بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
জবাব, https://ifatwa.info/10443/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোনো সন্দেহ নাই ওয়াদাকে পুর্ণ
করা এবং সে অনুযায়ী কর্মসম্পাদন করা প্রত্যেক মু'মিনের বৈশিষ্ট্য।আর ওয়াদাকে ভঙ্গ করা মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য।হাদীস শরীফে মুনাফিকের সুস্পষ্ট পরিচয়
এভাবে দেয়া হয়েছে।
যেমনঃ হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাঃ থেকে বর্ণিত,নবীজী সাঃ বলেনঃ-
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ
ﻋﻤﺮﻭ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : " ﺃﺭﺑﻊ ﻣَﻦ ﻛﻦَّ ﻓﻴﻪ ﻛﺎﻥ
ﻣﻨﺎﻓﻘﺎً ، ﻭﻣﻦ ﻛﺎﻧﺖ ﻓﻴﻪ ﺧﺼﻠﺔ ﻣﻦ ﺃﺭﺑﻌﺔ : ﻛﺎﻧﺖ ﻓﻴﻪ ﺧﺼﻠﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﻔﺎﻕ ﺣﺘﻰ ﻳﺪﻋﻬﺎ : ﺇﺫﺍ ﺣﺪَّﺙ
ﻛﺬﺏ ، ﻭﺇﺫﺍ ﻭﻋﺪ ﺃﺧﻠﻒَ ، ﻭﺇﺫﺍ ﻋﺎﻫﺪ ﻏﺪﺭ ، ﻭﺇﺫﺍ ﺧﺎﺻﻢ ﻓﺠﺮ –
চারটি চারিত্রিক
বৈশিষ্ট্য, যে ব্যক্তি উক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ থেকে
কোনো একটি দ্বারা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হবে,সে ব্যক্তি মুনাফেক হিসেবে গণ্য হবে।
এবং যার কাছে
উক্ত কোন খাচলত বা বৈশিষ্ট্য পাওয়া যাবে সে মুনাফিক হিসেবে গণ্য হবে,যতক্ষণ না সে তা পরিত্যাগ করবে।
বৈশিষ্ট্য চারটি
হলঃ (১)যখন কথা বলবে তখন সে প্রায়ই মিথ্যা
বলবে।
(২)যখন ওয়াদা করবে,তখন সে ওয়াদাকে ভঙ্গ
করবে।
(৩)যখন চুক্তি করবে,তখন চুক্তিকে ভঙ্গ
করবে।
(৪)যখন ঝগড়া করবে, তখন সে গালাগালী করবে।
(সহীহ বুখারী-২৩২৭,সহীহ মুসলিম-৫৮)
নেফাক্ব-نفاق দু-প্রকার।
যথাঃ-(ক) নেফাক্ব ফিল এ'তেক্বাদ-نفاق في
الاعتقاد অর্থ্যাৎ যার অন্তরে ইসলামও মুসলমানদের প্রতি অবিশ্বাস সহ মুসলমানদের ক্ষতিসাধনের
ইচ্ছা রয়েছে। সে এ'তেক্বাদী মুনাফিক, তার শেষ আশ্রয়স্থল হবে চিরস্থায়ী জাহান্নাম।
(খ) নেফাক্ব ফিল আমল,نفاق في
العمل. অর্থ্যাৎ যার অন্তর ঠিকই ইসলাম এবং মুসলমানদের
প্রতি আশ্বস্ত রয়েছে।তবে তার কর্মের মধ্যে ত্রুটি রয়েছে। তার আ'মলে কমতির ধরুণ সে
শাস্তি উপভোগ করবে। কিন্তু সে মু'মিনদের কাতারেই গণ্য হবে।
বিস্তারিত বলতে গেলে বলা
যায় যে, মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য ১৫ টিঃ
১. মুনাফিকদের
অন্তর রুগ্ন এবং ব্যধিগ্রস্থ (সূরা বাকারা: ১০),
২. মুনাফিকরা
দাম্ভিক হয়, অহংকারী হয়, রুক্ষস্বভাবের হয়, পাপ করলে পাপকে স্বীকার করতে চায় না, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় না,
এবং তওবা করতে অনীহা প্রকাশ করে,
৩. তারা আল্লাহ,
রাসূল (সাঃ),
এবং কুরআন নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে,
(তওবা: ৬৩)
৪. যারা মুমিন,
বিশ্বাসী,
উত্তম চরিত্রের অধিকারী,
ভালো কাজ করে তাদের সাথে তারা উপহাস
করে, ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে (সূরা বাকারা: ১৪-১৫),
৫. মুনাফিকরা
আল্লাহর রাস্তায় খরচ করতে চায় না, খরচ করা থেকে বিরত থাকে, এবং কৃপণতা করে (সূরা মুনাফিকুন: ০৫),
৬. তারা মুমিনদের
বাদ দিয়ে ইহুদী, খ্রিস্টান, মুশরিক এবং কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করে,
৭. তারা মিথ্যা
বলে, মিথ্যা শপথ করে, কাপুরুষতা করে, এবং ধীরতা দেখায় অর্থাৎ ভীতু প্রকৃতির হয়। তারা প্রত্যক্ষ সংগ্রামের পরিবর্তে শান্তিচুক্তি
করার চেষ্টা করে এবং শপথ ভঙ্গ করে। কেউ যদি আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) কে বিশ্বাস করে এবং
এ ধরনের কাজ করে তবে সে পুরোপুরি মুনাফিক হবে না, বরং তার মধ্যে নেফাকি চরিত্র আছে বলে বিবেচিত হবে,
৮. শক্তিমত্তার
বিচারে পক্ষ পরিবর্তন করে, যখন যারা ক্ষমতায় তখন তাদের দলে ভীর জমায়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় না (সূরা হাশর: ১১-১২),
৯. তারা দ্বী-মুখী
নীতি অবলম্বন করে এবং সীদ্ধান্তহীনতায় ভুগে (সূরা নিসা: ১৪৩)। দোদুল্যমান অবস্থায় থাকে,
মুমিনদের সাথে থাকবে নাকি কাফিরদের
সাথে থাকবে ঠিক করতে পারে না,
১০. তারা মুমিনদের
মাঝে ফাসাদ সৃষ্টি করে, মুমিনদেরকে বিভিন্ন দলে-উপদলে বিভক্ত করার চেষ্টা করে,
১১. তারা যা
করেনা তার প্রশংসা শুনতে পছন্দ করে, যে কাজটা করেনি সেটাতেও তার অবদান আছে বলে মনে করে,
১২. তারা খারাপ
কাজের আদেশ দেয় এবং ভালো কাজ থেকে নিষেধ করে (সূরা তওবা: ৬৭),
১৩. তারা আমানতের
খিয়ানত করে,
১৪. তারা সময়মত
সালাত আদায় করে না। তারা জামায়াতে ঠিক সময় আসে না, শেষের দিকে আসে এবং তাড়াতাড়ি চলে যায়,
১৫. ফজর ও
এশার নামাযে তারা অবহেলা করে, জামায়াতে এসে পড়তে চায় না।
মুনাফিকদের
আরও কিছু বৈশিষ্ট্যঃ
তাদের অন্তরে
অধিক লোভ লালসা থাকে, মুমিনদের খারাপ পরিণতি দেখতে চায়, মুমিনদেরকে ধোকা দেয়,
কাফিরদের নিকট বিচার-ফয়সালা নিয়ে যায়,
তাদেরকে মান্য করে,
তাদের গোলামী করে,
তারা নেক আমল সমূহের দুর্নাম করে,
ভালো কাজের প্রশংসা করে না।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
২. জুমার
পূর্বে চার রাকাআত নামাজ সুন্নাত। আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://www.ifatwa.info/4666