আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
266 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম হুজুর।আমি খুবই পেরেশানিতে আছি। সম্পূর্ণটা কষ্ট করে পড়ে যদি দ্রুত উত্তর দিতেন...

আমার ওয়াস ওয়াসার সমস্যা আছে।অনেক বিষয়েই ওয়াস ওয়াসা হয়।হুরমতের বিষয়ে জানার পর থেকেই এই বিষয় এ ওয়াস ওয়াসা হয়। শুরুতে কামভাবের সাথে স্পর্শর ব্যাপারে জানার পর সেটা নিয়ে হতো তারপর সহবাসের উদ্দেশ্যে ব্যাপারটা জানার পর এটা নিয়েও হয়।
এজন্য আমি এখন চেষ্টা করি সবসময় আম্মুর থেকে দূরে থাকার।কিন্তু সবসময় পারি না।এই ওয়াস ওয়াসার জন্য আম্মুর সাথে যখনই কোন কারণে স্পর্শ লাগে আমি ভয়ে আঁতকে উঠি।তখন তলপেটে এক ধরনের চাপ অনুভূত হয় আর তখন লিঙ্গও নড়ে উঠে।আমি নিশ্চিত এটা অই ভয়ে আঁতকে উঠার জন্যই হয়। আর এ সময় কোনো কামভাব অথবা সহবাসের ইচ্ছাও আসে না।আমি আম্মুকে অনেক বেশি সম্মান আর শ্রদ্ধা করি।সহবাসের ইচ্ছা আসার প্রশ্নই উঠে না।

কিন্তু একবার কোনো কাজে আম্মুই আমার হাত ধরেছেন।সাথে সাথেই আমি হাত ছাড়িয়ে নেবার চেষ্টা করি। কিন্তু এর আগেই আমার মধ্যে ওয়াস ওয়াসা আসে।আর ওয়াস ওয়াসার মাধ্যমে আমার তখন সহবাসের ইচ্ছার চিন্তাটা মাথায় আসে। মানে মনে মনে কথা বলার মতো করে আসে। হয়ত মনে মনে বলে উঠলাম অথবা এই চিন্তা করলাম যে, সহবাসের উদ্দেশ্যেই এই স্পর্শ অথবা আমার ত সহবাসের ইচ্ছা জাগ্রত হয়েছে বা আমি সহবাস করতে চাই এই ধরনের কিছু।এই চিন্তাটা ওয়াস ওয়াসার জন্য হয়েছে ( মনে মনে বলে উঠলাম নাকি শুধু চিন্তা করলাম সেটা জানি না, সম্ভবত দুইটা একই জিনিস) আর তখনও বরাবরের মতই আমি আঁতকে উঠি, তলপেটে চাপ আর সাথে সাথে  লিঙ্গও একবার নড়ে উঠে।আমার যতদূর ধারণা এটা ভয়ের কারণেই হয়েছে।

কারণ, বাস্তবে আমার মধ্যে কোনো ধরনের কামভাব ছিল না।আর সহবাসের ইচ্ছা তো কোনোভাবেই জেগে উঠে নাই।মানে মনে মনে কিছু চিন্তা করে থাকলে বা বলে থাকলে সেটা তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। আমার মধ্যে সত্যিকার অর্থে এরকম কোনো ইচ্ছা ভুলেও জাগ্রত হয় নাই।কারণ, যেহেতু হাতটা আম্মু ধরেছিলেন, তাই আমি ভয়ে ছিলাম প্লাস হাত ছাড়ানোর চেষ্টায় ছিলাম।শুধু ওয়াসা ওয়াসার কারণে মনের মধ্যে এই চিন্তাটা আসে। আর হাত লাগা,চিন্তা আসা,লিঙ্গ নড়ে উঠা, হাত সরিয়ে নেয়া সসম্পূর্ণ ব্যাপারটাই ৫ সেকেন্ডের কমে ঘটেছে।

১)দয়া করে যদি বলতেন এতে আম্মু আব্বুর মধ্যে হুরমত সাব্যস্ত হয়ে গেছে কিনা??আমি খুব পেরেশানিতে আছি হুজুর।
২)আর এই মনে মনে বলে উঠা অথবা চিন্তা করা দুইটা কি একই জিনিস?দুটোর জন্য কি একই বিধান?

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছে 

أخبرنا إسماعیل بن عیاض، حدثنا سعید بن أبی عروبة، من قیس بن سعید، عن مجاهد في الرجل یفجر بالمرأة قال: إذا نظر إلی فرجها فلا یحله له أمها ولا بنتها، أخرجه محمد في الحجج أیضًا ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۲

যার সারমর্ম হলো যদি কেহ কোনো মহিলার লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করে,তাহলে সেই মহিলার মেয়ে বা তার মাকে সে কোনোদিন বিবাহ করতে পারবেনা।

ই'লাউস সুনান ১১/১৩১

أخبرنا أبوحنیفة، عن حماد، عن إبراهیم، قال: إذا قبل الرجل أم أمرأته أو لمسها من شهوةٍ حرمت علیه امرأته، أخرجه محمد في الحجج ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۱)

যার সারমর্ম হলো কেহ যদি তার শাশুড়িকে চুম্বন করে,অথবা উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করে,তাহলে স্ত্রী তার উপর চিরজীবনের জন্য হারাম হয়ে যাবে।      

হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে।

শর্তগুলো হল,
১–

সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।

فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة
وقال ابن عبدين– ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)

যার সারমর্ম হলো যদি কাপড় পরিধান অবস্থায় হয় তাহলে যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। 
তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবে।   

( যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে,যেটা শরীরের গরমি ভাব অনুভব হয়,তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবে। ) 

অন্যথায় হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।     

২–

স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া।

পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।

وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،
وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى
وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)  
সারমর্মঃ
উত্তেজিত হওয়ার সীমা হলো লিঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
মহিলাদের ক্ষেত্রে কলব তথা অন্তর কেঁপে উঠা, আগে থেকেই কেঁপে উঠে থাকলে স্পর্শ করার পর কাঁপা বেড়ে যাওয়া। 

৩-
স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। 
আগে বা পরে উত্তেজিত হলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।      

وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا بعدهما
وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح : وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ، ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/108)

যার সারমর্ম হলো স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে না। 

বিস্তারিত জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই ,

(০১)

আপনার প্রশ্ন পুরাটাই পড়েছি।  পুরো প্রশ্নের বিবরণ মতে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানিত হবেনা।  আপনার আম্মু আব্বুর মধ্যে হুরমত সাব্যস্ত হয়ে যায়নি। আপনি নিশ্চিত থাকুন। মায়ের কাছে কাছি থাকাবস্থায় সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ রইলো। 

(০২)

দুটো একই জিনিস নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

–1 vote
1 answer 369 views
0 votes
1 answer 139 views
...