দাইয়ুস সে ব্যক্তিকেই বলা হয়, যে তার পরিবার পরিজনকে সঠিক রাস্তায় পরিচালনা করেন না।
অর্থাৎ-যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-সন্তানদের বেপর্দা বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার সুযোগ দেয় তাকেও দাইউস বলা হয়।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে, “আল্লাহ তিন ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম করেছেন। মাদকাসক্ত, পিতা-মাতার অবাধ্য এবং দাইউস, যে তার পরিবারের মধ্যে ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেয়”[ মুসনাদে আহমাদ: ২/৬৯ ]
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেছেন :
‘দাইউস ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহ্র রাসূল (সাঃ)! দাইউস কে? উত্তরে রাসুলূল্লাহ (সাঃ) বললেন, ‘যে ব্যক্তি তার পরিবারে আল্লাহ্র আদেশ-নিষেধ বাস্তবায়নের ব্যাপারে কোন তৎপরতা অবলম্বন করে না বরং উপেক্ষা করে চলে।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, ‘দাইউস হল সে, যে তার পরিবারে বেহায়পনার বাস্তবায়নে সন্তষ্ট ও পরিতুষ্ট।’ (মুসনাদে আহমদ)
কোরআনে আল্লাহ বলেন,
“তোমরা নিজেরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর; যার উপর নিয়োজিত রয়েছেন কঠোর হৃদয় সম্পন্ন ফিরিশতাগণ, তারা আল্লাহ যা নির্দেশ করেন তা বাস্তবায়নে অবাধ্য হোন না, আর তাদের যা নির্দেশ প্রদান করা হয়, তা-ই তামিল করে’’।( সূরা আত-তাহরীম: ৬)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনার স্ত্রী বাহিরে বের হলে হাত মোজা ও পা মোজা পরিধান করতে হবে।
পূর্ণ হাত ও পা ঢাকতে হবে।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্ত্রী যে এভাবে হাতের আঙ্গুল খোলা রাখে, কবজির কিছুটা খোলা রেখে বাহিরে যাওয়াতে আপনি দাইয়ুস হবেন।
আপনি তাকে হাত পা ঢেকে পূর্ণ পর্দা করার আদেশ করবেন, চেষ্টা চালিয়ে যাবেন
তবে আপনি যদি তাকে পূর্ণ পর্দা করানোর আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যান,তাহলে আপনি দাইয়ুস হবেননা,ইনশাআল্লাহ ।
আল্লাহ তায়ালা চাইলে আপনাকে ক্ষমা করতে পারেন।
★ আপনি তাকে সাধ্যমতো আপ্রান চেষ্টা করে হলেও বুঝাবেন। আপনার এতো বুঝানোর পরেও যদি কাজ না হয়,তাহলে পৃথক বিছানায় ঘুমাবেন,তাতেও কাজ না হলে মুরব্বিদের মাধ্যমে বৈঠক করে তাকে বুঝাবেন,তাতেও কাজ না হলে তাকে বাবার বাসায় পাঠিয়ে দিবেন,এতেও সে যদি পূর্ণ পর্দা না করে,তাহলে এই অজুহাতে প্রয়োজনে তাকে তালাকও দিতে পারেন।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَ الّٰتِیۡ تَخَافُوۡنَ نُشُوۡزَہُنَّ فَعِظُوۡہُنَّ وَ اہۡجُرُوۡہُنَّ فِی الۡمَضَاجِعِ وَ اضۡرِبُوۡہُنَّ ۚ فَاِنۡ اَطَعۡنَکُمۡ فَلَا تَبۡغُوۡا عَلَیۡہِنَّ سَبِیۡلًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیًّا کَبِیۡرًا ﴿۳۴﴾
আর স্ত্রীদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার আশংকা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের শয্যা বর্জন কর এবং তাদেরকে প্রহার কর। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অন্বেষণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ শ্ৰেষ্ঠ, মহান।
(সুরা নিসা ৩৪)
وَ اِنۡ خِفۡتُمۡ شِقَاقَ بَیۡنِہِمَا فَابۡعَثُوۡا حَکَمًا مِّنۡ اَہۡلِہٖ وَ حَکَمًا مِّنۡ اَہۡلِہَا ۚ اِنۡ یُّرِیۡدَاۤ اِصۡلَاحًا یُّوَفِّقِ اللّٰہُ بَیۡنَہُمَا ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیۡمًا خَبِیۡرًا ﴿۳۵﴾
আর তাদের উভয়ের মধ্যে বিরোধ আশংকা করলে তোমরা স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিশ নিযুক্ত কর; তারা উভয়ে নিস্পত্তি চাইলে আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবিশেষ অবহিত।
(সুরা নিসা ৩৫)
তবে আপনি যদি তাকে পূর্ণ পর্দা করানোর আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যান,তাহলে আপনি দাইয়ুস হবেননা,ইনশাআল্লাহ ।
আল্লাহর কাছে দোয়া চালিয়ে যাবেন,প্রয়োজনে মায়ের সামনেও বেপর্দার দরুন জাহান্নামে যাওয়ার কথা বর্ণনা করে কান্না করতে পারেন, সন্তান হিসেবে এভাবে আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে গেলে সফলতা মিলবে,ইনশাআল্লাহ।