আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
119 views
in সালাত(Prayer) by (45 points)
আস সালামু আলাইকুম শায়েখ।  আমার দাদির বয়স ১০০ কাছাকাছি বা তার বেশি হবে। বছর ধরবে ধরবে তিনি আর দাড়াতে বা বসতে পারেনা।  তো হামাগুড়ি দিয়ে বাথরুমের কাছে যায় তারপর আমার আম্মা ধরে বসিয়ে দেয়।  যেহেতু মহিলা বলতে আমার আম্মা একা সুতরাং তার এতো শক্তিও নেই যে তিনি নিয়ে যাবে তাই দাদি বাথরুম পর্যন্ত একা একা হামা দিয়ে যায়।
যেহেতু আমি বাইরে থাকি তো বাসায় এসে আমার দাদিকে বললাম যে নামায পড়েন কিনা তিনি হয়তো কথা বুঝতে পারেনি কি বলেছে আমিও বুঝিনি । আগে আমার দাদি নিয়মিত নামায পড়তো আমাকে ঢেকে দিত আমি যখন বাসায় যেতাম।
প্রশ্ন1: যেহেতু পানি দিয়ে ওযু করা তো তার জন্য মনে হয় কষ্ট সাধ্য এখন তিনি তায়াম্মুম করে কি সালাত আদায় করতে পারবে কিনা।

প্রশ্ন ২: তিনি তো সোজা হতে পারেনা হাত পা এক জায়গায় হয়ে শুয়ে থাকে । এপিঠ ওপিঠ হতে পারেনা । বসতে পারেনা । এখন কিবলা মুখি হয়ে সালাত কি বাধ্যতামূলক নাকি ইশারায় যেকোনো দিকে তিনি সালাত আদায় করতে পারবেন।
প্রশ্ন 3: তিনি কি তায়াম্মুম করে শুয়ে ইশারায় যেদিকে আছে সেদিকে সালাত আদায় করবে নাকি কিবলামুখো হতে হবে।

প্রশ্ন ৪: যদি কিবলামুখি হতে হয় তাহলে আমরা কি তার বিছানা কিবলামুখি করে দিবো।
প্রশ্ন 5: বিছানা কিবলামুখি করে দিলে তার পা তো কিবলামুখি থাকবে তখন কি কিবলাকে অসম্মান করা হয়ে যাবে।

প্রশ্ন ৬: যেহেতু তার জামা কাপড় কিছু পরতে পারেনা আম্মা পরায় দেয় এখন বাথরুমে যাবার ফলে নাপাকি লাগছে কিনা কিভাবে বুঝবো । দৃশ্যমান হলে আম্মা তো পরিষ্কার করে দেয় অদৃশ্যমান হলে এই অবস্থায় তিনি যদি সালাত আদায় করে।  বয়স্ক বলে কি তার জন্য কোনো ছাড় আছে কিনা।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
পানি থাকা ও পানি ব্যবহারের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তায়াম্মুম করা জায়েয নয়। কিন্তু, রোগী যদি নিজে পানি ব্যবহার করতে না পারেন কিংবা পানি ব্যবহার করলে ক্ষতির আশংকা করেন কিংবা পানি ব্যবহার করতে গিয়ে তার তীব্র কষ্ট হয়; সেক্ষেত্রে তার জন্য তায়াম্মুম করা জায়েয হবে।
আল্লাহ্ তাআলা বলেন:

وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مَّرۡضٰۤی اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ اَوۡ جَآءَ اَحَدٌ مِّنۡکُمۡ مِّنَ الۡغَآئِطِ اَوۡ لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُوۡا مَآءً فَتَیَمَّمُوۡا صَعِیۡدًا طَیِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡہِکُمۡ وَ اَیۡدِیۡکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَفُوًّا غَفُوۡرًا ﴿۴۳﴾ 
 "আর যদি তোমরা অসুস্থ হও কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে (মলমুত্র ত্যাগ করে) আসে কিংবা তোমরা নারী-সম্ভোগ কর এবং (গোসল করার জন্য) পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করবে এবং (যথারীতি) মুখমণ্ডল ও হাত মুছে নেবে। আল্লাহ্ তো মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল।"[সূরা নিসা, আয়াত: ৪৩]


ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: "আমি বিছানায় শয্যাশায়ী। নড়াচড়া করার মত শক্তি রাখি না। এমতাবস্থায় আমি নামাযের জন্য কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করতে পারি ও নামায পড়তে পারি? জবাবে তাঁরা বলেন: এক: মুসলিমের উপর পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা ওয়াজিব। যদি কোন রোগের কারণে কিংবা অন্য কোন কারণে পানি ব্যবহার করতে অক্ষম হয় তাহলে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে। যদি তায়াম্মুমও করতে না পারে তাহালে তার উপর থেকে পবিত্রতার বিধান মওকুফ হয়ে যাবে এবং সে যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় নামায পড়বে। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: "তোমরা সাধ্যমত আল্লাহ্কে ভয় কর"। আল্লাহ্ তাআলা আরও বলেন: "তবে দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোন কষ্ট চাপিয়ে দেননি।"[সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত: ৭৮] পক্ষান্তরে, পেশাব ও পায়খানার যা কিছু বের হয় সেটা পাথর দিয়ে কিংবা পবিত্র টিস্যুপেপার দিয়ে পরিষ্কার করাই যথেষ্ট। এগুলো দিয়ে ময়লা বের হওয়ার স্থানটি তিন বা ততোধিকবার পরিষ্কার করবে; যাতে করে স্থানটি নির্মল হয়ে যায়।"[ফাতাওয়াল লাজনাদ্ দায়িমা (৫/৩৪৬)]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার দাদি তায়াম্মুম করে  সালাত আদায় করতে পারবেন।

(০২)
অসুস্থতার কারণে বসে নামাজ পড়তে অপারগ হলে, শুয়ে ইশারার মাধ্যমে নামাজ পড়বেন। তখন অসুস্থ ব্যক্তির পা কিবলার দিকে করে শোয়াতে হবে। তবে মাথাকে সামান্য ওপরে তুলে শোয়র ব্যবস্থা করতে হবে, যেন চেহারা কিবলার দিকে হয়। এরপর ইশারা করে রুকু-সিজদা করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২৭৩)

শুধুমাত্র মাথা দিয়ে ইশারা করলেও তা রুকু-সিজদার স্থলাভিষিক্ত বলে বিবেচিত হবে। ইশারা কেবল চোখ বা অন্তরে করলে নামাজ শুদ্ধ হবে না। (সুনানে কুবরা, হাদিস নং: ৩৭১৯)

আরো জানুনঃ- 

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কিবলা মুখি হয়ে সালাত বাধ্যতামূলক। 
কিবলার দিকে পা বাড়িয়ে দিয়ে শুয়ে মাথা দিয়ে ইশারা করে নামাজ আদায় করবে।

(০৩)
কিবলামুখি হতে হবে।

(০৪)
হ্যাঁ বিছানা কিবলা মুখি করে দিন।
যাতে নামাজের সময় পা,চেহারা,পুরো শরীর কিবলার দিকে থাকে।

(০৫)
শুধু নামাজের সময়ের জন্য এটি করবেন।

(০৬)
অদৃশ্যমান হলে আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন।
তার জন্য ছাড় রয়েছে।

আল্লাহ্ তাআলা বলেন: " দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোনো কিছু সাধ্যাতীত চাপিয়ে দেননি।"[সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত: ৭৮] 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 127 views
0 votes
1 answer 152 views
0 votes
1 answer 629 views
0 votes
1 answer 171 views
...