আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
139 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ

হুজুর,

আশা করি ভাল আছেন।

প্রশ্নঃ  ( আল্লাহর জন্য একটু গভীর ভাবে পড়লে ভাল হয়,  অনেক গুরত্বপূর্ণ ছেলেটির জন্য এই প্রশ্ন)

ভার্সিটিতে অধ্যয়ণরত কোনো  ছেলে পুরোপরি দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা করে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী, সুন্নাতি দাড়ি, সুন্নাতি লেবাস  আছে আলহামদুলিল্লাহ। ভবিষ্যতে তার ইচ্ছা ভার্সিটির পড়া শেষ করে সে কওমী মাদ্রাসায় দরসে নেজামী কোর্স শেষ করে আল্লাহর জন্য আলেম হয়ে সারাটা জীবন দ্বীনের খেদমত করে কাটিয়ে দিবে। আল্লাহর জন্য ইলমের গভীরে যাওয়ার ইচ্ছা তার খুবই তীব্র এবং প্রচন্ড। আর এজন্য সে নিজের জীবন পর্যন্ত আল্লাহর জন্য  উৎসর্গ করে দিতে প্রস্তুত। সে এখন অনার্স ২য় বর্ষে পড়াশোনা করছে, অনার্স শেষ করতে কমপক্ষে আরও ২ বছর লাগবে। এরপরই মাদ্রাসায় চলে যাবে তার ভাবনা, যোগ্যতা অর্জন করে তারপর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত উম্মাতের ফিকিরেই থাকার তীব্র ভাসনা তার।  বর্তমানে তার বয়স সাড়ে ২৪ বছর,  পড়াশোনার খরচ নিজেকেই চালাতে হয় কারণ পারিবারিকভাবে অসচ্ছল, তবে আলহামদুলিল্লাহ।
কিন্তু ইদানিং সে বিয়ের জন্য অনেক প্রয়োজন অনুভব করছে, যদিও ইলম অর্জনের আগে বিয়ে করার ইচ্ছা তার ছিল না, কারণ বিয়ে করলে নাকি আর গভীর ইলম অর্জনে লিপ্ত হওয়া সম্ভব হয় না। অথচ বিয়ের পর আল্লাহএর জন্য গভীর ইলম অর্জন করতে না পারলে তার মন এটা কিছুতেই মানতে পারবে না, অনেক কষ্ট হবে এটা সে অনুভব করছে। তার মনে হচ্ছে, ইলম অর্জনের ইচ্ছা তার মরণের পর ও যাবে না।
এই রকম এক জটিল পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে মানসিক ভাবে দূর্বল হয়ে ভাবছে কি করা উচিত তার????   নিজের চরিত্র হেফাজতের জন্য বিয়ে করতে গেলে ইলম অর্জন কিভাবে হবে তার???  আবার, ইলম অর্জনের জন্য বিয়ে ছাড়া থাকতে চাইলেও এখন যে সে পাড়ছে না!!! অথচ তার ইচ্ছা ছিল প্রয়োজনে ৩৫/৪০ বছরে বিয়ে করবে তবুও ইলম অর্জনে বাধা হবে এমন কাজ সে করবে না!
কিন্তু  বয়স ২৫ এর কোঠায় এসে বিয়ের প্রয়োজন তার অনেক তীব্র হয়ে গিয়েছে।
১) প্রাণের শাইখ,
বুযুর্গানে দ্বীনের এবং মুহাক্কিক উলামায়ে কেরামের অভিজ্ঞতার আলোকে এমন  পরিস্থিতিতে তার কি করা উচিত বলে আপনারা মনে করেন???


২) যদি বলেন বিয়ে করে নিতে তাহলে তার ইলম অর্জনের কি হবে, উম্মাতের ফিকির আর নিজের ভাসনা কিভাবে পূরণ হবে তার, কষ্টে তাহার মনটা  মরে যাবে হয়তো হুজুর, যদি গভীর  ইলম অর্জন করতে কোনোভাবে ব্যর্থ হয় সে!!!


৩) যদি বিয়ে করতে বলেন, তাহলে এমন অবস্থায় বিয়ে করে স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে গেলে পড়াশোনার সুযোগ কিভাবে পাবে অথচ সে একজন ছাত্র???  আর এমন হাত খালি অবস্থায় বিয়ে করা জায়েজ কিনা???
৪) আর যদি এমন কোনো ধনী পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এই শর্তে যে, ঘর জামাই থাকার শর্তে তার মেয়েকে এই মুহুর্তে তার সাথে বিয়ে দিবে আর যতদিন সে ছাত্র থাকবে ততদিন তার স্ত্রীর ভরণপোষণ শ্বশুর ই দিবে।  তাহলে কি এমন প্রস্তাব মেনে নেয়া উচিত????
উল্লেখ্য যে, মেয়ে শহরে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছে, মেয়ের পরিবার শুনেছি দ্বীনদার, তারা শহরের স্থায়ী বাসিন্দা। কিন্তু @আর্থিক অবস্থার দিক @ থেকে তাদের সাথে ছেলের কুফু তো কোনোভাবেই মিল নেই, তার ওপর ঘর জামাই থাকা লাগবে।
৫) আর ঘরজামাই থাকা কি জায়েজ???


জাজাকাল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
‘আলক্বামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত। 

عن علقمة، قال: كنت مع عبد الله، فلقيه عثمان بمنى، فقال: يا أبا عبد الرحمن إن لي إليك حاجة فخلوا، فقال عثمان: هل لك يا أبا عبد الرحمن في أن نزوجك بكرا، تذكرك ما كنت تعهد؟ فلما رأى عبد الله أن ليس له حاجة إلى هذا أشار إلي، فقال: يا علقمة، فانتهيت إليه وهو يقول: أما لئن قلت ذلك، لقد قال لنا النبي صلى الله عليه وسلم: «يا معشر الشباب من استطاع منكم الباءة فليتزوج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم فإنه له وجاء»

তিনি বলেন, যখন আমি ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম, ‘উসমান (রাঃ) তাঁর সঙ্গে মিনাতে দেখা করে বলেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আপনার সাথে আমার কিছু দরকার আছে। অতঃপর তারা দু’জনে এক পাশে গেলেন। তারপর ‘উসমান (রাঃ) বললেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমি কি আপনার সঙ্গে এমন একটি কুমারী মেয়ের বিয়ে দিব, যে আপনাকে আপনার অতীত কালকে স্মরণ করিয়ে দিবে? ‘আবদুল্লাহ্ যখন দেখলেন, তার এ বিয়ের দরকার নেই তখন তিনি আমাকে ‘হে ‘আলক্বামাহ’ বলে ইঙ্গিত করলেন। আমি তাঁর কাছে গিয়ে বলতে শুনলাম, আপনি আমাকে এ কথা বলছেন (এ ব্যাপারে) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন, হে যুবকের দল! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে এবং যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ‘সওম’ পালন করে। কেননা, সওম যৌন ক্ষমতাকে দমন করে।(সহীহ বোখারী-৫০৬৫)

অন্য এক হাদীসে আছে,রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ

(يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ ، مَنْ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ ، وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ)

হে যুবকদের দল! তোমাদের মধ্যে যারা সামর্থবান,তারা যেন বিয়ে করে নেয়।কেননা বিয়ে চক্ষুকে নিচু রাখে এবং লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে।আর যাদের বিয়ের সামর্থ্য নেই তারা যেন রোযা রাখে।কেননা রোযা ঢাল স্বরূপ।(সহীহ বোখারী-১৯০৫,সহীহ মুসলিম-১৪০০)

★প্রশ্নে উল্লেখিত ভাই যদি বিবাহের (স্ত্রীর মোহরানা,ভরনপোষণ ইত্যাদির) সামর্থ্য রাখে,তাহলে তার জন্য এই মুহুর্তে বিবাহই জরুরী ও আবশ্যক। 

আরো জানুনঃ- 

বিবাহের পরেও ইলম অর্জন করা যায়,অনলাই মাদ্রাসায় ভর্তি হতে পারবে,কওমি মাদ্রাসার যেগুলোতে জেনারেল দের জন্যেও আলেম হওয়ার কোর্স রয়েছে,সেগুলো ভর্তি হতে পারবে। 

আর যদি তিনি স্ত্রীর মোহরানা,ভরনপোষণ ইত্যাদি দিতে সক্ষম না হোন,সেক্ষেত্রে বিবাহ না করে রোযা রাখবে।

প্রয়োজনে লাগাতার রোযা চালিয়ে যাবে।

(০২)
হাত খালি অবস্থায় বিবাহ উচিত হবেনা।
কেননা এক্ষেত্রে স্ত্রীর হক আদায় করতে পারবেনা।
,
হ্যাঁ যদি তিনি স্ত্রীর মোহরানা,ভরনপোষণ ইত্যাদি দিতে সক্ষম হোন,সেক্ষেত্রে বিবাহ করতে পারেন।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তিনি যদি স্বাভাবিক ভাবে স্ত্রীর ভরনপোষণ যোগাড় করতে না পারেন,তাহলে তার জন্য রোযা রাখাই উচিত।

(০৪)
এই প্রস্তাব মেনে নিতে শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে৷ কোনো তালাক নেই।
সে মেনে নিতে পারবে।
,
বিবাহের প্রয়োজনীয়তা থাকায় তার উক্ত প্রস্তাব মেনে নেয়াই উচিত বলে মনে করছি।

(০৫)
হ্যাঁ, মেয়ের অভিভাবকদের অনুমতিক্রমে ঘর জামাই থাকা জায়েজ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 157 views
...