আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
168 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (91 points)
edited by

অতিরিক্ত প্রশ্নের জন্য ক্ষমা করে দিবেন অগ্রীম ক্ষমা চাইছি। আল্লাহ আপনার ভালো করবেন ইনশাআল্লাহ। 

১. স্বামী স্ত্রী বিয়ের পর বছর খানেক বা কিছু সময় নিজেরা কাটানোর জন্য, বাচ্চা দেরীতে নিলে তা কি জায়েজ হবে?

২. দুইটি বাচ্চা নেওয়ার পর কোনো কারণে আর বাচ্চা না নিলে তা কি জায়েজ হবে? এর পর আর না নিলে তা কি হারাম হবে না মাকরুহ?

৩. দুই নং ক্ষেত্রে কতোটি বাচ্চা নেওয়ার পর আর বাচ্চা না নিলে গুনাহ হবে না, এমনিতে নিতে চাইলে অসংখ্য নেওয়া যাবে, এমন নির্দিষ্ট সংখ্যা আছে কি?

৪. কেও যদি দারিদ্র্যের ভয়ে কম বাচ্চা নেয়,  সে কি কাফের হয়ে যাবে? বুঝতেছে যে রিজিক আল্লাহ দিবেন, তাও ভয়ে যদি না নেয়।

৫. ইউরোপ আমেরিকায় বা এইরকম দেশে কেও যদি ভয় পায় যে তার অধিক সন্তান নিলে কেও কেও ইমান হারা হয়ে যেতে পারে না সবাইকে ইমানের উপর রাখার জন্য কাজ করতে পারবে না, তাই যদি বাচ্চা কম নেয় এতে কি গুনাহ হবে?বা এটা কি জায়েজ?

৬. আমার বউ আজকে বলতেছে," আমরা একটা বা দুইটা বাচ্চা নিবো" কেনো বলার পর বললো, " তার ঘরের অবস্থা দেইক্কা তার কম বাচ্চা নেওয়া ভালা মনে ওইতাছে, আর বললো যে বেশি বাচ্চা পালা যন্ত্রণা " ুএতে কি তার কুফর হবে?

৭. কেও যদি ইসলামের ওজর ছাড়া বাচ্চা নেওয়ার বিধান শুনে মনে মনে নারাজ হয়, এবং মনে মনে সেই নারাজি থাকা অবস্থায়, আসলে নারাজ  না কি রাগ এটা বুঝতে ও সঠিক ভাবে মনে হচ্ছে না।এই অবস্থায় মনে নারাজি/রাগ নিয়ে এই বিষয়ে কোনো লিখিত প্রশ্ন করে, "যে ইসলামে কতো টি বাচ্চা নেওয়া বাধ্যতামূলক,  বা অন্য কিছু" সে কি কাফের হবে? কিন্তু সে এই বিধান মানছে, বিশ্বাস করছে। আবার মনে মনে নারাজি খেয়াল আসার পর তা দূর করার ও চেষ্টা করছে।

৮. কেও যদি বলে যে তোমার মুখে ফুল চন্দন পরুক এতে কি সে কাফের হবে?

৯. মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা হারাম বলে জানতাম। কিছুদিন পূর্বে দেখতে পাই যে মসজিদে যাওয়ার পর দরকারে কিছু কথা বলা জায়েজ। কিন্তু ওই দিন এইটা দেখার পর কি ভেবেছিলাম মনে নাই, আজকে আবার একই প্রশ্নের জবাব পড়তে গিয়ে ভুল বুঝে ভেবেছিলাম দুনিয়াবী কথা বলা হারাম। পরে ওই জবাব ভালো করে পড়ে ও দেখলাম সেইম কথাই বলছে যে,প্রয়োজনে বলা যায়।  এখন তওবা করেছি আমার কি ইমানে সমস্যা হবে?

১০. হোস্টেলে থাকাকালীন ফোর্থ ইয়ার হলের ডায়নিং পরিচালনা করে,তখন আমরা যখন দায়িত্ব নেই,তখন একটা আইন করি যে,  সিচুয়েশন অনুযায়ী,  ফোর্থ ইয়ার যেকোনো আইন সংযোজন, সংশোধন, রদ, শিথিল করতে পারবে। তাছাড়া বিভিন্ন অসংগতির বিচার এমনকি ডায়নিং এর টাকা মেরে দেওয়া প্রমানিত হলেও শাস্তি ছিলো জরিমানা,যার পরিমান ফোর্থ ইয়ার নির্ধারন করতো। এভাবে  হল পরিচালায় ইরম আইন করা ও জরিমানা দিয়ে বিচার করায় কি ইমানে সমস্যা হবে? 

এইগুলো হলের প্রচলিত হিসাবে চলে আসছে, আমরা শুধু  বোল্ট করা আইন টি করেছি,এবং বাকি আইনে হল চালিয়েছি

1 Answer

0 votes
by (559,290 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
 https://ifatwa.info/9675/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,
ইসলাম মানুষকে অধিক সন্তানলাভের প্রতি উৎসাহ দিয়েছে এবং যে সব নারীরা অধিক সন্তানের প্রসবনী হয়ে থাকে, তাদের বিবাহ করতে নির্দেশ দিয়েছে।

 রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
تزوجوا الودود الولود ، فإني مكاثر بكم الأمم يوم القيامة

“তোমরা অধিক সন্তানের প্রসবনী ও স্বামীদের অধিক ভালোবাসে এ ধরনের মেয়েদের বিবাহ কর, কারণ, কিয়ামতের দিন আমি আমার উম্মত বেশি হওয়ার কারণে আল্লাহর দরবারে গর্ব করব।”(আবু দাউদ, নাসায়ী। হায়াতুল মুসলিমিন, পৃষ্ঠা-১৮৯)

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে  সাধারণত জন্ম নিয়ন্ত্রণ  করা হয়।
,
এক.স্থায়ী পদ্ধতি–যার দ্বারা নারী বা পুরুষ প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
এই পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ অবৈধ। 

আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী (র.) বুখারী শরীফের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন: و هو محرم بالاتفاق অথাৎ স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন সর্বসম্মতক্রমে হারাম।(উমদাতুল ক্বারীঃ ১৪/১৪ পৃঃ)

দুই.অস্থায়ী পদ্ধতি– যার ফলে স্বামী-স্ত্রীর কেউ প্রজনন ক্ষমতাহীন হয়ে যায় না। যেমন : আযল করা (সহবাসের চরম পুলকের মুহুর্তে স্ত্রীর যোনীর বাহিরে বীর্যপাত ঘটানো), Condom Jelly, Cream, Foam, Douche ইত্যাদি ব্যবহার করা, পিল (Pill) খাওয়া,জরায়ুর মুখ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া, ইঞ্জেকশন নেয়া ইত্যাদি।

দ্বিতীয় প্রকার শরীয়ত সম্মত প্রয়োজন ব্যতীত মাকরুহে তানযিহি।তবে শরীয়ত সম্মত নিম্নোক্ত প্রয়োজনে বৈধ রয়েছে।
(ক)মহিলা এত দুর্বল যে, গর্ভধারণের বর্তমানে যোগ্যতা নেই।
(খ)মহিলা নিজ বাসস্থান থেকে এত দূর সফরে যেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের আপতত কোনো মনোবাসনা নেই।আবার নিজ বাসস্থানে আসতেও কয়েক মাস লেগে যাবে বা কয়েক মাসের প্রয়োজন।
(গ)স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক সম্পর্ক চূড়ান্ত নিম্ন পর্যায়ের,এমনকি উভয়ের অন্তরে বিচ্ছেদের চিন্তাভাবনা চলছে।
(ঘ)পূর্বের বাচ্চার সু-সাস্থ্যর ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে।
(ঙ)স্থান-কালের ফাসাদ অর্থাৎ দ্বীনী পরিবেশের চূড়ান্ত পর্যায়ের অবনতির ধরুন বাচ্চা বদ-আখলাক বা অসচ্চরিত্র এবং মাতাপিতার বে-ইজ্জতির কারণ হবে বলে আশঙ্কা করলে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

عن جابر قال كنا نعزل على عهد النبي صلى الله عليه و سلم ـ صحيح البخاري – (2 / 784)، باب العزل

হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আযল(যা জন্ম নিয়ন্ত্রণের একটা পুরনো ও অস্থায়ী পদ্ধতি) করতাম। (বুখারী ২/৭৮৪)

★বিঃদ্রঃ
সম্পদ কমে যাবে বা মেয়ে সন্তান জন্ম নিলে সমাজে লজ্জিত হতে হবে মনেকরে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ কখনো বৈধ হবে না।

আল্লাহ বলেছেন, 

ولا تقتلوا أولادكم خشية إملاق، نحن نرزقهم وإيّاكم إنّ قتلهم كان خطأ كبيراً. 

‘’দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি।নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…’’(সূরা ইসরা, আয়াত-৩১)

অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা বলেন, 
الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ . 
“শয়তান তোমাদের অভাবের ওয়াদা দেয়।” (সূরা আল-বাক্বারা)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আকীদা ঠিক রেখে শরীয়ত সম্মত প্রয়োজনে বাচ্চা দেড়িতে নেয়া বৈধ রয়েছে।

শরীয়ত সম্মত প্রয়োজন ব্যতীত আকীদা বিশুদ্ধ রেখে অস্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করা মাকরুহে তানযিহি তথা অনুত্তম বলে বিবেচিত হবে।

(০২)
রিযিকের টেনশনে বাচ্চা না নিলে হারাম হবে।
আর উপরে উল্লেখিত কারনে না নিয়ে অস্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করলে জায়েজ হবে।

আর শরীয়ত সম্মত প্রয়োজন ব্যতীত আকীদা বিশুদ্ধ রেখে অস্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করে এক্ষেত্রে বাচ্চা না নিলে মাকরুহে তানযিহি তথা অনুত্তম বলে বিবেচিত হবে।

(০৩)
এমন নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই।

(০৪)
এতে সে কাফের হয়ে যাবেনা।
তবে এমন নিয়তে বাচ্চা না নেয়া তার জন্য হারাম হবে।

(০৫)
এটা জায়েজ হবে।
তবে এক্ষেত্রে জন্ম নিয়ন্ত্রণ এর স্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করা যাবেনা।
অস্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করা যাবে।

(০৬)
এতে কুফর হবেনা।

(০৭)
এতে সে কাফের হয়ে যাবেনা।

(০৮)
না,এতে সে কাফের হয়ে যাবেনা।

(০৯)
আপনার ঈমানের কোনো সমস্যা হবেনা। 

(১০)
এতে ঈমানী সমস্যা নেই।
তবে এভাবে আর্থিক জরিমানা নেওয়া নাজায়েজ হয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...