আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
267 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (8 points)
edited by
আসসালমুআলাইকুম।

হুজুর, ১২ টি প্রশ্ন ছিল। খুব সংক্ষেপে উত্তর দিবেন একটু কষ্ট করে।

১. বিভিন্ন বইয়ে হোক বোর্ডের কিংবা আউট বই, কার্টুন আঁকা থাকে। বইয়ের মলাটেও কার্টুন থাকে। এমন বইয়ে যদি খারাপ কিছু না থাকে, তখন কি পুরো বইটিই হারাম হবে?

২. কিছু বইতে ক্যামেরাতে তোলা ছবি থাকে ভিতরের পৃষ্ঠায় কিংবা মলাটে, এতে বেপর্দা নারীদের ছবি কখনো অতিরিক্ত, কখনো কম বা মধ্যম ধরনের থাকে। বইটি যদি ভালো হয়, তাহলে কি পুরো বইটিই হারাম হবে?

৩.আমি যদি এমন বই পড়ি, যেসব ক্ষেত্রে ইসলামিক কোনো আচার রীতি মানে না অথবা ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে। যেমন পড়লাম এক কাফের পরিবারের কাহিনী যারা ইসলমিক নিয়ম রীতি মানে না, নমস্কার দেয় বা গুড মর্নিং বলে। ইসলাম বিদ্বেষী বা ইসলামিক না এমন বই কি পড়া যাবে?

৪.কাল্পনিক প্রাণী যেমন ড্রাগন, হাইড্রা অথবা ভূতের কাহিনী যা বাস্তবে নেই, সেইসব কাহিনী কি পড়া যাবে?

৫.কোনো বইয়ে শুধু একটি লাইন বা শুধু একটি সম্পূর্ণ কবিতায় কোনো মূর্তি পূজার কথা নিয়ে/ এইসব মূর্তি পূজাকে নিয়ে প্রশংসামূলক কিছু লেখা হয়, তাহলে কি পুরো বইটিই ফেলে দিবো?

৬.কোনো বইয়ের একটি/ কয়েকটি লাইনে শিরক অথবা কুফর থাকলে পুরো বইটিই কি হারাম হবে?

৭.কোনো গল্প উপন্যাসের বইয়ে পুরো বিষয়ই যদি শিরক নিয়ে হয়, যেমন হ্যরি  পটার। এইসব জাদু, ভবিষ্যতবাণী ইত্যাদি নিয়ে থাকলে পুরো বইটিই কি হারাম হবে?

৮.হারাম টাকায় কেনা ইসলামিক বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করলে ঐ জ্ঞান কি হারাম হবে? পরে অবশ্য ঐ বইয়ের সমপরিমাণ টাকা সদকাহ দিতে হবে জানি।

৯.ইসলাম বিদ্বেষী কিছু কি পড়া যাবে এগুলোতে বিশ্বাস না করে?

১০.বইয়ের লেখক যদি রেফারেন্স না দেয় যে লোকটি কোন অন্য লেখকের থেকে এইসব তথ্য জোগাড় করেছেন, সেইসব বই কেনা ও পড়া যাবে কি?

১১.বইয়ের লেখক যদি ইসলাম বিদ্বেষী হয়, তাহলে তার বই কি পড়া যাবে?

১২.বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী যেমন ভবিষ্যতে যাওয়া, অতীতে যাওয়া, এলিয়েনের সাথে কথা বলা এগুলো পড়া কি জায়েজ?

জাযাকাল্লাহ খায়রান।

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


মুমিনের প্রত্যেকটি মুহূর্ত অনেক মুল্যবান।
সময় পেলেই নফল ইবাদত,নেক কাজে মশগুল থাকা দরকার।
,
সুরা মুনাফিকুন এর ১০ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 
 وَ اَنۡفِقُوۡا مِنۡ مَّا رَزَقۡنٰکُمۡ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ اَحَدَکُمُ الۡمَوۡتُ فَیَقُوۡلَ رَبِّ لَوۡ لَاۤ اَخَّرۡتَنِیۡۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ۙ فَاَصَّدَّقَ وَ اَکُنۡ مِّنَ الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۱۰﴾

আর আমি তোমাদেরকে যে রিযক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় কর, তোমাদের কারো মৃত্যু আসার পূর্বে। কেননা তখন সে বলবে, হে আমার রব, যদি আপনি আমাকে আরো কিছু কাল পর্যন্ত অবকাশ দিতেন, তাহলে আমি দান-সদাকা করতাম। আর সৎ লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«اغتنم خمسا قبل خمس: شبابك قبل هرمك، وصحتك قبل سقمك، وغناك قبل فقرك، وفراغك قبل شغلك، وحياتك قبل موتك »
“তোমরা পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিসের পূর্বে গণিমত-সুবর্ণ সুযোগ- মনে কর। তোমার যৌবনকে কাজে লাগাও বার্ধক্য আসার পূর্বে, তোমার সুস্থতাকে কাজে লাগাও তোমার অসুস্থতার পূর্বে, তোমার সচ্ছলতাকে কাজে লাগাও অসচ্ছলতার পূর্বে, তোমার অবসরতাকে কাজে লাগাও তোমার ব্যস্ততার পূর্বে, আর তোমার হায়াতকে কাজে লাগাও তোমার মৃত্যু আসার পূর্বে”।
বর্ণনায় হাকিম, হাদিস: ৭৮৪৬ তিনি হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। হাদিসটি বুখারি ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী।
,
 ★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
গল্প উপন্যাস এর বই পড়া জায়েজ। 
,
তবে শর্ত হচ্ছে দুটি। প্রথমত, অশ্লীল ও যৌন সুড়সুড়ি দেয় এমন কিছু হতে পারবে না। কারণ, এগুলো পড়লে এর মাধ্যমে আপনি নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হবেন। অনেক গল্প আছে, যেগুলোতে মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের জন্য অনৈতিক কথাবার্তা উল্লেখ করা হয়ে থাকে।

দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, ইসলামী শরিয়তে হারাম, নিষিদ্ধ, গর্হিত—এ ধরনের কোনো বিষয় যদি সেখানে এসে যায়, তাহলে সেটাও নিষিদ্ধ হবে। যেমন শিরক শিক্ষা দিচ্ছে, যৌনতার শিক্ষা দিচ্ছে, মাদকাসক্ত হওয়ার জন্য শিক্ষা দিচ্ছে, যদি এমনি কিছু সেখানে থাকে, তাহলে সেগুলো পড়বেন না।

বিস্তারিত জানুনঃ 

 ★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(০১)
না,পুরো বইটা পড়া হারাম হবেনা।

(০২)
পুরো বইটিই হারাম হবেনা।

তবে যেই যেই পৃষ্ঠায় নারীর ছবি আছে,সেগুলোর দিকে নজর দিলে গুনাহ হবে।

(০৩)
পড়া যাবে।

তবে সেটা যদি এমন বই হয় যে শিরক শিক্ষা দিচ্ছে,তাহলে এ জাতীয় স্থান পড়া যাবেনা।

(০৪)
সেইসব কাহিনী পড়া যাবে।
আকীদা বিশুদ্ধ রেখে পড়া যাবে।

(০৫)
না,পুরো বইটা ফেলে দিতে হবেনা।
সেই নির্দিষ্ট স্থান না পড়লেই হলো।

(০৬)
পুরো বই হারাম হবেনা।

(০৭)
উক্ত বই যদি শিরক শিক্ষা দেয় বা জাদু শিক্ষা দেয়,তাহলে তাহা পড়া যাবেনা।

নতুবা আকীদা বিশুদ্ধ রেখে পড়া যাবে।

(০৮)
ঐ জ্ঞান হারাম হবেনা।

(০৯)
আকীদা বিধ্বংসী হলে তাহা পড়া যাবেনা।

এতে আকীদা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকার দরুন উলামায়ে কেরামগন এসব বই পড়তে নিষেধ করেন।

(১০)
সেসব বই ক্রয় করা যাবে ও পড়া যাবে।

(১১)
তার বই পড়া যাবে।

আকীদা বিধ্বংসী হলে তাহা পড়া যাবেনা।

(১২)
আকীদা বিশুদ্ধ রেখে সেগুলো পড়া জায়েজ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...