আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
208 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (91 points)
edited by

আমি বিবাহ করেছি প্রায় বছর দেয় হয়ে যাচ্ছে , আমার বিবাহের সময় ওতো টা দ্বীনের বুঝ ছিলো না ।  এখন আলহামদুলিল্লাহ অনেক কিছুই বুঝে আসছে এবং ইসলাম মাফিক জীবন যাপন এর নিয়ত করেছি । কিন্তু আমার বউ পর্দার ব্যাপারে এতো ও টা সচেতন না । অবশ্য কোনো অশ্লীল পোশাক পরে না কখনোই । বাইরে গেলে যদিও হিজাব পরে মুখ ঢাকে, তবে প্রায়ই হাতা কবজির কিছু উপর উঠে থাকে। তাকে এই গুলো বললে ও সে এতোটা গুরুত্ব দেয় না। জোর করলে বলে যে সে উল্টো যতোটুকু করে তা থেকেও দূরে সরে যাবে । বলেও যে জোর যে করছো এতদিন লাভ হইলো?উল্টাটা হইতাছে। যার ফলে আমি তাকে জোর করতে ও পারতেছি না।আমি তার জন্য দোয়া করি প্রতিদিন । মাঝে মধ্যে চেষ্টা করি বুঝানোর । আমি দাইয়ুস হওয়ার ভয়ে সারাক্ষন এক আতঙ্কে থাকি ।উল্লেখ্য তার অন্য ফরজ মোটামোটি আদায় করে বলা লাগে না। আর চরিত্র ও সামাজিক বিচারে ভালো , আমার বিশ্বাস ভঙ্গ হয় এমন  কিছু বা পরকীয়র ধারে কাছেও যাবে না যে কখনোই,  তা বলা যায় ,ইনশাআল্লাহ ।

১. বউ পরকীয়া কিছূ না বলে সহ্য করলে  তখন ই স্বামীকে দাইয়ুস  বলা হয়? এইটা কি ঠিক , আপনার বিবেচনায় এইটা পুরোপুরি ঠিক না হলে ,আমার বউ  সর্বনিন্ম কতোটুক ও কি ভাবে পর্দা করলে আমার এই বিষয়ে না ভাবলেও চলবে । 
২. এখন আমি কি করলে দাইয়ুস হওয়া থেকে মুক্তি পাবো বলে দিন ? মাঝে মাঝে বুঝানো আর দোয়া করাই কি যথেষ্ট  ?
৩. আমি ওকে অনেক ভালোবাসি ওর সাথেই থাকতে চাই । যেহেতু তার অন্য কারো সাথে সম্পর্ক নাই আমার প্রতিই বিশ্বস্থ তার সাথে কি সারা জীবন থাকতে পারবো এই ভাবে বুঝানোর চেষ্টা  জারি রেখে । নিচের হাদিসের ভিত্তিতে বা অন্য কোনো শরিয়া আইনে?
 ’’ইবনু ’আব্বাস (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে অভিযোগ করলো, আমার স্ত্রী কোনো স্পর্শকারীর হাতকে নিষেধ করে না। তিনি বললেনঃ তুমি তাকে ত্যাগ করো। সে বললো, আমার আশংকা আমার মন তার পিছনে ছুটবে। তিনি বললেনঃ (যেহেতু ব্যভিচারের প্রমাণ নেই) তাহলে তুমি তার থেকে ফায়দা হাসিল করো’’’ (সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ২০৪৯)


৪. আমার মা পর্দার ব্যাপারে খুব সচেতন নয় এই ক্ষেত্রে কি করণীয়

৫. আরেকটি বারতি বিষয়, সূর্য থেকে প্রাপ্ত আলোক শক্তি এবং তাপ শক্ত দিয়েই মূলত পৃথিবীর শক্তির চাহিদা পূরন হয়, বিজ্ঞান এমনটাই বলে। এই পারপাসে "সূর্যই পৃথিবীর শক্তির মূল উৎস " বা " সূর্য শক্তির মূল উৎস"  এই কথা বলা/পড়ালে কি শিরক হবে?বা ইমানচ্যুত হবো? বিজ্ঞান বইগুলো তে এসব লেখা থাকে, আমরা পড়াই বলি ব্যাখা করে দেই। তখন হয়তো আল্লাহর কথা স্মরন থাকে না কিন্তু এটা তো জানিই ও বিশ্বাস করি এই সব ই আল্লাহর তৈরী আল্লাহর আদেশেই কাজ করে। আমাদের কি কুফর  হবে এই কথা বলা /পড়ানোর জন্য?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/6996/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
দাইয়ুস সে ব্যক্তিকেই বলা হয়, যে তার পরিবার পরিজনকে সঠিক রাস্তায় পরিচালনা করেন না।
অর্থাৎ-যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-সন্তানদের বেপর্দা বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার সুযোগ দেয় তাকেও দাইউস বলা হয়। 

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে, “আল্লাহ তিন ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম করেছেন। মাদকাসক্ত, পিতা-মাতার অবাধ্য এবং দাইউস, যে তার পরিবারের মধ্যে ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেয়”[ মুসনাদে আহমাদ: ২/৬৯ ]

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেছেন : 
‘দাইউস ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহ্র রাসূল (সাঃ)! দাইউস কে? উত্তরে রাসুলূল্লাহ (সাঃ) বললেন, ‘যে ব্যক্তি তার পরিবারে আল্লাহ্র আদেশ-নিষেধ বাস্তবায়নের ব্যাপারে কোন তৎপরতা অবলম্বন করে না বরং উপেক্ষা করে চলে।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, ‘দাইউস হল সে, যে তার পরিবারে বেহায়পনার বাস্তবায়নে সন্তষ্ট ও পরিতুষ্ট।’ (মুসনাদে আহমদ)

কোরআনে আল্লাহ বলেন, 
“তোমরা নিজেরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর; যার উপর নিয়োজিত রয়েছেন কঠোর হৃদয় সম্পন্ন ফিরিশতাগণ, তারা আল্লাহ যা নির্দেশ করেন তা বাস্তবায়নে অবাধ্য হোন না, আর তাদের যা নির্দেশ প্রদান করা হয়, তা-ই তামিল করে’’।( সূরা আত-তাহরীম: ৬)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
আপনার স্ত্রী বাহিরে বের হলে হাত মোজা ও পা মোজা পরিধান করতে হবে।
পূর্ণ হাত ও পা ঢাকতে হবে।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্ত্রী যে এভাবে হাতের আঙ্গুল খোলা রাখে, কবজির কিছুটা খোলা রেখে বাহিরে যাওয়াতে  আপনি দাইয়ুস হবেন।

আপনি তাকে হাত পা ঢেকে পূর্ণ পর্দা করার আদেশ করবেন, চেষ্টা চালিয়ে যাবেন
   
তবে আপনি যদি তাকে পূর্ণ পর্দা করানোর আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যান,তাহলে আপনি দাইয়ুস হবেননা,ইনশাআল্লাহ ।
আল্লাহ তায়ালা চাইলে আপনাকে ক্ষমা করতে পারেন।

★ আপনি তাকে সাধ্যমতো আপ্রান চেষ্টা করে হলেও বুঝাবেন। আপনার এতো বুঝানোর পরেও যদি কাজ না হয়,তাহলে পৃথক বিছানায় ঘুমাবেন,তাতেও কাজ না হলে মুরব্বিদের মাধ্যমে বৈঠক করে তাকে বুঝাবেন,তাতেও কাজ না হলে তাকে বাবার বাসায় পাঠিয়ে দিবেন,এতেও সে যদি পূর্ণ পর্দা না করে,তাহলে এই অজুহাতে প্রয়োজনে তাকে তালাকও দিতে পারেন।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

 وَ الّٰتِیۡ تَخَافُوۡنَ نُشُوۡزَہُنَّ فَعِظُوۡہُنَّ وَ اہۡجُرُوۡہُنَّ فِی الۡمَضَاجِعِ وَ اضۡرِبُوۡہُنَّ ۚ فَاِنۡ اَطَعۡنَکُمۡ فَلَا تَبۡغُوۡا عَلَیۡہِنَّ سَبِیۡلًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیًّا کَبِیۡرًا ﴿۳۴﴾ 

আর স্ত্রীদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার আশংকা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের শয্যা বর্জন কর এবং তাদেরকে প্রহার কর। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অন্বেষণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ শ্ৰেষ্ঠ, মহান।
(সুরা নিসা ৩৪)

وَ اِنۡ خِفۡتُمۡ شِقَاقَ بَیۡنِہِمَا فَابۡعَثُوۡا حَکَمًا مِّنۡ اَہۡلِہٖ وَ حَکَمًا مِّنۡ اَہۡلِہَا ۚ اِنۡ یُّرِیۡدَاۤ اِصۡلَاحًا یُّوَفِّقِ اللّٰہُ بَیۡنَہُمَا ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیۡمًا خَبِیۡرًا ﴿۳۵﴾ 

আর তাদের উভয়ের মধ্যে বিরোধ আশংকা করলে তোমরা স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিশ নিযুক্ত কর; তারা উভয়ে নিস্পত্তি চাইলে আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবিশেষ অবহিত।
(সুরা নিসা ৩৫)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
(০১)
আপনার স্ত্রী পরিপূর্ণ পর্দা না করে গায়রে মাহরামদের সামনে গেলেই আপনি দাইয়ুস হবেন।

তবে আপনি যদি তাকে পূর্ণ পর্দা করানোর আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যান,তাহলে আপনি দাইয়ুস হবেননা,ইনশাআল্লাহ ।

(০২)
আপনি আপ্রান চেষ্টা করে তাকে বুঝাবেন,আর দোয়া করবেন।
তাহলেই আপনি দাইয়ুস হতে মুক্ত হবেন।
,
তবে পরামর্শ থাকবে, আপনি উপরোক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করে তাকে বুঝাবেন।

(০৩)
হ্যাঁ, আপনি তাকে বুঝানোর পাশাপাশি তার সাথে সারাজীবন সংসার করতে পারবেন।

(০৪)
আপনি তাকে সন্তান হিসেবে সাধ্যমতো বুঝাবেন।
প্রয়োজনে এই ব্যাপারে হক্কানী শায়েখদের ওয়াজের রেকর্ড শুনাবেন।

আল্লাহর কাছে দোয়া চালিয়ে যাবেন,প্রয়োজনে মায়ের সামনেও বেপর্দার দরুন জাহান্নামে যাওয়ার কথা বর্ণনা করে কান্না করতে পারেন, সন্তান হিসেবে এভাবে আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে গেলে সফলতা মিলবে,ইনশাআল্লাহ। 

(০৫)
যেহেতু আকীদা বিশুদ্ধ রেখেই আপনি এটি বলছেন বা পড়াচ্ছেন, সুতরাং এতে কুফরি হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 240 views
...