আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
237 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (45 points)

আসসালামু আলাইকুম।
আমাদের বাসার সাহায্যকারী, উনার বয়স ৬০। আমরা উমরাহ পালন করতে যাচ্ছি ইন শা আল্লাহ। আমরা কি উনাকে আমাদের সাথে ভিন্ন নিয়মে নিয়ে যেতে পারব? অর্থাৎ উনি কি আমাদের সাথে সাহায্য কারী হিসেবে যেতে পারবে? কারণ যেহেতু উনার মাহরাম নাই তাই উনি তো উমরাহ পালন করতে পারবে না। কিন্তু এমনিতে কি উনাকে আমরা নিতে পারব? আর যদি উনি যান সেক্ষেত্রে উনি কি নফল তাওয়াফ করতে পারবেন? মসজিদে নামাজ পড়তে পারবেন? এভাবে উনাকে নিয়ে গেলে আমাদের কি গুণাহ হবে? আমাদের উমরাহ কি কবুল হবে? দয়া করে জানাবেন। উল্লেখ্য উনার অনেক ইচ্ছা উমরাহ পালন করার। মক্কা মদিনা যিয়ারত করার।<!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_220920_050416_228.sdocx-->

1 Answer

+1 vote
by (62,670 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/16528/?show=16528#q16528 নং ফাতাওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

শরীয়তের বিধান মতে উমরার দ্বারাও গুনাহ মাফ হয়ে যায়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ تَابِعُوا بَيْنَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ فَإِنَّهُمَا يَنْفِيَانِ الذُّنُوبَ كَمَا يَنْفِي الْكِيرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ

ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা হজ্জকে উমরাহ ও উমরাহকে হজ্জের অনুগামী কর। (অর্থাৎ হজ্জ করলে উমরাহ ও উমরাহ করলে হজ্জ কর।) কারণ, হজ্জ ও উমরাহ উভয়েই দারিদ্র ও পাপরাশিকে সেইরূপ দূরীভূত করে যেরূপ (কামারের) হাপর লোহার ময়লাকে দূরীভূত করে ফেলে। (নাসাঈ ২৬৩০-২৬৩১, তিরমিযী)

 

এক উমরার পর আরেক উমরা করলে মাঝের যাবতীয় গুনাহ মাফ হয়ে যায়।  

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ عَنْ مَالِكٍ عَنْ سُمَيٍّ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا وَالْحَجُّ الْمَبْرُورُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلَّا الْجَنَّةُ

কুতায়বা ইবন সাঈদ (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক উমরাহ অন্য উমরাহ্ পর্যন্ত কাফফারা হয় উভয়ের মধ্যবর্তী পাপের। আর হজ্জে মাবরূর এর বিনিময় জান্নাত ব্যতীত আর কিছুই নয়। সহীহ : বুখারী ১৭৭৩, মুসলিম ১৩৪৯, নাসায়ী ২৬২৯, তিরমিযী ৯৩৩,

 

أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الصَّفَّارِ الْبَصْرِيُّ قَالَ حَدَّثَنَا سُوَيْدٌ وَهُوَ ابْنُ عَمْرٍو الْكَلْبِيُّ عَنْ زُهَيْرٍ قَالَ حَدَّثَنَا سُهَيْلٌ عَنْ سُمَيٍّ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْحَجَّةُ الْمَبْرُورَةُ لَيْسَ لَهَا جَزَاءٌ إِلَّا الْجَنَّةُ وَالْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا

আবদা ইবন আবদুল্লাহু সাফফার বাসরী (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হজ্জে মাবরূরের জান্নাত ব্যতীত কোন প্রতিদান নেই। আর এক উমরাহ অন্য উমরাহর মধ্যবর্তী সময়ের জন্য গুনাহের কাফফারা হয়। (নাসায়ী ২৬২৪)

আরো জানুনঃ  https://ifatwa.info/11185/

 

https://ifatwa.info/22297/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

সফর কমপক্ষে ৪৮ মাইলের (যা প্রায় ৭৮ কিলোমিটার মত)  চেয়ে কম হলে মহিলাগণ পর্দার সাথে একা একা সফর করতে পারবেন । আর ৪৮ মাইলের চেয়ে বেশি হলে স্বামী বা মাহরাম ছাড়া কারো সাথে বা একা সফর করা জায়েজ নয়।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

 

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا

নারী গোপন জিনিসযখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে উঁকি মেরে দেখে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

 

বিশুদ্ধ মতানুযায়ী মাহরাম না থাকলে মহিলার উপর হজ্বও ফরয হবে না। হাদীস শরীফে এসেছে-

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

 [‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেনরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে একত্র না হয়আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলোহে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনযাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো।

সহীহ : বুখারী ৩০০৬মুসলিম ১৩৪১ 

 

ইমাম নববী রাহ বলেন,

"فَالْحَاصِل أَنَّ كُلّ مَا يُسَمَّى سَفَرًا تُنْهَى عَنْهُ الْمَرْأَة بِغَيْرِ زَوْج أَوْ مَحْرَم " انتهى

মোটকথাঃ স্বামী বা মাহরাম পুরুষ ব্যতীত যেকোনো প্রকার সফর থেকে মহিলাকে বাধা প্রদান করা হবে।

 

মহিলাদের মাহরাম ঐ সকল ব্যক্তিদের বলা হয়যাদের সাথে আজীবন বিবাহ নিষিদ্ধ। যেমন- পিতাদাদাছেলেনাতিভাগিনামামাভাইভাতিজাশ্বশুরচাচামেয়ের জামাই প্রমূখ।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মাহরাম ছাড়া তার জন্য আপনাদের সাথে সফর করে উমরা করতে যাওয়া শরীয়ত অনুমোদন দেয় না। তবে যদি তিনি তারপরও আপনাদের সাথে চলে যান তাহলে তার সফরটা নাজায়েজ হবে। তবে তিনি উমরার অন্যন্য সকল বিধান পালন করে উমরা আদায় করে থাকলে তাহলে তা আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আর আপনাদের উমরা আদায় হওয়ার ব্যাপারে তো কোনো প্রশ্নই আসে না। অর্থাৎ আপনারা যদি উমরার সকল বিধি-বিধান পালন করে উমরা আদায় করে থাকেন তাহলে তা আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 228 views
0 votes
1 answer 322 views
...