জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «السَّمْعُ وَالطَّاعَةُ عَلَى المَرْءِ المُسْلِمِ فِيمَا أَحَبَّ وَكَرِهَ، مَا لَمْ يُؤْمَرْ بِمَعْصِيَةٍ، فَإِذَا أُمِرَ بِمَعْصِيَةٍ فَلاَ سَمْعَ وَلاَ طَاعَةَ»
হযরত আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মুসলিম আমীরের কথা পছন্দ হোক বা না হোক তার কথা শোনা ও মানা উচিত যতক্ষণ না সে গোনাহের আদেশ করে। যদি সে গোনাহের আদেশ করে, তাহলে তার কথা শোনা ও মানা যাবে না। [বুখারী, হাদীস নং-৭১৪৪]
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ يَرْوِيهِ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ رَأَى مِنْ أَمِيرِهِ شَيْئًا فَكَرِهَهُ [ص:63] فَلْيَصْبِرْ، فَإِنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ يُفَارِقُ الجَمَاعَةَ شِبْرًا فَيَمُوتُ، إِلَّا مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً»
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি তাদের শাসকের মাঝে খারাপ কিছু দেখে, তাহলে সে যেন ধৈর্য ধারণ করে, কেননা, একতাবদ্ধ দলকে ভেঙ্গে পৃথক হওয়া বৈধ নয়। সে যদি আলাদা হয়ে মৃত্যু বরণ করে, তাহলে সে জাহিলী মৃত্যুবরণ করল। [বুখারী, হাদীস নং-৭১৪৩]
আরো জানুনঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইনতিকালের প্রায় ৫০ বছর পর ৬১ হিজরীর ১০ মুহাররমে কারবালায় হযরত হুসাইন রাযি.-এর শাহাদাতের ঘটনা ঘটে। নিঃসন্দেহে তাঁর শাহাদাত তাঁর উঁচু মাকাম ও উচ্চ মর্যাদার বিষয়। কিন্তু উম্মতের জন্য তা হয়ে গেছে অনেক বড় ইমতিহান ও মুসিবতের বিষয়। সে ঘটনা মানুষ ভুলতে চাইলেও ভুলতে পারে না।
মদিনায় আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাঃ কে তৎকালিন বাদশাহ হাজ্জাজ বিন ইউসুফ যে নির্মম ভাবে শহীদ করে দিয়েছেন,সেই ঘটনাও ভোলার মতো নয়।
তারা শহীদ।
কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَ لَا تَقُوْلُوْا لِمَنْ یُّقْتَلُ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ اَمْوَاتٌ، بَلْ اَحْیَآءٌ وَّ لٰكِنْ لَّا تَشْعُرُوْنَ، وَ لَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَیْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَ الْجُوْعِ وَ نَقْصٍ مِّنَ الْاَمْوَالِ وَ الْاَنْفُسِ وَ الثَّمَرٰتِ، وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیْنَ، الَّذِیْنَ اِذَاۤ اَصَابَتْهُمْ مُّصِیْبَةٌ، قَالُوْۤا اِنَّا لِلهِ وَ اِنَّاۤ اِلَیْهِ رٰجِعُوْنَ، اُولٰٓىِٕكَ عَلَیْهِمْ صَلَوٰتٌ مِّنْ رَّبِّهِمْ وَ رَحْمَةٌ، وَ اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْمُهْتَدُوْن.
আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত বলো না। প্রকৃতপক্ষে তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা (তাদের জীবিত থাকার বিষয়টা) উপলব্ধি করতে পার না। আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব (কখনও) কিছুটা ভয়-ভীতি দ্বারা, (কখনও) জান-মাল ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতির দ্বারা। সুসংবাদ শোনাও তাদেরকে, যারা (এরূপ অবস্থায়) সবরের পরিচয় দেয়। যারা কোনো মুসিবত দেখা দিলে বলে ওঠে, আমরা সকলে আল্লাহরই এবং আমাদেরকে তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে। এরাই তারা, যাদের প্রতি তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে বিশেষ করুণা ও দয়া রয়েছে এবং এরাই আছে হিদায়াতের উপর। -সূরা বাকারা (২) : ১৫৪-১৫৭
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী!
হযরত হুসাইন রাঃ এবং হযরত আব্দুল্লাহ বিন যুবাইর রাঃ উভয়ই জিহাদের জন্য অস্ত্র তুলে নেননি।
তারা কেউই জিহাদ করার লক্ষে খলিফার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেননি।
,
তারা বাইয়াত গ্রহন না করার কারনে তৎকালীন খলিফা তাদের হত্যা করেছে।
মাজলুমানা হত্যাকাণ্ডের কারনে তারা শহীদ।
,
হুসাইন রাঃ জিহাদ করার জন্য কুফায় যাননি,কারন যদি জিহাদের জন্যই যেতেন! তাহলে তার কুফায় যাওয়ার আগে বড় বড় ছাহাবায়ে কেরামগন ফিরে আসতে বলতেননা।
জিহাদ থেকে ফিরে আসার আহবান করাও তোয়া গুনাহ।
,
তিনিও ময়দান থেকে যিয়াদের কাছে যেই সমস্ত প্রস্তাব পেশ করেছিলেন,তার সবকটিই বুঝায় যে তিনি কোনোভাবেই খলিফার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সেখানে যাননি।
,
সুতরাং তারা মাজলুমানা শহীদ,তারা খলিফার বিরুদ্ধে আগ বাড়িয়ে যুদ্ধের ভিত্তিতে অস্ত্র তুলে ধরেননি।
নিজেকে জালিমের আঘাত থেকে বাচানোর জন্য শেষ পর্যন্ত অস্ত্র দ্বারা স্রেফ প্রতিহত করেছেন।
এটাই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আত এর আকীদা।