আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
171 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (2 points)
জরায়ু অপারেশন করে বাচ্চা নেয়া কি ইসলামে উচিত?
আমার বোনের বিয়ের প্রায় ১৪ বছর চলছে। জরায়ু তে সমস্যা থাকায় বাচ্চা বার বার নষ্ট হয়ে যায়। এভাবে ১৪ বছর বিবাহিত জীবনে ৯/১০ টা বাচ্চা নষ্ট হয়েছে, তাই ডক্টর জরায়ুতে অপারেশন ( laparoscopy / Hysteroscopy) করে তারপর বাচ্চা নিতে বলেন। কিন্তু অপারেশন টা জরায়ু তে হওয়ায় আর অপারেশন এর মাধ্যমে বাচ্চা নিতে হবে তাই আমার বোন খুব দ্বিধায় আছে যে এটা ইসলাম পরিপন্থী কিনা। প্লিজ বিষয় টি বিস্তারিত জানাবেন।

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

সন্তান বা মায়ের প্রাণনাশের আশংকা থাকলে যদি কোন বিজ্ঞ ডাক্তার অপারেশন ছাড়া আর কোন গত্যান্তর নেই বলে, তাহলেই কেবল জরায়ু অপারেশন করা জায়েজ আছে। প্রসবকালীন স্বাভাবিক যে কষ্ট হয়, শুধু সেটাকে রোখার জন্য, বা বাচ্চা ও মায়ের কোন সমস্যা না থাকার পরও অহেতুক সিজার করা জায়েজ নেই।

মুমিনের প্রতিটি কষ্টের বিনিময় রব্বে কারীম দান করে থাকেন। ঐ ব্যক্তির গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। সেই হিসেবে যেহেতু গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন সময়ে মায়েদের সীমাহীন কষ্ট হয়ে থাকে। তাই উত্তমরূপে ধৈর্যধারণ করতে পারলে ও আল্লাহর উপর ভরসা থাকলে অবশ্যই উক্ত কষ্টের জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে উত্তম বিনিময় পাওয়া যাবে। গোনাহসমূহ ক্ষমা করা হবে।

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ، وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا يُصِيبُ المُسْلِمَ، مِنْ نَصَبٍ وَلاَ وَصَبٍ، وَلاَ هَمٍّ وَلاَ حُزْنٍ وَلاَ أَذًى وَلاَ غَمٍّ، حَتَّى الشَّوْكَةِ يُشَاكُهَا، إِلَّا كَفَّرَ اللَّهُ بِهَا مِنْ خَطَايَاهُ

আবূ সা‘ঈদ খুদরী ও আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিম ব্যক্তির উপর যে কষ্ট ক্লেশ, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আসে, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে ফুটে, এ সবের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৬৪১]

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَرَضِهِ، وَهُوَ يُوعَكُ وَعْكًا شَدِيدًا، وَقُلْتُ: إِنَّكَ لَتُوعَكُ وَعْكًا شَدِيدًا، قُلْتُ: إِنَّ ذَاكَ بِأَنَّ لَكَ أَجْرَيْنِ؟ قَالَ: «أَجَلْ، مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُصِيبُهُ أَذًى إِلَّا حَاتَّ اللَّهُ عَنْهُ خَطَايَاهُ، كَمَا تَحَاتُّ وَرَقُ الشَّجَرِ

আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুস্থ অবস্থায় তাঁর কাছে গেলাম। এ সময় তিনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আমি বললামঃ নিশ্চয়ই আপনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত। আমি এও বললাম যে, এটা এজন্য যে, আপনার জন্য দ্বিগুণ সাওয়াব। তিনি বললেনঃ হাঁ। যে কেউ রোগাক্রান্ত হয়, তাত্থেকে গুনাহসমূহ এভাবে ঝরে যায়, যেভাবে গাছ হতে তার পাতাগুলো ঝরে যায়। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৬৪৭]

তবে হ্যাঁ, সংগত কারণ যেমনঅসুস্থতার বিষয়টি ভিন্ন। যদি কোনো নারী এমন রোগে আক্রান্ত হন, যে তাঁর জরায়ু ফেলে না দিলে তাঁর মৃত্যুর আশঙ্কা আছে, সে ক্ষেত্রে কোনো দ্বিনদার চিকিৎসকের পরামর্শে জরায়ু অপসারণ করার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু চাকরির জন্য, জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য এমনটি করা সম্পূর্ণ হারাম। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৮/৩৪৭)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে দ্বীনদার ডাক্তারের পরামর্শক্রমে যদি উক্ত রোগীর জরায়ূ অপারেশন করার প্রয়োজন হয় এবং এছাড়া স্বাভাবিক নিয়মে বাচ্চা নেওয়া সম্ভব না হয় তাহলে জরুরতের খাতিরে উক্ত অপারেশন করা জায়েয আছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...