ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/7915/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
গ্রহনযোগ্য তথ্য অনুযায়ী
আমরা জানতে পেরেছি যে বিটকয়েন এক ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি। ক্রিপ্টো মানে
গোপন, আর কারেন্সি মানে মুদ্রা। সহজে বলতে গেলে গোপন মুদ্রা, যা ধরা যায়
না, ছোঁয়াও যায় না। নেই কোনো নিজস্ব মূল্যমান। একে ডিজিটাল
মুদ্রা, ভার্চুয়াল মুদ্রা বা অনলাইন কারেন্সিও বলা হয়। এর লেনদেনের
জন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনও হয় না।
পাওয়া তথ্য মতে এখানে অনেক সমস্যা রয়েছেঃ
বিটকয়েন প্রকাশকের অজ্ঞতা, এর ভবিষ্যৎ বিষয়ে
অজ্ঞতা, এর প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রকাশক না থাকা, কোনো
নির্দিষ্ট দায়িত্বশীল না থাকা,
রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণ না থাকা, ব্যাপকভাবে
স্প্যাকুলেশন হওয়ায় এর মূল্য স্থির না থাকা এবং আইনবহির্ভূত কাজে অধিক ব্যবহৃত
হওয়ায় এটি ইসলামের দৃষ্টিতে মূল্যমানবিশিষ্ট (মালে মুতাকাওয়্যিম) হয় না; সঙ্গে জুয়া
তো আছেই।
বিশ্বের কোনো দেশেই সরকারিভাবে স্বীকৃতি পায়নি বিটকয়েন।
,
বরন্য শিক্ষাবিদ বি এম মইনুল হোসেন বলেন, বিটকয়েন
মাইনিং বলা হয়,
মাইনিং হচ্ছে মূলত কিছু গাণিতিক জটিলতা সমাধান করার নাম।
সবাই একসঙ্গে ওই গাণিতিক জটিলতা সমাধান করতে চায়। ধরুন, এক হাজার জন
একসঙ্গে সমাধানের চেষ্টা করে একজনই সেখান থেকে বিজয়ী হবে, যে সবার আগে
সমাধান করতে সক্ষম হয়েছে। এখানে সবার লোকসান হবে। শুধু বিজয়ী ব্যক্তিই কয়েন পেয়ে
যাবে। এভাবে মাইনিং করে বিটকয়েন তৈরি হয়।
,
শরীয়তের বিধান হলো
বিটকয়েন মাইনিং করে আয়কৃত টাকা হারাম।
অন্যতম কারন হলো এখানে জুয়া আছে, এতে সরকারী
অনুমোদন নেই।
,
আল্লাহ বলেন,
يَا
أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنْصَابُ وَالْأَزْلَامُ
رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ.
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ
وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ
وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنْتُمْ مُنْتَهُونَ
“হে মুমিনগণ, এই যে মদ,
জুয়া,
প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ -এসব শয়তানের অপবিত্র
কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক -যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।
শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও
বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে।
অতএব, এখনও কি তোমরা নিবৃত্ত হবে?”
(সূরা মায়েদা ৯০-৯১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
وقال
رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم: إن اللہ حرم علی أمتي الخمر والمیسر (المسند للإمام
أحمد، ۲: ۳۵۱، رقم الحدیث: ۶۵۱۱)
রাসুলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেছেন যে নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা
আমার উম্মতের উপর মদ এবং জুয়া হারাম করেছেন।
،
﴿وَلَا تَأْکُلُوْا أَمْوَالَکُمْ بَیْنَکُمْ بِالْبَاطِلِ﴾ أي بالحرام، یعني
بالربا، والقمار، والغصب والسرقة (معالم التنزیل ۲:
۵۰)
সারমর্মঃ হারাম পন্থায় তোমরা সম্পদ খেওনা।
،
لأن القمار من القمر الذي یزداد تارةً وینقص أخریٰ۔ وسمی القمار قمارًا؛ لأن کل
واحد من المقامرین ممن یجوز أن یذہب مالہ إلی صاحبہ، ویجوز أن یستفید مال صاحبہ،
وہو حرام بالنص (رد المحتار، کتاب الحظر والإباحة، باب الاستبراء، فصل في البیع، ۹:
۵۷۷،
ط: مکتبة زکریا دیوبند) ۔
জুয়ার ক্ষেত্রে কিছু ক্ষেত্রে লাভ হয়, কিছু সময়
ক্ষতি হয়। তুরস্কের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, মিসরের কেন্দ্রীয় ফতোয়া বিভাগ, ফিলিস্তিনের
কেন্দ্রীয় ফতোয়া বিভাগ, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া
বিভাগ ও ইসলামিক ইকোনমিক ফোরাম নামক ইসলামিক স্কলারদের একটি অনলাইন গ্রুপ
বিটকয়েনকে নাজায়েজ ফতোয়া দিয়েছে।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
না, বিটকয়েন ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েজ নয়। সুতরাং
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বিটকয়েন ক্রয়-বিক্রয় করে লভ্যাংশ অর্থ আপনাদের জন্য হালাল নয়।
বরং এগুলো গরীবদের মাঝে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকা করে দিতে হবে। আর আল্লাহ তায়ালার
কাছে তাওবা ইস্তিগফার করতে হবে এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে মাফ চাইতে হবে।