সাহু সিজদাহ, দখলদার জমিতে নামায, ফরয নামায নফল নামায এ পরিনত হওয়া প্রসঙ্গে

Question

1)আল ফিকহুল মুয়াসসার বইয়ে সাহু সিজদাহ রহিত হয়ে যাওয়ার পয়েন্ট এ একটা ছিল এমনঃ
সাহু সিজদাহ দিতে ভুলে গিয়ে নামায শেষ করে নামায পরিপন্থী কোন কাজ (যেমনঃ কথা বলা) করলে সাহু সিজদাহ রহিত হয়ে যায়।
এবং এক্ষেত্রে আর তার নামায আদায় করা ওয়াজিব নয়

কিন্তু আমি জানতাম মনে পড়লে আবার আদায় করা ওয়াজিব
নিচের লিংকে ও সেটা বলেছেন
https://ifatwa.info/5613?show=5616#a5616

তাহলে কি ফিকহুল মুয়াসসারে ভুল আছে?  

২) ক)তাকবিরে তাহরিমার পরে সানা বা খ) সুরা ফাতিহার *আগে বা গ) *পরে আত্তাহিয়াতু ভুলে পড়ে ফেললে কি সাহু সিজদাহ আসবে?
ঘ)দুই সিজদাহ্ এর মাঝে আত্তাহিয়াতু পড়ে ফেললে কি সাহু সিজদাহ আসবে?

৩) দখলদার জমিতে প্লট বানিয়ে তাতে মসজিদ বানালে তাতে নামায পড়া মাকরুহ।
কিন্তু এতে তো মসজিদ আবাদ করা বা নামায পড়া হলো না। মসজিদ টা তো ভাংগাও যাবে না। তবে কি ফাঁকা পড়ে থাকবে?

উস্তাদ বলেছিলেন যে মসজিদ ভাংগা যাবে না। এইটা কি তাহলে সরকারি জায়গায় মসজিদে বানালে ভাংগা যাবে না কিন্তু ব্যাক্তিগত জমিতে বানালে ভাংগা যাবে এইরকম কিছু? 

৪)4রাকাত ফরয নামাযে শেষ রাকাতে তাশাহহুদ না পড়ে পঞ্চম রাকাত এর সিজদাহ্ দিয়ে দিলে আরেক রাকাত মিলিয়ে নফল বানাই আমরা।
(নফল নামাযে তো দুই দুই রাকাত পর পর তাশাহহুদ পড়া ফরয.. কিন্তু 4রাকাত ফরযে মাঝের বৈঠক  ওয়াজিব) এইখানে তো আমরা 4নম্বর রাকাতের তাশাহহুদ পড়িনাই।  তাহলে তো তিন ও চার নম্বর রাকাত এর নামায আদায় হলো না নফল হিসেবে।
আমি চার নম্বর রাকাতে তাশাহহুদ পরিমাণ না বসলেও কি সওয়াব 6রাকাতেরই পাবো? নাকি প্রথম দুই ও শেষ দুই রাকাতের সওয়াব পাবো আর মাঝের দুই রাকাতের সোয়াব পাবো না? নফল নামাযে তো দুই দুই রাকাত করে হিসেব হয়। একটু যদি বুঝিয়ে বলতেন। 
https://ifatwa.info/5613?show=5616#a5616
এইখানে বলেছিলেন কিন্তু পরিষ্কার হয়নি ব্যাপারটা

Answer 1

জবাব

بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)

এই মাসয়ালাটির ক্ষেত্রে উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ রয়েছে।   

আল ফিকহুল মুয়াসসার কিতাবে যেটা উল্লেখ আছে,সেটাও ছহীহ।

সেটাও ইমামদের মতামত। 

তবে  প্রাধান্য পাওয়া মত উল্লেখিত লিংকের ফতোয়ায় উল্লেখিত রয়েছে।

,

(০২)

সকল ছুরতেই সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।   

(০৩)

শরীয়তের বিধান হলো  সরকারী যায়গায় মসজিদ বানানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুমতি লাগবে। সরকারী অনুমতি ছাড়া সেই স্থান মসজিদ বলে সাব্যস্ত হবেনা, যদিও উক্ত মসজিদে নামাজ পড়লে  নামায সহীহ হয়ে যাবে। কিন্তু তা শরয়ী মসজিদ বলে ততক্ষণ সাব্যস্ত হবেনা,যতক্ষণ না সরকারী এতদ সংক্রান্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিধিবদ্ধ আইন অনুযায়ী মৌখিক বা লিখিত অনুমোদন না নিবে। ওয়াক্ফ হবার জন্য লিখিত অনুমোদন জরুরী নয়। তবে লিখিত অনুমোদন নিয়ে নেয়াই উচিত। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মূল মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন না নিয়ে কেবল সাধারণ কর্মচারী বা অফিসারের মৌখিক অনুমোদন গ্রহণযোগ্য নয়। ঠিক একই বিধান সরকারী সকল স্থানের ক্ষেত্রে।

,

★★সরকারের পক্ষ থেকে যদি অনুমতি না মিলে,কোনো ব্যাক্তির জায়গা দখল করে মসজিদ বানানো হলে সেই ব্যাক্তি যদি অনুমতি না দেয়,বা কোনোভাবেই সেটা ক্রয় ইত্যাদির মাধ্যমে আয়ত্তে নিয়ে ঐ ব্যাক্তির মালিকানা থেকে বের না করে দেওয়া যায়,তাহলে উক্ত মসজিদ ভেঙ্গে ফেলতে হবে।   

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়। (বায়হাক্বী- শু‘আবুল ঈমান, আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২।)

,

فى الدر المختار- لا يجوز التصرف فى مال غيره بلا اذنه ولا ولايته ( الدر المختار مع الشامى -9/291

কোনো ব্যাক্তির জন্য অন্যের সম্পদ ব্যবহার অনুমতি ছাড়া জায়েজ নেই।

,

(০৪)

যেহেতু উক্ত নামাজ পুরাটাই নফল হচ্ছে,সুতরাং  এক্ষেত্রে ৪র্থ রাকাতের বৈঠক ফরজ নয়,ওয়াজিব। 

,

সুতরাং শেষে যখন সেজদায়ে সাহু আদায় করলো,তখন সেই নামাজের আর কোনো সমস্যা থাকলোনা।

,

তবে এক্ষেত্রে পুরাটাই নফল হবে।      

বিস্তারিত জানুনঃ  

https://ifatwa.info/5613?show=5616#a5616

Comments

(০২)

অধিকাংশ উলামায়ে কেরামদের মত হলোঃ    

১ম রাকাতে সুরা ফাতেহার আগে তাশাহুদ পড়লে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।

সুরা ফাতেহার পর তাশাহুদ পড়লে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। 

,

 এবং ২য় ও অন্যান্য রাকাতে সুরা ফাতেহার আগে তাশাহুদ পড়লে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হওয়া নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।

ছহীহ কথা হলো সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।

,   

সুরা ফাতেহার পর তাশাহুদ পড়লে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। 

---

https://www.banuri.edu.pk/readquestion/%D9%81%D8%B1%D8%B6-%D8%B3%D9%86%D9%86-%D8%A7%D9%88%D8%B1-%D9%86%D9%88%D8%A7%D9%81%D9%84-%D9%85%DB%8C%DA%BA-%D8%B3%D9%88%D8%B1%DB%82-%D9%81%D8%A7%D8%AA%D8%AD%DB%81-%D8%B3%DB%92-%D9%BE%DB%81%D9%84%DB%92-%D8%AA%D8%B4%DB%81%D8%AF-%D9%BE%DA%91%DA%BE-%D9%84%DB%8C%D9%86%DB%92-%DA%A9%DB%8C-%D8%B5%D9%88%D8%B1%D8%AA-%D9%85%DB%8C%DA%BA-%D8%B3%D8%AC%D8%AF%DB%81-%D8%B3%DB%81%D9%88-%DA%A9%DB%8C-%D8%AA%D9%81%D8%B5%DB%8C%D9%84/08-08-2018

---

তবে কিছু উলামায়ে কেরামদের মতে সব ছুরতেই সেজদায়ে    সাহু দিতে হবে।

 يستحب له أن يسجد للسهو ؛ لأنه جاء بذكر مشروع في غير موضعه ، فالتشهد مشروع في الصلاة ، لكن ليس موضعه القيام ، فيستحب السجود للسهو لأجل ذلك ، ولعموم قوله عليه الصلاة والسلام : ( لِكُلِّ سَهْوٍ سَجْدَتَانِ ) رواه أبو داود (1038) ، وحسنه الشيخ الألباني رحمه الله في " صحيح سنن أبو داود " .