আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
145 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
শায়েখ,

আমি তালাকের ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ। এর আগে তালাক সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছি। এবং আপনারা বলেছেন যে,  আপনার তালাক পতিত হবে না। কারন আমি ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ। আর ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ ব্যক্তির তালাক হয় না।

(১) আজ একটা নতুন সমস্যার জন্য মনের ভিতর সন্দেহ সৃষ্টি  হচ্ছে। আজ আমি যখন নামাজের ভিতর সুরা ফাতেহা পড়ছিলাম তখন তালাকের শব্দ মনের ভিতর চলে আসাতে আমার সুরা ফাতেহা পড়তে অসুবিধা হচ্ছিল। এবং আমার মনে হচ্ছিল আমি সুরা ফাতেহার ভিতর তালাক, তালাক উচ্চারন করছিলাম। এমন মনে হচ্ছিল আমার। তারপর থেকে ভয় হচ্ছে উচ্চারন করে ফেলেছিলাম কিনা।
এতে কি তালাক হবে?

(২) আমার মন অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবন। মনের ভিতর কোন খারাপ কিছু আসলেই আমি আমার ঈমান নিয়ে সন্দিহান হয়ে যায়। মনে হয় আমি ঈমান হারিয়ে ফেললাম।
একজন অনেক কয়টা বিয়ে করার কথা শুনে আমার মনের মধ্যে আসলো যে, নবি (সা) কেন অনেক কয়টা বিয়ে করলেন!
এমন কথা আমার মনের ভিতর চলে এসেছে। অনেক সময় আমি এসব উল্টা পাল্টা কথা একা একা মুখে উচ্চারন করছি কিনা সন্দেহ হয়। এছাড়া আরো অনেক শিরিকি চিন্তা ভাবনা আমার মনে চলে আসে। সিজদায় গেলে মনে হয় আমি কোন মূর্তিকে বা কোন মানুষকে সিজদা করছি।  এগুলো আমি কন্টোল করতে পারি না।
এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে?

(৩) আমার এক ক্লোজ বন্ধু ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। আমি যখন তার সাথে থাকি তখন নামাজ পড়ি। এমনিতে ঠিকমত পড়া হয় না। মাঝে মাঝে পড়া শুরু করলেও বেশিদিন ধরে রাখতে পারছি না। কিন্তুু আমার বন্ধুর সাথে থাকলে নামাজ পড়ি। ইচ্ছা না থাকলেও বাধ্য হয়ে পড়ি। সে না থাকলে হয়তো সেই সময় নামাজ পড়তাম না। বন্ধু কি মনে করবে নামাজ না পড়লে তাই পড়ি।আজ সে আমার অফিসে আসছিলো তাই তার সাথে আমি নামাজ পড়েছি ২ ওয়াক্ত। কিন্তুু আমার প্যান্ট পবিএ ছিল না আমি জানতাম। প্রেসাব এর পর টিশু ও পানি ব্যবহার না করার কারনে।
এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে হুজুর???
by (1 point)
আপনাকে পরামর্শ হল, আপনি কোন সাইকিয়াট্রিস্ট  এর শরাণাপন্ন হোন অথবা সম্ভব না হলে সরকারি মেডিক্যালের সাইকিয়াট্রি বিভাগ এর আউটডোরে দেখান। ওয়াসওয়াসা একটি মানসিক রোগ, যাকে মেডিক্যালের ভাষায় ওবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসওর্ডার(OCD) বলে। এটি সাধারণত মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামক একটি নিউরোকেমিক্যালের বৃদ্ধি বা হ্রাসের কারণে হয় এবং এতে আক্রান্ত রোগীর অনেক মানসিক কষ্ট হয়। অনেক দিনের শয়তানি ওয়াসওয়াসা, এ মানসিক রোগে পরিণত হয়। আপনার তালাক নিয়ে ওয়াসওয়াসা, এটি মানসিক রোগে পরিনত হয়েছে, যা আপনাকে মানসিকভাবে অনেক কষ্ট দিতে থাকবে। শুধু মাথায় তালাকের চিন্তায় ঘুরে ফিরে আসবে এবং তা থেকে বের হওয়া যায়না। আবার নাপাক, কুফরি নিয়েও হতে পারে। মানে যে কোন চিন্তার পুনরাবৃত্তি হতে থাকবে, যা রোগী করতে চায় না।
ইনশাআল্লাহ এ রোগ ৩/৪ মাস মেডিসিনে ও কাউন্সিলিং এ ভাল হয় এবং মেডিসিন কন্টিনিউ করতে হবে, সাথে আল্লাহর কাছেও এ রোগ মুক্তির জন্য দোয়া করতে হয়। সাথে শায়েখের পরামর্শ মত ওয়াসওয়াসার আমল গুলো করবেন।

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালান হবেনা।
আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক আগের মতোই বহাল রয়েছে। 
আপনি নিশ্চিত থাকুন।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

 يَأْتِي الشَّيْطَانُ أَحَدَكُمْ ، فَيَقُولَ : مَنْ خَلَقَ كَذَا وَكَذَا ؟ حَتَّى يَقُولَ لَهُ : مَنْ خَلَقَ رَبَّكَ ؟ فَإِذَا بَلَغَ ذَلِكَ ، فَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ وَلْيَنْتَهِ 
শয়তান তোমাদের কারো নিকট আসে এবং বলে, এটা কে সৃষ্টি করেছে, ওটা কে সৃষ্টি করেছে? পরিশেষে এ প্রশ্নও করে, তোমার রবকে কে সৃষ্টি করেছে? এ পর্যায়ে পৌঁছলে তোমরা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর এবং এ ধরণের ভাবনা থেকে বিরত হও। ( বুখারী ৩২৭ )

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: جَاءَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَأَلُوهُ: إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا مَا يَتَعَاظَمُ أَحَدُنَا أَنْ يَتَكَلَّمَ بِهِ، قَالَ: وَقَدْ وَجَدْتُمُوهُ؟ قَالُوا: نَعَمْ، قَالَ: ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ.
সারমর্মঃ
একবার সাহাবায়ে কেরমের একদল রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা আমাদের অন্তরে কখনো কখনো এমন বিষয় অনুভব করি, যা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা আমাদের কাছে খুব কঠিন মনে হয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, সত্যিই কি তোমরা এরকম পেয়ে থাক? তাঁরা বললেন হ্যাঁ, আমরা এরকম অনুভব করে থাকি। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ এটি তোমাদের ঈমানের স্পষ্ট প্রমাণ। (মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, অনুচ্ছেদ: অন্তরের ওয়াসওয়াসা)
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার ঈমান চলে যায়নি।
তবে আপনাকে তওবা করতে হবে।

এইসব অনাহূত ভাবনা যখন আপনাকে বিরক্ত করবে তখন স্মরণ করুন যে, এটা শয়তানের কাজ।  শয়তান তার উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করছে। 

আপনি নিজ কাজে মগ্ন হয়ে যান। এদিকে বেশি মনোযোগ দিবেন না। কেননা, এইসব অবাঞ্ছিত চিন্তাকে গুরুত্ব দিয়ে কীভাবে তা দূর করা যায় এ চিন্তায় পড়ে গেলে আপনি এখানেই আটকা পড়ে যাবেন। সামনে অগ্রসর হওয়া আর সম্ভব হবে না। এভাবে শয়তানের উদ্দেশ্য পূরণ হয়ে যাবে।

আর বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
কেহ যদি দ্বীনের প্রতি ইহানত,তিরস্কার,ঘৃণা দেখানোর জন্য অযু ছাড়া সেজদা করে,অযু ছাড়া নামাজ পড়ে,তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।        

বিস্তারিত জানুনঃ-

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি তো ঠাট্রামূলক এভাবে নাপাক প্যান্টে নামাজ পড়েননি,সুতরাং আপনার ঈমান চলে যাবেনা।
তবে আপনি মারাত্মক অপরাধ মূলক করেছেন।
আল্লাহর কাছে খালেস দিলে তওবা করবেন,আর ভবিষ্যতে এহেন গুনাহ করবেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...