ! আপনি আমার (মুহাজির) সাহাবীগণের হিজরতকে বহাল রাখুন। আর তাদের পেছনে ফিরে যেতে দিবেন না। সা’দ ইবনু খাওলাহ (রাঃ) এর দূর্ভাগ্য (কারণ তিনি বিদায় হাজ্জের সময় মক্কায় মারা যান) সা’দ (রাঃ) বলেন মক্কাতে ওফাতের কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন।(সহীহ বুখারী-৫৯৩৩)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এক তৃতীয়াংশ সদকাহ করা উত্তম। তবে পরিবেশ পরিস্থিতি প্রতিকুলে হলে সদকাহ না করে সন্তাদেরকে স্বাবলম্বী করে যাওয়াই উত্তম।
(৭)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/468
(৮)
ভুলে যাওয়ার ভয়ে কুরআন মুখস্থকে পরিত্যাগ করা উচিৎ। বরং ইচ্ছাকৃত কুরআন না পড়ার কারণে যদি কেউ কুরআনকে ভুলে যায়, তবেই কুরআন তার বিরুদ্ধে দাড়াবে।
(৯)
স্ত্রীর অনুমতি ব্যতিত চার মাস ১০ দিনের বেশী বিদেশে সফর করা যাবে না। এবং স্ত্রীকে অবহেলা করা যাবে না। সবসময় কথা যে বলতেই হবে,এমন নয়,বরং অবহেলা করা যাবে না।