জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
ব্যাংকে অনেকেই নিদির্ষ্ট সময়ের জন্য লাভের উদ্দ্যেশ্যে অপেক্ষাকৃত বড় অংকের টাকা জমা রাখে।
সর্বনিম্ন তিন মাস থেকে তিন বছর বা তারও বেশি সময়ের জন্য এফডিআরে টাকা জমা রাখার সুযোগ রয়েছে।
যাকে বলা হয় এফডিআর বা ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট। শর্ত সাপেক্ষে ৪ থেকে শুরু করে ১০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা পাওয়া যায় এফডিআরে টাকা রাখলে।
এফডিআরের আমানতের বিপরীতে ৯০ শতাংশ (কোনো সময় কম বা বেশিও হতে পারে) পর্যন্ত ঋণ সুবিধা দিয়ে থাকে ব্যাংকগুলো।
,
এতে কোনো ব্যাংক কত পার্সেন্ট সূদ দেয়, এর আগের একটি হিসাব আমরা পেয়েছিঃ
(বর্তমানে কম বা বেশিও হতে পারে)
রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক:
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, রাষ্ট্রমালিকানাধীন আট ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুদ দিচ্ছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। তিন থেকে ছয় মাসের কম সময়ের সুদ ৬ দশমিক ৫০ থেকে ৮ শতাংশ, ছয় মাস থেকে এক বছরের কম সময়ের জন্য ৮ শতাংশ এবং এক বছর থেকে তার বেশি সময়ের সুদ ৮ থেকে ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ।
এরপরের অবস্থানেই বেসিক ব্যাংক। তিন থেকে ছয় মাসের কম সময়ের জন্য এ ব্যাংকের সুদ ৬ দশমিক ৫০ থেকে ৮ শতাংশ। তবে ছয় মাস থেকে এক বছরের কম সময়ের সুদ ৮ দশমিক ৫০, এক বছর থেকে দুই বছরের কম সময়ের সুদ ৮ দশমিক ৫০ থেকে ৯ এবং দুই বছরের ওপরে গেলেই ৯ শতাংশ সুদ।
এ ছাড়া সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, জনতা, বিডিবিএল ও বিকেবির সুদ ৭ দশমিক ৫০ থেকে ৮ শতাংশ পর্যন্ত।
বেসরকারি ব্যাংক: তিন বছর থেকে তার বেশি সময়ের জন্য সবচেয়ে বেশি ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ সাউথবাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের (এসএবিসি)। এরপর পূবালী ব্যাংক ১১, ঢাকা ব্যাংক ১০ দশমিক ৪১, দি সিটি ব্যাংক ১০ দশমিক শূন্য ৩ এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ১০ শতাংশ সুদ দিচ্ছে।
তিন থেকে ছয় মাসের কম সময়ের জন্য ৯ থেকে ১০ শতাংশ সুদ দেওয়া ব্যাংকগুলোর বেশির ভাগই নতুন প্রজন্মের ব্যাংক।
এগুলো হচ্ছে এসএবিসি, ফারমারস ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। অবশ্য তার আগের প্রজন্মের ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকও ৯ শতাংশ সুদ দিচ্ছে। অন্য ব্যাংকগুলোর তিন বছর বা তার বেশি সময়ের সুদ ১০ শতাংশের কম।
বিদেশি ব্যাংক: বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে তিন বছর থেকে তার বেশি সময়ের সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ সুদ কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন এবং ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের। সবচেয়ে কম সুদ সিটি ব্যাংক এনএর। আল ফালাহ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, ওরি, এইচএসবিসি, হাবিব ব্যাংক এবং স্টেট ব্যাংক ইন্ডিয়ায় সুদের হার ১ দশমিক ২৫ থেকে ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ পর্যন্ত।
এগুলো সবই সূদ,তাই এর থেকে বেঁচে থাকা জরুরী।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)
শরীয়তের বিধান হলো কোনো সুদভিত্তিক ব্যাংকের এফডিআরে টাকা জমা করে অতিরিক্ত মুনাফা গ্রহণ সুদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় হারাম হবে। প্রয়োজনে অভিজ্ঞ মুফতিদের সমন্বয়ে গঠিত শরিয়াহ বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত সুদবিহীন ও শরিয়াহ নীতিমালায় বিনিয়োগে ওয়াদাবদ্ধ ইসলামী ব্যাংকে মুদারাবাভিত্তিক টাকা রেখে বৈধ মুনাফা গ্রহণ করতে পারেন।
(সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৭৫, আদ্দুররুল মুখতার : ৫/৬৪৫, জাদিদ ফিকহি মাকালাত : ৩/৪০, হিন্দিয়া : ৫/৩০৮, ফাতাওয়া ফকীহুল মিল্লাত : ১০/১৭৯-১৮৫)
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো ইসলামী ব্যাংকে গিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে যদি শরিয়তসম্মতভাবে চুক্তি হয় আর সেখানে যদি সুদের কোনো কথা উল্লেখ না থাকে, তাহলে এটি বৈধ। আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে শরিয়াহর কোন ভিত্তিতে আপনি টাকা রাখছেন। যদি নিশ্চিত হন যে এখানে সুদের কোনো কারবার নেই, তাহলে এটি জায়েজ।
,
অন্যান্য ব্যাংকে রাখলে সূদ থেকে বাঁচা সম্ভব নয়।
,
সতর্কতা মূলক ইসলামী ব্যাংক থেকে মুনাফা নেওয়া উচিত নয়,বরং তাহা গরিবদের মাঝে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়াই ছদকাহ করে দেওয়া উত্তম।