আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
106 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আস সালামু আলাইকুম
আমি এবং আমার স্ত্রী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, এক বছর হলো আমরা চিটাগং থেকে হোম অফিস করচ্ছি। চিটাগং এ আমি আমার মা এর সাথে থাকি সাথে আমারা। আমার বাবা নেই গত বছর ইন্তেকাল করেছেন।
সম্প্রতি আমার স্ত্রীকে ঢাকায় গিয়ে অফিস করার নির্দেশ এসেছে। পাশাপাশি আমিও যদি আমার অফিসে যাই বেশ কয়েক সুবিধা পাবো।
এই অবস্থা আমাকে চিটাগং থেকে ঢাকায় শিফ্ট হতে হবে। কিন্তু আমার মা কোন মতেই ঢাকায় যেতে রাজি নন। তিনি আমাকে বলেছে আমি যেন স্ত্রী নিয়ে ঢাকায় শিফ্ট হয়ে যাই সে এখানে একাই থাকবে, পারলে ওনার সাথে থাকার জন্য ওনার কাজ কর্ম করার জন্য একজন সহযোগী মেয়ে রাখবেন!

আমি আসলে বুঝতে পারচ্ছি না, এই অবস্থায় আমার মাকে একা রেখে ঢাকায় শিফ্ট হওয়াটা কি ঠিক হবে!
আল্লাহ আমাকে সঠিক পথ দেখিয়ে দিক। আমার জন্য দোয়া করবেন।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ইসলাম মাকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে। তার মর্যাদাকে মহিমান্বিত করেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْنًا عَلَىٰ وَهْنٍ وَفِصَالُهُ فِي عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيرُ

 ‘আমি মানুষকে তার মা-বাবার সঙ্গে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভধারণ করে। তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে। সুতরাং আমার শোকরিয়া ও তোমার মা-বাবার শোকরিয়া আদায় করো।’ (সুরা লোকমান, আয়াত : ১৪)

মায়ের প্রতি অনুগ্রহের দৃষ্টিতে তাকালে কবুল হজের সওয়াব: আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘মা-বাবাই হলো তোমার জান্নাত এবং জাহান্নাম।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২১)

তাই অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যখন কোনো অনুগত সন্তান নিজের মা-বাবার দিকে অনুগ্রহের নজরে দেখে, আল্লাহতায়ালা তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে একটি করে কবুল হজের সওয়াব দান করেন।’ (সুনানে বায়হাকি, হাদিস : ৪২১)

মা বৃদ্ধা হয়ে গেলে সাধারণত সন্তানের সেবার ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এ সময় মায়ের সুবিধা-অসুবিধা ও প্রয়োজনের প্রতি খুব যত্নশীল ও দায়িত্বশীল হওয়া কর্তব্য। একবার রাসুল (সা.) বললেন, ‘সে দুর্ভাগা! সে দুর্ভাগা! সে দুর্ভাগা!’ উপস্থিত সাহাবায়ে কিরাম (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘সে কে?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘যে ব্যক্তি মাতাপিতা উভয়কে অথবা যেকোনো একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেয়েও (তাদের সেবা করে) জান্নাতে প্রবেশ করতে পারলো না।’ (মুসলিম : ৬২৭৯)

মায়ের সেবা করা, মায়ের যত্ন নেওয়া এবং মাকে খুশি করার গুরুত্ব বোঝাতে রাসুল (সা.) আরেক হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘জান্নাত মায়ের পদতলে।’ (কানজুল উম্মাল, হাদিস : ৪৫৪৩৯)

উয়াইস আল কারনি ইয়েমেনের অধিবাসী একজন বড় মাপের তাবেঈ ও বুজুর্গ ছিলেন। তিনি ৩৭ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন। রাসুল (সা.)-এর যুগ হওয়াসত্ত্বেও তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হয়নি তার। কিন্তু রাসুল (সা.)-এর প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা ছিলো। তার বৃদ্ধা মা ছিলেন। মায়ের সঙ্গে তিনি সদাচরণ করতেন। মায়ের সেবাযত্ন করতেন। রাসুল (সা.) তাকে চিনতেন।

হাদিসে উমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ইয়েমেন থেকে উয়াইস নামে এক ব্যক্তি তোমাদের কাছে আসবে। ইয়ামেনে মা ছাড়া তার আর কেউ নেই। তার শ্বেত রোগ ছিলো। সে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে আল্লাহ তার রোগ ভালো করে দেন। কিন্তু তার শরীরের একটি স্থানে এক দিনার অথবা এক দিরহাম পরিমাণ স্থান সাদাই থেকে যায়। তোমাদের কেউ যদি তার সাক্ষাত পায়, সে যেনো তাকে নিজের জন্য ইস্তেগফার করতে বলে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৪২)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আপনার মায়ের জন্য উচিত একাকী গ্রামে না থেকে আপনাদের সাথে বসবাস করা। কারণ, একজন মানুষের নিরাপত্তা, অসুস্থতা , সুবিধা অসুবিধা অনেক রকম বিষয় তার জীবনের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। সব মিলিয়ে একাকী না থাকায় শ্রেয়। তবে যেহেতু তিনি নিজ আবাসন ত্যাগ করতে অনিচ্ছুক। বিধায় আপনার জন্য তাকে একাই গ্রামে রাখা বৈধ হবে। তবে শর্ত হলো, সেখানে যেন তার পরিপূর্ণ নিরাপত্তা থাকে ও কোন প্রকার ঝুকি বা ফেতনার আশঙ্কা না থাকে সে ব্যাপারে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। সাথে সাথে মায়ের খেদমতের প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...