আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
365 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (27 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম
শায়েখ,

তালাকের ওয়াসওয়াসায় আমার জিবন বিষাদগ্রস্থ। সবসময় তালাক - তালাক মনের ভিতর বলতে থাকি। এটা আমার একটা মানসিক রোগে পরিনত হয়েছে। দিনের বেশিরভাগ সময় আমার এসব নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেই কাটে। বিষয়টা এমন গুরুতর যে, ওয়াইফ এর সাথে সাধারন কথা বলার সময় ও হালকা রাগ হলেই মনের ভিতর তালাক শব্দ চলে আসছে। সে সময় যদি মুখ দিয়ে  কোন অস্পষ্ট শব্দ বের হয় তাতেও আমি আতংকিত হয়ে যাচ্ছি। মনে হচ্ছে আমি তালাক উচ্চারণ করতে গিছিলাম।  এই  সন্দেহ একটার পর একটা আসতেই আছে। সব বিষয়ে আমি স্বাভাবিক শুধু তালাকের বিষয়ে আমি অস্বাভাবিকতার স্বীকার।
অনেক সময় মনের ভিতর তালাক শব্দ আসার পর আমি ভুলে যায় যে, শব্দটি কি আমি মনে মনে বললাম না মুখেও উচ্চারন করলাম!  এই রকম কনফিউশন মনের ভিতর কাজ করে। রাতে ঘুমিয়ে অনেক সময় তালাক নিয়ে কল্পনা চলতে থাকে মনের ভিতর। ঘুম থেকে উঠে আর কিছু মনে করতে পারি না। তালাক শব্দটি বলার জন্য মনে হয় কেউ আমাকে ফোর্চ করছে। খুব কষ্ট করে নিজের মুখ বন্ধ করে রাখি। মনে হয় এই বুঝি মুখ  দিয়ে বের হয়ে যাবে। এভাবে তো স্বাভাবিক থাকা যায় না।

একটা মানুষ কোন বিষয় নিয়ে যতটা ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ হতে পারে আমি তালাক নিয়ে ঠিক ততটা ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ। শুধু মনে হয় আল্লাহ মনে হয় আমার মাফ করবেন না। এই হতাশা আমাকে সবসময় কষ্ট দেই। মানসিক ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধ চলছে। কিন্তুু কিছু হচ্ছে না। আবার ডাক্তারের কাছে যাবো।

(১) আমার প্রশ্ন হলো : এসব কারনে কি তালাক পতিত হবে?আমি যেহেতু ওয়াসওয়াসার স্বীকার তাই আমার এই সমস্যাগুলি বিবেচনা করে আমার তালাকের মাসায়ালা কেমন হবে হুজুর?

স্বাভাবিক অবস্থায় তালাক দেবার কোন নিয়ত আমার নাই। তালাক হয়ে গেছে কিনা এই ভয়ে আমি আমার ওয়াইফ এর সাথে ঠিকমত কথা বলতে পারি না। আমার মনটা প্রায় সময় ভারাকান্ত থাকে। কোন কিছুতেই মন বসে না। আপনার কাছে প্রশ্ন লিখছি এখন ও আমার বুকের ভিতর ব্যাথা করছে ভয়ে। আমার এই সমস্যা আমার ওয়াইফ জানে না।

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/53172/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে আপনার তালাক পতিত হবেনা।
তাই আপনি নিশ্চিত থাকুন। 

তবে এ কথা গুলো এড়িয়ে চলা আপনার জন্য খুবই জরুরী। 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এখান থেকে নিজেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে আপনার জন্য কিছু পরামর্শঃ-

অহেতুক পেরেশানী করে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। আপনি কিছুদিন বাহিরে থাকুন।
তাবলিগে গিয়ে ৪০ দিন সময় লাগান,চিল্লায় চলে যান, মনের তীব্র কনফিউশন থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিন। 
,
আপনি তালাক নিয়ে যতই চিন্তা করুন না কেন, কিংবা মনে মনে কথা বলুন না কেন, কিংবা মনে মনে যতই উল্লেখিত শর্ত আওড়ান না কেন, কিংবা নিয়ত ও সংকল্প করুন না কেন– যতক্ষণ পর্যন্ত মুখে উচ্চারণের বিষয়টি পরিপূর্ণ নিশ্চিত হবেন না ততক্ষণ পর্যন্ত তালাক হবে না।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ تَجَاوَزَ لأُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ وَحَدَّثَتْ بِهِ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ بِهِ

‘নিশ্চয় আল্লাহ্ তাআলা আমার উম্মতের ওয়াসওয়াসা, মনে মনে কথা বলা ক্ষমা করে দিয়েছেন; যতক্ষণ না সে কর্ম করে কিংবা কথা বলে।’ (সহিহ বুখারী ৬৬৬৪ সহিহ মুসলিম ১২৭)

★আপনি তালাক সংক্রান্ত কোন মাসআলা পড়বেন না। কাউকে জিজ্ঞাসা করতেও যাবেন না। কারো সাথে এ সংক্রান্ত আলাপ ও আলোচনাও করবেন না।
তালাক সংক্রান্ত প্রশ্ন করবেননা। 

মনের মাঝে এ বিষয়ক কোন কিছু আসতে দিবেন না। আসলেই অন্য বিষয় নিয়ে মগ্ন হয়ে যাবেন, প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলবেন। ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان
‘ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)

★সকাল ও সন্ধ্যায় পড়ুন-

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ

 (আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমার আশ্রয় প্রার্থনা করি তার অসম্ভষ্টি ও শাস্তি থেকে এবং তার বান্দার অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে ও শয়তানের সংস্পর্শ থেকে।)

★ফজর ও মাগরিবের পর এবং ঘুমানোর আগে সূরা ফালাক ও নাস পড়ুন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...