ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/16528/?show=16528#q16528 নং ফাতাওয়াতে
উল্লেখ রয়েছে যে,
শরীয়তের বিধান
মতে উমরার দ্বারাও গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
হাদীস শরীফে
এসেছেঃ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ
رَسُولُ اللهِ ﷺ تَابِعُوا بَيْنَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ فَإِنَّهُمَا
يَنْفِيَانِ الذُّنُوبَ كَمَا يَنْفِي الْكِيرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ
ইবনে আব্বাস
(রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা হজ্জকে
উমরাহ ও উমরাহকে হজ্জের অনুগামী কর। (অর্থাৎ হজ্জ করলে উমরাহ ও উমরাহ করলে হজ্জ
কর।) কারণ, হজ্জ ও উমরাহ উভয়েই
দারিদ্র ও পাপরাশিকে সেইরূপ দূরীভূত করে যেরূপ (কামারের) হাপর লোহার ময়লাকে
দূরীভূত করে ফেলে। (নাসাঈ ২৬৩০-২৬৩১, তিরমিযী)
★এক উমরার পর আরেক উমরা করলে মাঝের যাবতীয় গুনাহ
মাফ হয়ে যায়।
হাদীস শরীফে
এসেছেঃ
أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ
عَنْ مَالِكٍ عَنْ سُمَيٍّ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ
كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا وَالْحَجُّ الْمَبْرُورُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلَّا
الْجَنَّةُ
কুতায়বা ইবন
সাঈদ (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ এক উমরাহ অন্য উমরাহ্ পর্যন্ত কাফফারা হয় উভয়ের মধ্যবর্তী পাপের। আর
হজ্জে মাবরূর এর বিনিময় জান্নাত ব্যতীত আর কিছুই নয়। সহীহ : বুখারী ১৭৭৩, মুসলিম ১৩৪৯, নাসায়ী ২৬২৯, তিরমিযী ৯৩৩,
أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ الصَّفَّارِ الْبَصْرِيُّ قَالَ حَدَّثَنَا سُوَيْدٌ وَهُوَ ابْنُ عَمْرٍو
الْكَلْبِيُّ عَنْ زُهَيْرٍ قَالَ حَدَّثَنَا سُهَيْلٌ عَنْ سُمَيٍّ عَنْ أَبِي
صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْحَجَّةُ الْمَبْرُورَةُ لَيْسَ لَهَا جَزَاءٌ إِلَّا
الْجَنَّةُ وَالْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا
আবদা ইবন
আবদুল্লাহু সাফফার বাসরী (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হজ্জে মাবরূরের জান্নাত
ব্যতীত কোন প্রতিদান নেই। আর এক উমরাহ অন্য উমরাহর মধ্যবর্তী সময়ের জন্য গুনাহের
কাফফারা হয়। (নাসায়ী ২৬২৪)
আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/11185/
https://ifatwa.info/22297/ নং ফাতওয়াতে
আমরা বলেছি যে,
সফর কমপক্ষে ৪৮ মাইলের (যা প্রায় ৭৮
কিলোমিটার মত) চেয়ে কম হলে
মহিলাগণ পর্দার সাথে একা একা সফর করতে পারবেন । আর ৪৮ মাইলের চেয়ে
বেশি হলে স্বামী বা মাহরাম ছাড়া কারো সাথে বা একা সফর করা জায়েজ নয়।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ
الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত
নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ
، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন
সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে উঁকি মেরে দেখে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম
তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)
বিশুদ্ধ মতানুযায়ী মাহরাম না থাকলে
মহিলার উপর হজ্বও ফরয হবে না। হাদীস শরীফে এসেছে-
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ
بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ. فَقَالَ
رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتِ
امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ
عَلَيْهِ)
[‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)]
হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে
একত্র না হয়, আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন
কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে।
আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে
হজ্জ/হজ করো।
সহীহ : বুখারী ৩০০৬, মুসলিম ১৩৪১
ইমাম নববী রাহ বলেন,
"فَالْحَاصِل أَنَّ كُلّ مَا
يُسَمَّى سَفَرًا تُنْهَى عَنْهُ الْمَرْأَة بِغَيْرِ زَوْج أَوْ مَحْرَم "
انتهى
মোটকথাঃ স্বামী বা মাহরাম পুরুষ
ব্যতীত যেকোনো প্রকার সফর থেকে মহিলাকে বাধা প্রদান করা হবে।
মহিলাদের মাহরাম ঐ সকল ব্যক্তিদের
বলা হয়, যাদের সাথে আজীবন বিবাহ নিষিদ্ধ।
যেমন- পিতা, দাদা, ছেলে, নাতি, ভাগিনা, মামা, ভাই, ভাতিজা, শ্বশুর, চাচা, মেয়ের জামাই প্রমূখ।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মাহরাম ছাড়া তার জন্য
আপনাদের সাথে সফর করে উমরা করতে যাওয়া শরীয়ত অনুমোদন দেয় না। তবে যদি তিনি তারপরও
আপনাদের সাথে চলে যান তাহলে তার সফরটা নাজায়েজ হবে। তবে তিনি উমরার অন্যন্য সকল
বিধান পালন করে উমরা আদায় করে থাকলে তাহলে তা আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আর
আপনাদের উমরা আদায় হওয়ার ব্যাপারে তো কোনো প্রশ্নই আসে না। অর্থাৎ আপনারা যদি
উমরার সকল বিধি-বিধান পালন করে উমরা আদায় করে থাকেন তাহলে তা আদায় হয়ে যাবে
ইনশাআল্লাহ।