আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
101 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (30 points)
edited by

আসসালামু'আলাইকুম শায়েখ, 

(১) বাসাবাড়িতে যে টিকটিকি থাকে, যেটা "টিক টিক" আওয়াজ করে, হাদিসে কি সেটা মারার কথা বলেছে?

এই ভিডিওতে উনি বলেছেন যে এটা বাসাবাড়ির টিকটিকি না।

তাহলে, কোনটা সঠিক? আমি আগেও অনেক টিকটিকি মেরেছি, পরে, ভিডিও টা দেখে সন্দেহে পড়ে গেছি।

(২) ইচ্ছাকৃত ভাবে/অথবা বাধ্য হয়ে গায়রে মাহরাম এর দিকে তাকালে কি চোখের যিনা হয়?

(৩) জামাতে নামাজ শেষে মাসনূন দু'য়া পড়তে পড়তে ইমাম সাহেব মোনাজাত শুরু করে দেন, এক্ষেত্রে কি মাসনূন দু'য়া বন্ধ করে মোনাজাত করা উচিত হবে? কোনটা চালিয়ে যাওয়া উচিত হবে?

(৪) "রাতে আয়না দেখা ভালো না" এই কথাটি কি সঠিক?

1 Answer

+1 vote
by (712,600 points)


ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
,টিকটিকি,কাঁকলাস, গিরগিটি ইত্যাদি মেরে ফেলা মুস্তাহাব।

ফাকিহা ইবনুল মুহীরার মুক্তদাসী সাইবা থেকে বর্ণিত
عَنْ سَائِبَةَ مَوْلَاةِ الْفَاكِهِ بْنِ الْمُغِيرَةِ، أَنَّهَا دَخَلَتْ عَلَى عَائِشَةَ فَرَأَتْ فِي بَيْتِهَا رُمْحًا مَوْضُوعًا، فَقَالَتْ: يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ مَا تَصْنَعِينَ بِهَذَا؟ قَالَتْ: نَقْتُلُ بِهِ هَذِهِ الْأَوْزَاغَ، فَإِنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخْبَرَنَا: «أَنَّ إِبْرَاهِيمَ لَمَّا أُلْقِيَ فِي النَّارِ، لَمْ تَكُنْ فِي الْأَرْضِ دَابَّةٌ، إِلَّا أَطْفَأَتِ النَّارَ، غَيْرَ الْوَزَغِ، فَإِنَّهَا كَانَتْ تَنْفُخُ عَلَيْهِ، فَأَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَتْلِهِ»
তিনি আয়েশা (রাঃ)-র নিকট প্রবেশ করে তার ঘরে একটি বর্শা রক্ষিত দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করেন, হে উম্মুল মুমিনীন! আপনারা এটা দিয়ে কী করেন? তিনি বলেন, আমরা এই বর্শা দিয়ে এসব গিরগিটি হত্যা করি। কারণ আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের অবহিত করেছেন যে, ইবরাহীম (আ)-কে যখন অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হলো তখন পৃথিবীর বুকে এমন কোন প্রাণী ছিলো না, যা আগুন নিভাতে চেষ্টা করেনি, গিরগিটি ব্যতীত। সে বরং আগুনে ফুঁ দিয়েছিল। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটিকে হত্যা করার নির্দেশ দেন। [সুনানু ইবনি মাজাহ,-৩২৩১,মুসনাদে আহমাদ-২৪৫৩৪]

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ قَتَلَ وَزَغَةً فِي أَوَّلِ ضَرْبَةٍ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً، وَمَنْ قَتَلَهَا فِي الضَّرْبَةِ الثَّانِيَةِ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً، لِدُونِ الْأُولَى، وَإِنْ قَتَلَهَا فِي الضَّرْبَةِ الثَّالِثَةِ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً، لِدُونِ الثَّانِيَةِ»
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রথম আঘাতে যে ব্যক্তি কাকলাস [টিকটিকি] মেরে ফেলবে, তার জন্য রয়েছে এত এত পরিমাণ সাওয়াব। আর যে ব্যক্তি দুই আঘাতে তাকে মেরে ফেলবে, তার জন্য এত এত পরিমান সাওয়াব, প্রথমবারের চাইতে কম। আর যদি তৃতীয় আঘাতে মেরে ফেলে, তা হলে তার জন্য এত এত পরিমাণ সাওয়াব তবে দ্বিতীয়বারের চাইতে কম। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ইফাবা-৫৬৫১,সহীস মুসলিম-৬৫৫১]

টিকটিকি বা টিকটিকি জাতীয় প্রাণী মানুষের জন্য ক্ষতিকর, এই জন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম' হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন।

وإنما السبب فى الأمر بقتله هو كونه مؤذيا، وإلا فالظاهر أن ما فعلته وزغاة عهد إبراهيم عليه السلام لا يعاقب به وزغات هذا الزمان، فالسبب الأصلى فى الأمر بقتله هو إيذائه واعتدائه (تكملة فتح الملهم، باب استحباب قتل الوزع-4/350)

ইবনুল মালিক বলেন,
قَالَ ابْنُ الْمَلَكِ: وَمِنْ شَغَفِهَا إِفْسَادُ الطَّعَامِ خُصُوصًا الْمِلْحَ، فَإِنَّهَا إِذَا لَمْ تَجِدْ طَرِيقًا إِلَى إِفْسَادِهِ ارْتَقَتِ السَّقْفَ وَأَلْقَتْ خَرَأَهَا فِي مَوْضِعٍ يُحَاذِيهِ. وَفِي الْحَدِيثِ بَيَانُ أَنَّ جِبِلَّتَهَا عَلَى الْإِسَاءَةِ.” انتهى من “مرقاة المفاتيح” (7/2671)
এর নেশা হল, খাবার নষ্ট করা। বিশেষ করে লবণ। যদি সে পর্যন্ত পৌঁছার রাস্তা না পায় তাহলে ঘরের কোঠায় উঠে যায় এবং তার ঠিক নিচ বরাবর বিষ্ঠা নিক্ষেপ করে। হাদিসের বিবরণ থেকে বুঝা যায়, এটি সৃষ্টিগতভাবে ক্ষতিকারক। (মিরকাতুল মাফাতিহ ৭/২৬৭১)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বাসাবাড়ি হোক বা পাহাড়ি হোক, সকল প্রকার টিকটিকিকে হত্যা করাই মুস্তাহাব। এছাড়াও আরো পাঁচটি প্রাণীকে হত্যা করা মুস্তাহাব।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/376

(২)
ইচ্ছাকৃত ভাবে গায়রে মাহরাম এর দিকে তাকালে  চোখের যিনা হবে। তবে অনিচ্ছায় তাকালে চোখের যিনা হবে না।

(৩)
এক্ষেত্রে মাসনুন দু'আ পড়াই উত্তম। যেসব নামাযের পর সুন্নত রয়েছে, সেই সব নামাযের পর দু'আ কে লম্বা করা যাবে না।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/2293

(৪)
আয়না রাত্রে না দেখাই উত্তম,যদিও এ বিষয়ে হাদীসে কোনো বিধি-নিষেধ নেই তথাপি চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ বলেনঃ রাত্রে আয়না দেখলে বিভিন্ন রোগ জন্ম নেওয়ার আশংকা থাকে। এজন্য রাত্রে আয়না দেখতে তারা  নিষেধ করে থাকেন।
ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﻘﻴﻢ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺑﻪ ﺍﻟﻘﻴﻢ ﺯﺍﺩ ﺍﻟﻤﻌﺎﺩ ﻓﻲ ﺑﺎﺏ ﺍﻟﻄﺐ : ﻭﺭﺃﻳﺖ ﻻﺑﻦ ﻣﺎﺳﻮﻳﻪ ﻓﺼﻼ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻤﺤﺎﺫﻳﺮ ﻧﻘﻠﺘﻪ ﺑﻠﻔﻈﻪ ﻗﺎﻝ :
ﻭَﻣَﻦْ ﻧَﻈَﺮَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤِﺮْﺁﺓِ ﻟَﻴْﻠًﺎ ﻓَﺄَﺻَﺎﺑَﻪُ ﻟَﻘْﻮَﺓٌ ﺃَﻭْ ﺃَﺻَﺎﺑَﻪُ ﺩَﺍﺀٌ ﻓَﻠَﺎ ﻳَﻠُﻮﻣَﻦّ ﺇﻟّﺎ ﻧَﻔْﺴَﻪ
ইমাম ইবনে ক্বাইয়ুম রাহ, উনার তাত্ত্বিক গবেষণালব্ধ কিতাব "যাদু মা'আদ ফি হাদয়ে খাইরিল ইবাদ"নামক কিতাবে উল্লেখ করেন,
আমি চিকিৎসক ইবনে মাসুওয়াইর "সতর্কবাণী ও সাবধানতাসম্ভলিত  অধ্যায়ে "
রাত্রে আয়নায় নিজেকে দেখা সম্পর্কে যা দেখেছি এখন আমি তা হুবহু আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি.....
ইবনে মাসুওয়াই বলেনঃ-
যে ব্যক্তি রাত্রে আয়না দেখল অতঃপর তার লাক্বওয়াহ রোগ হয়ে গেল,অথবা অন্য কোনো রোগ হয়ে গেলো, তখন সে যেন তার নিজ সত্বাকে ব্যতীত অন্য কাউকে না দোষে।
লাক্বওয়াহ কি রোগ? তা সম্পর্কে অভিধানে বক্তব্য হল,
ﺩَﺍﺀٌ ﻳُﺼِﻴﺐُ ﺍﻟْﻮَﺟْﻪَ ﻓَﻴَﻌْﻮَﺝُّ ﻣِﻨْﻪُ ﺍﻟﺸِّﺪْﻕُ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﺣَﺪِ ﺟَﺎﻧِﺒَﻲِ ﺍﻟْﻌُﻨُﻖ
এমন রোগ যা মুখে হয় এবং চোয়ালকে গর্দনার কোন একদিকে বাকা করে দেয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...