হাদিস শরিফে এসেছে,
আবু বুরদা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: (তাঁর পিতা) আবু মুসা আশআরী (রাঃ) যন্ত্রণায় কাতর হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। আর (ঐ সময়) তাঁর মাথা তাঁর এক স্ত্রীর কোলে রাখা ছিল এবং সে চিৎকার ক’রে কান্না করতে লাগল। তিনি (অজ্ঞান থাকার কারণে) তাকে বাধা দিতে পারলেন না। সুতরাং যখন তিনি চেতনা ফিরে পেলেন, তখন বলে উঠলেন,
أَنَا بَرِيءٌ مِمَّنْ بَرِىءَ مِنْهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم بَرِيءٌ مِنَ الصَّالِقَةِ وَالحَالِقَةِ وَالشَّاقَّةِ
“আমি সেই মহিলা থেকে সম্পর্ক মুক্ত, যে মহিলা থেকে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্পর্কমুক্ত হয়েছেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেই মহিলা থেকে সম্পর্কমুক্ত হয়েছেন, যে মৃত্যুশোকে উচ্চ স্বরে মাতম করে, মাথা মুণ্ডন করে এবং কাপড় ছিঁড়ে ফেলে।” (বুখারী ১২৯৬, মুসলিম ২৯৮)
শায়েখ আব্দুল্লাহ বিন বায রাহ. বলেন,
“নারীর মাথা মুণ্ডন করা জায়েজ নয় বরং তার মাথায় চুল অবশিষ্ট রাখা অপরিহার্য। কেননা চুল নারীর সৌন্দর্য এবং অলঙ্করণ। এটি নারী এবং পুরুষদের মধ্যে অন্যতম পার্থক্য। তাই হজের সময়ও তার মাথার চুল মুণ্ডন করার সুযোগ নেই। বরং হজ ও ওমরাতে চুল ছোট করবে। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছেন, মহিলাদের জন্য মুণ্ডন নেই। তারা চুল ছোট করবে।
মাথার চুল তাদের সৌন্দর্য। সুতরাং তা মুণ্ডন করা যাবে না। তবে যদি মাথায় কোনও রোগ-ব্যাধি থাকে যার কারণে ডাক্তার মাথার চুল মুণ্ডন করার অভিমত দেয় তাহলে ভিন্ন কথা। রোগের বিষয়টি ভিন্ন। কিন্তু অবহেলা বশত: বা কাফের বা অন্যদের অন্ধ অনুকরণ হলে এমনটি করা যাবে না। বরং তার জন্য আবশ্যক হল, চুলের পরিচর্যা করা ও যত্ন নেয়া। কারণ এতে সৌন্দর্য রয়েছে। তবে যদি চুল খুব ঘন বা লম্বা হয় তাহলে ছোট করতে অসুবিধা নেই।”
আরো জানুনঃ-
★কোন মহিলা যদি হাসব্যান্ড এর অনুমতি নিয়ে রোগব্যাধির কারনে বিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মতে মাথা ন্যাড়া করে ফেলে, সেটা জায়েয হবে।
(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,
أنه لعن الْوَاصِلَةِ وَالْمُسْتَوْصِلَةِ وَالْوَاشِمَةِ وَالْمُسْتَوْشِمَةِ
‘‘যে ব্যক্তি নিজে পরচুলা লাগায় এবং যে অন্যের কাছে লাগিয়ে নেয় এবং যে নিজে উল্কি আঁকে এবং উল্কি লাগিয়ে নেয় আল্লাহ তাদেরকে অভিসম্পাত করেন।’’ (সহিহুল বুখারী, পোশাক অধ্যায়, হাদিস নং ৫৪৭৭)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পরচুলা পড়া জায়েজ নেই।
তবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মানুষের চুল ব্যাতিত কোনো অন্য জীবের পরচুলা পড়ার অনুমতি কিছু ইসলামী স্কলারগন দিয়েছেন।
و في الفتاوى الهندية- ووصل الشعر بشعر الآدمي حرام سواء كان شعرها أو شعر غيرها كذا في الاختيار شرح المختار ولا بأس للمرأة أن تجعل في قرونها وذوائبها شيئا من الوبر كذا في فتاوى قاضي خان في جواز صلاة المرأة مع شعر غيرها الموصول اختلاف بينهم والمختار أنه يجوز كذا في الغياثية (الفتاوى الهندية-1/358
মাথার চুলের সাথে মানুষের চুল মিলানো হারাম। চাই নিজের চুল হোক বা অন্যের চুল হোক। তবে অন্য কোনো জীবের চুল লাগানোতে সমস্যা নেই।