আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
378 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।

পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ রাব্বুল আ'লামিনের নামে শুরু করছি।

আমার সাথে এক মেয়ের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মেয়ে সুন্দর ও প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় অনেক প্রস্তাব আসা শুরু করে। এতে আমরা ২ জনই ভয় পেয়ে যাই। আবার আমাদের প্রেমের সম্পর্ক ইসলামি শরীয়তে হারাম যা বুঝতে পারি। এমতাবস্থায় মেয়ের পরিবার যেন অন্য জায়গায় তাকে বিয়ে না দিয়ে দিতে পারে এবং আমাদের সম্পর্ক যেন বৈধ/পবিত্র হয়, আমরা যেন পবিত্রতার সাথে একে অপরের সাথে দেখা সাক্ষাৎ এবং ঘোরাঘুরি করতে পারি, এজন্য একজন আলেমের কাছে পরামর্শ নিয়ে আমরা ২ জনই রাজি হয়ে যথেষ্ট সাক্ষীর উপস্থিতিতে কোনো পরিবারকে না জানিয়েই সম্পর্কের ৪ বছর পর ২০২০ সালে কাজী অফিসে গোপনে বিয়ে করি।

২০২২ সালে এসে মেয়ের পরিবার বিয়ের জন্য ওকে চাপ দিলে ও আমার কথা ওর পরিবারকে জানালে তারা রাজি হয়, এবং আমার পরিবারের সাথে কথা বলতে চায়। আমি (ছেলে) আমার পরিবারকে জানালে আমার বাবা-মা বলে যে, তুমি প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তোমার বিয়ে নিয়ে আমরা ভাবতেছি না। যেহেতু মেয়ের অন্য কোথাও বিয়ে হয়ে যাওয়ার ১ টা সম্ভাবন ছিল, সেহেতু আমার পরিবারকে অনেকটা চাপের মুখে ফেলে রাজি করিয়ে মেয়ের বাসায় পাঠাই। মেয়ের বাসায় বাবা-মা কথা বলে ওনাদেরকে কথা দেয় যে, আমাদের ছেলেকে আপনাদের মেয়ের সাথেই বিয়ে দিবো, কথা দিলাম, এরপর  ১ বছর সময় নিয়ে আসে আর বলে যে, ১ মাসের মধ্যে আমার বাবা-মা মেয়ের পরিবারকে ফোন দিয়ে আমাদের বাসায় ডাকবে, যেন তারা আমাদের বাসা, আশেপাশের পরিবেশ দেখে যায়।

কিন্তু ১ মাস চলে গেলো, কিন্তু আমার বাবা-মা ওদের পরিবারকে ফোনও দিলোনা, ডাকলোও না, আমাকে জানালো যে, ঈদের ছুটিতে ডাকবে, আমি সেটা মেয়ের পরিবারকে জানালাম, তাদের আপত্তি ছিল না। ঈদ পার হয়ে গেল, তবুও ডাকলো না। আমাকে বললো যে, ডিসেম্বরে ডাকবে।

আমি আমার বাবা-মা কে বললাম যে, এভাবে তারিখ পিছাচ্ছো, যদি ওরা মনে করে যে, আমার পরিবারের আগ্রহই নাই, মেয়ের যদি অন্য কোথায় বিয়ে দিয়ে দেয়?

তখন আমার বাবা বললো যে, এসব নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না, এরকম কিছু হবে না, আমি এসব বিষয় ম্যানেজ করবো। এসব আমাদের পরিবারগত বিষয়, সুতরাং তোমাকে আর মেয়েকে এসব নিয়ে ভাবতে হবেনা।

আজকে ৩-৪ মাস যাওয়ার পর এমন অবস্থায় পৌছলাম। মেয়ের পরিবার ভাবতেছে যে আমার পরিবারের আগ্রহ নাই, এমতাবস্থায় তারা অন্য কোথাও মেয়েকে বিয়ে দিতে চাচ্ছে। এখন আমি আমার পরিবারকে সিচোয়েশনটা জানালে আমার বাবা বলে যে, তোমার পড়াশুনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আর চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত আমি মেয়ের পরিবারের সাথে কথা বলবো না। এতে তারা মেয়েকে অপেক্ষা করালে করাবে, নাহলে অন্য কোথাও বিয়ে দিয়ে দিবে, তাতে কোনো যায় আসে না। আমার বাবা-মা তাদের ওয়াদা রাখলো না, কথা দিয়ে কথা ভাঙলো। তাই গতকাল রাতে আমার বাবার সাথে একটু উচ্চস্বরে কথা বলছি যে, এভাবে ঠিক না, তুমি আমাকে কথা দিলা যে, এরকম খারাপ সিচোয়েশন আসলে ওদেরকে ম্যানেজ করবা, আর বলছো ওদের সাথে কথাই বলবা না। একেক সময় একেক কথা কেন বলছো, বলে যে আমার ইচ্ছা।

 মেয়ের মা আমাদের বিয়ের কথা জানে, তবে বলছে যে, এভাবে বিয়ে হয় না, তাই উনি এই বিয়ে মানে না। মেয়ের পরিবার আমাকে যথেষ্ট ভালবাসে, আমাকে যথেষ্ট বিশ্বাস করে, আমাকে তাদের জামাই হিসেবে চায়, শুধু ১ টা চাকরি হলেই হবে। আমি অনেকবার মেয়ের বাসায় গিয়েছিলাম, ওর পরিবারের সবার সাথে কথা বলছিলাম।

মেয়ের বিষয়ে বলিঃ মেয়ে পর্দাশীল, ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, নিয়মিত কোরআন পাঠ করার চেষ্টা করেন, যথেষ্ট ইসলামি মাইন্ডের। মেয়ের পরিবারও ইসলামি মাইন্ডের।

সব ঘটনা বলার পর আমার প্রশ্ন হচ্ছে---

১। পরিবারকে না জানিয়ে যথেষ্ট স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে আমরা (প্রাপ্তবয়স্ক) যে বিয়ে করেছি, আমাদের বিবাহিত জীবনের ২ বছর হয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিয়েটা কি ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ী বৈধ হয়েছে?

২। মেয়ের মা বলছে যে, উনি এই বিয়ে মানেন না, এভাবে বিয়ে হয় না। ওনার না মানাতে আমাদের বিয়েটা কি বাতিল হয়ে যাবে?

৩। আমার বাবা-মা তাদেরকে কথা দিয়ে আসার পরও এখন প্রতিক্ষেত্রে মত বদলাচ্ছে, এটা কি ইসলামি দৃষ্টিকোন অনুযায়ী ঠিক করতেছেন?

৪। এমতাবস্থায় আমার বাবার সাথে উচ্চস্বরে কথা বলাটা কি আমার উচিত হয়েছে?

৫। এমতাবস্থায় আমার পরিবারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়া কি জায়েজ হবে? কারণ, আমরা ২ জনই এখনও স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই কথা বলি এবং একে অপরকে মন থেকে মানি।

৬। এমতাবস্থায় শরিয়ত মোতাবেক আমার এবং মেয়ের করণীয় কি?
by (21 points)
কেমন ইসলামিক মাইন্ডের মেয়ে যে বাবা মাক্ব অসন্তুষ্ট করে অন্য ছেলেক্স বিয়া করে?

1 Answer

0 votes
by (588,060 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
পূর্বে অনেক ফাতাওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে,মাতাপিতার সম্মতি ব্যতীত কখনো কোনো মুসলমান যুবক যুবতীর জন্য কোর্ট মেরেজ করা সমীচীন হবে না,মঙ্গলজনক হবে না।মাতাপিতাকে না জানিয়ে বালিগ ছেলে মেয়ের বিবাহ নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।উনেক উলামায়ে কেরাম অভিভাবকহীন বিয়েকে বাতিল বলে মনে করেন।হানাফি মাযহাব মতে কু'ফু হিসেবে ছেলেটি মেয়ের সমকক্ষ বা বেশী মর্যাদার অধীকারী হলেই কেবল বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে।নতুবা মেয়ের অভিভাবকের অনুমতির উপর বিয়ে মওকুফ থাকবে।জানুন-https://www.ifatwa.info/994, কুফু সম্পর্কে জানতে https://www.ifatwa.info/780
চার মাযহাবের অবস্থান দলীল সহ বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/1525

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)পরিবারকে না জানিয়ে যথেষ্ট স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে আপনারা যেহেতু বিয়ে করেছেন, এবং আপনারা সাবালকও তাই  ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ী আপনাদের বিয়ে বৈধ হয়েছে।

(২)মেয়ের মা বলছে যে, উনি এই বিয়ে মানেন না, এভাবে বিয়ে হয় না। ওনার না মানাতে আপনাদের বিয়েটা বাতিল হবে না। সাবালক তথা প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়ের জন্য মাতাপিতার অনুমতি গ্রহণ বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত নয়। বরং তাদের অনুমতি ব্যতিতও বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যায়।

(৩) আপনার বাবা-মা তাদেরকে কথা দিয়ে আসার পরও এখন প্রতিক্ষেত্রে মত বদলাচ্ছে, এটা চারিত্রিক অধপতনের পরিচায়ক হয়ে যাচ্ছে।

(৪) এমতাবস্থায় আপনার জন্য বাবার সাথে উচ্চস্বরে কথা বলাটা উচিত না। বরং আপনি বাবাকে বুঝাবেন। বাবাকে বুঝাতে যত রাস্তা গ্রহণ করতে হয়, তার সবটুকুই করবেন।

(৫) এমতাবস্থায় আপনার জন্য পরিবারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়া জায়েয হবে। আপনারা ২ জনই এখনও স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই রয়েছেন। এবং এখনই সংসার শুরু করে দিবেন। নিজের বাসায় সম্ভব না হলে, কোথাও চাকুরী খুজে নিয়ে তথায় সংসার শুরু করবেন। সাবধান, মাতাপিতার সাথে কখনো উচ্ছবাক্য করবেন না।

(৬) এমতাবস্থায় শরিয়ত মোতাবেক আপনার এবং মেয়ের করণীয় হল, আপনারা সংসার শুরু করবেন। কোথাও একটা চাকুরী খুজে নিয়ে তথায় সংসার শুরু করে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (588,060 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...