জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহর কাছে সবচে’ ঘৃণ্য ও জঘন্যতম পাপ হল শিরক।
কুরআন মাজীদে পুত্রের প্রতি লুকমান হাকীমের ওসিয়তগুলো বিশেষ গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে তিনি নিজ পুত্রকে ওসিয়ত করে বলেন-
وَ اِذْ قَالَ لُقْمٰنُ لِابْنِهٖ وَ هُوَ یَعِظُهٗ یٰبُنَیَّ لَا تُشْرِكْ بِاللهِ اِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِیْمٌ.
স্মরণ কর, যখন লুকমান উপদেশচ্ছলে নিজ পুত্রকে বলেছিল, বৎস! তুমি আল্লাহ্র সাথে শরীক করো না। কেননা র্শিক নিশ্চয় মারাত্মক অবিচার ও পাপ। -সূরা লুকমান (৩১) : ১৩
আল্লাহ তাআলা নবীকে সতর্ক করে বলেছেন-
وَ لَقَدْ اُوْحِیَ اِلَیْكَ وَ اِلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكَ لَىِٕنْ اَشْرَكْتَ لَیَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ.
নিশ্চয় আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি এই ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, যদি আপনি শিরক করেন তাহলে অবশ্যই আপনার সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে এবং নিশ্চিত আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। -সূরা যুমার (৩৯) : ৬৫
অন্যত্র আল্লাহ আরো বলেছেন-
اِنَّهٗ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَیْهِ الْجَنَّةَ وَ مَاْوٰىهُ النَّارُ.
আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। -সূরা মায়েদা (৫) : ৭২
আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন-
اِنَّ اللهَ لَا یَغْفِرُ اَنْ یُّشْرَكَ بِهٖ وَ یَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذٰلِكَ لِمَنْ یَّشَآءُ وَ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدِ افْتَرٰۤی اِثْمًا عَظِیْمًا.
নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে এক মহাপাপ করে। -সূরা নিসা (৪) : ৪৮
একজন মানুষ যত ভালো কাজই করুক কিন্তু সে যদি র্শিক করে আল্লাহ তাআলার কাছে তার কোনো কিছুরই মূল্য নেই। এজন্য কিয়ামতের দিবসে মুশরিকরা যত ভালো কাজই নিয়ে আসুক আল্লাহ তাআলা সেগুলোকে ধুলিকণা-রূপ করে দিবেন। আল্লাহ বলেন-
وَ قَدِمْنَاۤ اِلٰی مَا عَمِلُوْا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنٰهُ هَبَآءً مَّنْثُوْرًا.
তারা (দুনিয়ায়) যা-কিছু আমল করেছে, আমি তার ফায়সালা করতে আসব এবং সেগুলোকে শূন্যে বিক্ষিপ্ত ধুলোবালি (-এর মত মূল্যহীন) করে দেব। -সূরা ফুরকান (২৫) : ২৩
যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, জীবন ধারণের সব উপকরণ দান করেছেন, আমাকে অগণিত নিআমত দান করেছেন; তাঁকে অস্বীকার করা বা তাঁর সাথে কোনো কিছুকে শরীক করা এবং অবাস্তব বিশ্বাস করা যে, তারাও তাঁর মত ক্ষমতাবান ও দাতা, এটা শুধু আল্লাহর কাছেই নয়, যে কোনো বিবেকবানের কাছেই জঘন্যতম অপরাধ।
তাই মুশরিকরা যতই ভালো কাজ করুক শিরকের কারণে আল্লাহ তাআলা তাদের কোনো ‘ভালো’ কাজই গ্রহণ করবেন না।
শরীয়তের বিধান হলো তাবীযে যদি কুফরী বা শিরকী কোনো কথা লেখা থাকে অথবা তাবীযের নামে যাদু করা হয় বা তাবীয প্রদানকারী/তাবীয গ্রহণকারীর কেউ -আল্লাহ মাফ করুন- তাবীযকেই সরাসরি সমস্যা সমাধানকারী এবং প্রয়োজন পূরণকারী মনে করে। তেমনি যদি তাবীযের সঙ্গে গাইরুল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে কৃত মান্নতকে জুড়ে দেওয়া হয় কিংবা অন্য কোনো শিরকী কাজ তাবীযের সাথে যুক্ত থাকে, তাহলে এই তাবীয কুফর ও শিরক হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
এ থেকে যদি খালেস দিলে তওবা করে সম্পূর্ণরূপে তা পরিত্যাগ না করা হয়, তাহলে ঈমান ও ইসলামের নিআমত থেকেই মানুষ মাহরূম হয়ে যাবে।
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যারা কুফরী কালাম বলে মানুষকে বশ করে,তাহলে তাদের এই কাজ কুফরী ও শিরক।
খালেছ দিলে আল্লাহর কাছে তওবা করে এ পথ থেকে ফিরে আসতে হবে।
তবে কাউকে কাফের বলা যেহেতু মারাত্মক একটি বিষয়।
আর তাদের থেকে তওবারও সম্ভাবনা রয়েছে।
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তিদেরকে কাফের বলা যাবেনা।
কাহারো উপর কাফেরের হুকুম লাগানো সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুন