বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করলাম, আর তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।”
[সূরা মায়েদা, আয়াত: ৩]
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عَبْدِ اللهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ:: ” الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, ব্যক্তি [কিয়ামতের দিন] তার সাতে থাকবে যাকে সে মোহাব্বত করে। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৭১৮, বুখারী, হাদীস নং-৬১৬৮, ৫৮১৬}
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১}
5143 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
বিজাতীয় ধর্মীয় উৎসবে তাদের পক্ষ্য থেকে পাঠানো হাদীয়া কবুল করা যায়।তবে তাদের ধর্মীয় উৎসবে শরীক হওয়া যায় না।কেননা তাতে অনেক শরীয়ত বিরোধী কর্মকান্ড থাকে।ঠিকতেমনি তাদের ব্যক্তিগত কোনো অনুষ্টান যেমন বিয়েশাদী ইত্যাদিতে তাদের পক্ষ্য থেকে পাঠানো বৈধ হাদিয়া কবুল করা যাবে। কিন্তু তাদের অনুষ্টানো যোগদান করা যাবে না।
কেননা তাতে শরীয়ত বিরোধী অনেক কর্মকান্ড থাকবে।
সুতরাং কোনো হিন্দু বন্ধু যদি তাদের বিয়েতে দাওয়াত দেয়,তাহলে উক্ত দাওয়াত কবুল করা যাবে না।যেহেতু তাদের উক্ত অনুষ্টানে শরীয়ত বিরোধী অনেক কর্মকান্ড থাকবে।
বিজাতীয় উৎসবে তাদের কারো কাছ থেকে মুসলমানদের জন্য হাদিয়া গ্রহণ সম্পর্কে ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ বলেন,
ﻭﺃﻣﺎ ﻗﺒﻮﻟﻪ ﺍﻟﻬﺪﻳﺔ ﻣﻨﻬﻢ ﻳﻮﻡ ﻋﻴﺪﻫﻢ، ﻓﻘﺪ ﻗﺪﻣﻨﺎ ﻋﻦ ﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻃﺎﻟﺐ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ﺃﻧﻪ ﺃﺗﻲ ﺑﻬﺪﻳﺔ " ﻳﻮﻡ ﻧﻴﺮﻭﺯ " ﻓﻘﺒﻠﻬﺎ .ﻭﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ - ﺃﻧﻬﺎ ﻗﺎﻟﺖ : " ﺃﻣﺎ ﻣﺎ ﺫﺑﺢ ﻟﺬﻟﻚ ﺍﻟﻴﻮﻡ، ﻓﻼ ﺗﺄﻛﻠﻮﺍ، ﻭﻟﻜﻦ ﻛﻠﻮﺍ ﻣﻦ ﺃﺷﺠﺎﺭﻫﻢ ."ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺑﺮﺯﺓ ﺃﻧﻪ ﻛﺎﻥ ﻳﻬﺪﻱ ﺇﻟﻴﻪ ﻣﺠﻮﺱ ﻓﻲ " ﻧﻴﺮﻭﺯﻫﻢ " ﻓﻴﻘﻮﻝ ﻷﻫﻠﻪ : ﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﻣﻦ ﻓﺎﻛﻬﺔ ﻓﻜﻠﻮﻩ، ﻭﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺫﻟﻚ ﻓﺮﺩﻭﻩ "ﻓﻬﺬﺍ ﻛﻠﻪ ﻳﺪﻝ ﻋﻠﻰ ﺃﻧﻪ ﻻ ﺗﺄﺛﻴﺮ ﻟﻠﻌﻴﺪ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻨﻊ ﻣﻦ ﻗﺒﻮﻝ ﻫﺪﻳﺘﻬﻢ، ﺑﻞ ﺣﻜﻤﻬﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻌﻴﺪ ﻭﻏﻴﺮﻩ ﺳﻮﺍﺀ؛ ﻷﻧﻪ ﻟﻴﺲ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺇﻋﺎﻧﺔ ﻋﻠﻰ ﺷﻌﺎﺋﺮ ﻛﻔﺮﻫﻢ،
[ﺍﻟﻤﻨﻬﺞ ﺍﻟﻘﻮﻳﻢ ﻓﻲ ﺍﺧﺘﺼﺎﺭ ﺍﻗﺘﻀﺎﺀ ﺍﻟﺼﺮﺍﻁﺍﻟﻤﺴﺘﻘﻴﻢ-١/١٢٨
ﻓﺼﻞ: ﺣﻜﻢ ﻗﺒﻮﻝ ﺍﻟﻤﺴﻠﻢ ﺍﻟﻬﺪﻳﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻜﻔﺎﺭ ﻳﻮﻡ ﻋﻴﺪﻫﻢ ﻭﺇﻳﺮﺍﺩ ﺍﻟﻨﺼﻮﺹ ﻋﻠﻰ ﺟﻮﺍﺯﻩ]
কাফিরদের কাছ থেকে তাদের উৎসব উপলক্ষ্যে হাদিয়া গ্রহণ সম্পর্কে আমরা ইতিপূর্বে হযরত আলি রাযি.এর হাদিস বর্ণনা করেছি যে, উনার কাছে নাইরুয দিনে হাদিয়া আসলে তিনি তা কবুল করে নেন।এবং হযরত আয়েশা রাযি থেকেও বর্ণিত রয়েছে,তিনি বলেনঃযে জন্তু সেই উৎসবের নামে যবেহ করা হয়েছে তা তোমরা খেয়ো না।তবে তাদের ফলমূলাদি খেতে পারো।হযরত আবু বারযাহ রাযি. থেকে বর্ণিত রয়েছে যে,নাইরুয দিনে কোনো এক অগ্নিপূজক তাকে কিছু হাদিয়া দিয়েছিলো, তখন তিনি তার পরিবারবর্গকে বলেছিলেন,হাদিয়া যদি ফলমূলাদি থেকে হয় তাহলে তোমরা খেতে পারো।আর যদি তা অন্যকিছু হয় তাহলে তা তোমরা ফিরিয়ে দাও।এ সমস্ত রেওয়াত প্রমাণ করে যে,কাফিরদের কাছ থেকে হাদিয়া গ্রহণ তাদের উৎসব সমূহ বাধা প্রদাণ করবে না।বরং যেকোনো সময় তাদের কাছ থেকে হাদিয়া গ্রহণ করা যাবে।কেননা তখন তা কাফিরদের ধর্মীয় কোনো বিষয়ে সাহায্য করা হচ্ছে না।(আল-মানহাজুল কাওয়ীম ফি ইখতেছারে ইক্বতেযায়িস সিরাতিল মুস্তাক্বিম-১/১২৮)বিস্তারিত জানুন-
1382
তবে যদি তারা বিয়েতে হালাল খাবারের আয়োজন করে থাকে, আর কোনো মুসলমান খাবার খেয়ে নেয়,তাহলে গোনাহ হবে না। যদিও কাজটি অনুত্তম হবে।
قُل لَّا أَجِدُ فِي مَا أُوحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّمًا عَلَىٰ طَاعِمٍ يَطْعَمُهُ إِلَّا أَن يَكُونَ مَيْتَةً أَوْ دَمًا مَّسْفُوحًا أَوْ لَحْمَ خِنزِيرٍ فَإِنَّهُ رِجْسٌ أَوْ فِسْقًا أُهِلَّ لِغَيْرِ اللَّهِ بِهِ ۚ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلَا عَادٍ فَإِنَّ رَبَّكَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
আপনি বলে দিনঃ যা কিছু বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে, তন্মধ্যে আমি কোন হারাম খাদ্য পাই না কোন ভক্ষণকারীর জন্যে, যা সে ভক্ষণ করে; কিন্তু মৃত অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের মাংস এটা অপবিত্র অথবা অবৈধ; যবেহ করা জন্তু যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়। অতপর যে ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে এমতাবস্থায় যে অবাধ্যতা করে না এবং সীমালঙ্গন করে না, নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা ক্ষমাশীল দয়ালু।(সূরা আন'আম-১৪৫)
আরো জানুনঃ-
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ঐ দাওয়াত যে জাতীয় দাওয়াতের সঙ্গে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি জড়িত থাকে, যেহেতু এ জাতীয় দাওয়াতে অংশগ্রহণ করলে নিজের ঈমান-আমলের ক্ষতি হবার আশঙ্কাই প্রবল থাকে সেহেতু এজাতীয় দাওয়াতে অংশগ্রহণ করা সর্বাবস্থায় হারাম।
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে হিন্দুদের বিয়েতে এটেন্ড করা, দাওয়াত খাওয়া কোনোটাই জায়েজ হবেনা।
উক্ত অনুষ্ঠানে শরীক হওয়া ও খাওয়া একজন মুসলমান হিসেবে আপনার জন্য কখনো উচিৎ হবে না।