আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
146 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (48 points)
আমার এক বন্ধু ধরনের ভাই। তার সাথে মূলত আমার দ্বীনি সম্পর্ক ( প্রশ্ন / মাসয়ালা ব্যাপারে )। এথেকে তার সাথে আমার একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আমি স্বভাবিক ভাবে তার সাথে বেশ ভালো ব্যবহার করি কিন্তু তার থেকে পাই না। শুধু তার দরকারেই আমার সাথে তার কথা হয়। আমার দরকারের সময় তার থেকে ভালো ব্যবহার পাওয়া যায় না। এখানে আমি তার থেকে বেশি আশা করে ফেলছি, নাকি তার বিনয়ের অভাব আছে বকে ধরব? এতে আমার অথবা তার শুধরানোর কি কি দিক থাকতে পারে জানালে উপকৃত হতাম।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

একে অন্যকে এই যে সহযোগিতা,কাউকে উপকার করা- এটা হতে হবে কেবলই আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্যে। 

এ সহযোগিতা হতে পারে কোনো বিপদ ও সংকটের মুহূর্তে, হতে পারে স্বাভাবিক কোনো অবস্থায়, এমনকি আনন্দঘন কোনো পরিবেশকে আরও আনন্দময় করে তোলার মধ্য দিয়েও হতে পারে। যে অবস্থাতেই হোক, যে পদ্ধতিতেই হোক, মুমিনের সবকাজের উদ্দেশ্যই তো এই একটাই- আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন।

হযরত আবু যার রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
تَبَسّمُكَ فِي وَجْهِ أَخِيكَ لَكَ صَدَقَةٌ، وَأَمْرُكَ بِالمَعْرُوفِ وَنَهْيُكَ عَنِ الْمُنْكَرِ صَدَقَةٌ ، وَإِرْشَادُكَ الرَّجُلَ فِي أَرْضِ الضّلاَلِ لَكَ صَدَقَةٌ ، وَبَصَرُكَ لِلرّجُلِ الرّدِيءِ البَصَرِ لَكَ صَدَقَةٌ ، وَإِمَاطَتُكَ الحَجَرَ وَالشّوْكَةَ وَالعَظْمَ عَنِ الطّرِيقِ لَكَ صَدَقَةٌ ، وَإِفْرَاغُكَ مِنْ دَلْوِكَ فِي دَلْوِ أَخِيكَ لَكَ صَدَقَةٌ.
তোমার ভাইয়ের চেহারায় তাকিয়ে মুচকি হাসাও তোমার জন্যে একটি সদকা। সৎকাজের প্রতি আদেশ এবং অসৎকাজ থেকে বাধাপ্রদানও সদকা। পথ হারানো কাউকে সঠিক পথ দেখিয়ে দেয়াটাও তোমার জন্যে সদকা। দৃষ্টিশক্তি দুর্বল- এমন কাউকে সহযোগিতা করাও তোমার জন্যে সদকা। রাস্তা থেকে পাথর, কাটা আর হাড্ডি সরিয়ে দেওয়াও তোমার জন্যে সদকা। ভাইয়ের বালতিতে তোমার বালতি থেকে একটু পানি ঢেলে দেওয়াও তোমার জন্যে সদকা। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৫৬

সহযোগিতা যেমনই হোক, আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত- অন্যের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া। বিশেষত যদি কখনো নিজের প্রতি দয়াকারী ব্যক্তিটির পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ হয়, তার কোনো উপকার করার সুযোগ পাওয়া যায়, তাহলে তো অবশ্যই তা কাজে লাগানো উচিত। উপকারী ব্যক্তির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এটা এক মোক্ষম সুযোগ। এ কৃতজ্ঞতা যদি কেউ প্রকাশ না করে, তাহলে সে সমাজের চোখে তো নিন্দিত হয়ই, সে নিন্দিত হয় মহান রাব্বুল আলামীনের কাছেও। 

প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আরেকটি হাদীস-
مَنْ لاَ يَشْكُرُ النّاسَ لاَ يَشْكُرُ اللهَ.
যে মানুষের কৃতজ্ঞতা আদায় করে না, সে আল্লাহর প্রতিও কৃতজ্ঞ হয় না। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৫৪

প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ أُعْطِيَ عَطَاءً فَوَجَدَ فَلْيَجْزِ بِهِ، وَمَنْ لَمْ يَجِدْ فَلْيُثْنِ، فَإِنّ مَنْ أَثْنَى فَقَدْ شَكَرَ، وَمَنْ كَتَمَ فَقَدْ كَفَرَ.
কাউকে যখন উপহারস্বরূপ কিছু দেয়া হয়, তখন সে যদি এর পরিবর্তে দেয়ার মতো কিছু পায় তাহলে যেন তা দিয়ে দেয়। আর যে এমন কিছু না পাবে সে যেন তার প্রশংসা করে। কেননা যে প্রশংসা করল সেও কৃতজ্ঞতা আদায় করল। আর যে লুকিয়ে রাখল সে অস্বীকার করল। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২০৩৪

অর্থাৎ কেউ যখন কোনো উপহার দেয়, সম্ভব হলে তাকেও অন্য কোনো উপহার দেয়া উচিত। আর যদি এটা সম্ভব না হয়, তাহলে তার প্রশংসা করো। এতেও তার হক কিছুটা আদায় হবে। আরেক হাদীসে বলা হয়েছে-
مَنْ صُنِعَ إِلَيْهِ مَعْرُوفٌ فَقَالَ لِفَاعِلِهِ : جَزَاكَ اللهُ خَيْرًا فَقَدْ أَبْلَغَ فِي الثّنَاءِ.
কারও সঙ্গে যখন কোনো ভালো আচরণ করা হয় এরপর সে যদি ভালো আচরণকারীকে বলে- জাযাকাল্লাহু খায়রান অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন, তাহলে সে যথোপযুক্ত প্রশংসা করল। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২০৩৫

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ أَتَى إِلَيْكُمْ مَعْرُوفًا فَكَافِئُوهُ، فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا فَادْعُوا لَهُ، حَتَّى يَعْلَمَ أَنْ قَدْ كَافَأْتُمُوهُ.
তোমাদের প্রতি যে ব্যক্তি কোনো ভালো আচরণ করে তোমরা তার প্রতিদান দাও। যদি দেয়ার মতো কিছু না পাও তাহলে তার জন্যে দুআ করো, যাতে সে বুঝতে পরে- তোমরা তার প্রতিদান দিয়েছ। -আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীস ২১৬
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত ব্যাক্তির জন্যেও উচিত আপনাত সাথে ভালো ব্যবহার করা।    
,
উপরে উল্লেখিত হাদীস সমুহ দ্বারা তাকে বুঝাইলেই আশা করি তিনি বুঝবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...