আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
169 views
in পবিত্রতা (Purity) by (42 points)
আসসালামু আলাইকুম হুজুর,,, হুজুর আমি কাল একটা পোস্ট করেছিলাম এখন দেখছি ডিলেট হয়ে গিয়েছে,,, তাই আবার করছি,,,

আমার কম উত্তেজনায় মজি বের হয়। যেমনঃ মোবাইলে উল্টাপাল্টা কিছু চলে আসলে বা কোথাও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়লে। আমার সন্দেহ হলে আমি চেক করি। বেশিরভাগ সময় ভেজা দেখতে পাই। যা কাপড়ে লাগতে পারে। লাগলেও তা ১ দিরহামের থেকে কম। কিন্তু প্রস্রাবের পর পানি নিলেতো ১ দিরহাম পার হয়ে যাবে। কিন্তু সব সময় কাপড় পরিবর্তনতো সম্ভব না। এখন আমার করণীয় কি হুজুর? আর এই ক্ষেত্রে কাপড় নাপাক হওয়ার বিষয়টা কি এমন যে নাপাকি কাপড়ের বাইরের দিক থেকে স্পষ্ট দেখতে পাওয়া লাগবে না হলে নাপাক হবে না। ভেতরে যা হচ্ছে হউক??

1 Answer

0 votes
by (59,730 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/51361/?show=51361#q51361 নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

মুমিনদেরকে বলুনতারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

 

ইসলামী স্কলারগন বলেছেন যে,

পর্ণ ও অশ্লীল ভিডিও দেখার ফলে আখেরাতে তো তার জন্য কঠিন ও মারাত্মক শাস্তি রয়েছেইসাথে সাথে এতে তার আমলনামা কলুষিত হয়দীন ও চরিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অন্তর শয়তানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

পর্ণ ও অশ্লীলতায় ডুবে থাকা ব্যক্তির অন্তর রোগাক্রান্ত হয়। সে অন্তরে ভয়-ভীতিঅস্থিরতাদুশ্চিন্তা ও নি:সঙ্গতা অনুভব করে।

অন্তর থেকে লজ্জা শরম বিদায় নেয়ঈমানের স্বাদ উঠে যায় এবং আল্লাহ ভীতি লোপ পায়।

 

(দুনিয়াবি ক্ষতি হলোঃ-)

উক্ত ব্যাক্তি ধীরে ধীরে নানা পাপাচারে লিপ্ত হয়জিনা-ব্যভিচার ও নোংরামির পথ খুঁজতে থাকেনিজের উপর জুলুম করতে থাকেহস্তমৈথুন করেতার শরীর ও চেহারায় পাপাচারের চিহ্ন ফুটে উঠে এবং শরীরে নানা রোগব্যাধি বাসা বাঁধে।

 

নিচের পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। 

নিয়মিত নামায আদায় করতে হবে এবং আল্লাহ্ কাছে মুনাজাত করেতাঁকে স্মরণ করেতাঁর কিতাব তেলাওয়াত করে স্বাদ অনুভব করতে হবে। 

আল্লাহ্ তাআলা বলেন,

اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ

আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। (সূরা আনকাবুত ৪৫)

 

একবার সাহাবারা রাসূলুল্লাহ -কে বললঅমুক সাহাবী বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়েছে। রাসূলুল্লাহ  জিজ্ঞেস করলেনসে কি এখনো নামাজ পড়েসবাই বললহ্যাঁপড়ে। রাসূলুল্লাহ  বললেনসে যদি নামাজ পড়তে থাকে তাহলে নামাজ তাকে অবশ্যই একদিন খারাপ কাজ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। (মুসনাদে আহমাদ ২/৪৪৭)

 

একাকী থাকা যাবেবা। বিশেষ করে একাকী রাত কাটানো যাবেনা। 

হাদিসে এসেছে নবী  কোন পুরুষকে একাকী রাত কাটাতে নিষেধ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ ২/৯১)

 

ঘুমানোর সময় ইসলামী আদবগুলো মেনে চলতে হবে। যেমন ঘুমানোর দোয়াগুলো পড়াডান পার্শ্বে কাত হয়ে শোয়াপেটের উপর ভর দিয়ে না-ঘুমানোযেহেতু এ সম্পর্কে নবী -এর নিষেধ আছে।

 

কাছে মোবাইল বা কম্পিউটার  রাখা যাবেনা,সেটি অন্য ঘরে রেখে আসতে হবে।

যথাসম্ভব মাগরিবের পর থেকেই মোবাইল থেকে দূরে থাকতে হবে।

 

পাশাপাশি নবী নবী -এর নির্দেশিত প্রতিকার পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। সেটা হচ্ছে– রোযা রাখা। কেননা রোযা যৌন চাহিদাকে পরিশীলিত করে।

সুতরাং মাঝে মাঝে নফল রোজা রাখতে হবে। 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন

يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ ، مَنِ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ ، ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ

হে যুবক সম্প্রদায় ! তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহ করার সামর্থ্য রাখেতারা যেন বিবাহ করে। কেননাবিবাহ তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং যৌনতাকে সংযমী করে এবং যাদের বিবাহ করার সামর্থ্য নাইসে যেন রোযা পালন করে। কেননারোযা তার যৌনতাকে দমন করে। (বুখারী,হাদীস নং-৪৯৯৬)

 

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/4425/

 

নাজাসতে গালিজাহ কাপড় বা শরীরে লাগলেএক দিরহাম (তথা বর্তমান সময়ের পাঁচ টাকার সিকি)পরিমাণ বা তার চেয়ে কম হলেউক্ত কাপড়ের সাথে নামায বিশুদ্ধ হবে। যদিও তা ধৌত করা উত্তম যদি সময়-সুযোগ থাকে। আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/53602/

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শুধু সন্দেহের উপর ভিত্তি করে আপনার কাপড় নাপাক হবে না। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি প্রথমে এক দিরহামের কম নাপাকি লাগে তাহলে তাই ধরে রাখবেন। অর্থাৎ ঐ কাপড় পরিধান করে নামাজ পড়তে পারবেন। তবে সময় সুযোগ থাকলে অবশ্যই উক্ত কাপড়ও পরিবর্তন করে বা উক্ত নাপাকি ধৌত করে নামাজ পড়বেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...