জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
রাত্রে পানাহারের পর পাত্রগুলো আল্লাহর নামে ঢেকে রাখা এবং খালি পাত্র উল্টিয়ে রাখা বা ঢেকে করে রাখা সুন্নাত।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ أَخْبَرَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ أَنَّه“ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانَ جُنْحُ اللَّيْلِ أَوْ أَمْسَيْتُمْ فَكُفُّوا صِبْيَانَكُمْ فَإِنَّ الشَّيَاطِينَ تَنْتَشِرُ حِينَئِذٍ فَإِذَا ذَهَبَ سَاعَةٌ مِنَ اللَّيْلِ فَحُلُّوهُمْ فَأَغْلِقُوا الأَبْوَابَ وَاذْكُرُوا اسْمَ اللهِ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لاَ يَفْتَحُ بَابًا مُغْلَقًا وَأَوْكُوا قِرَبَكُمْ وَاذْكُرُوا اسْمَ اللهِ وَخَمِّرُوا آنِيَتَكُمْ وَاذْكُرُوا اسْمَ اللهِ وَلَوْ أَنْ تَعْرُضُوا عَلَيْهَا شَيْئًا وَأَطْفِئُوا مَصَابِيحَكُمْ.
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন সন্ধ্যা হয়, তখন তোমাদের সন্তানদের ঘরে আটকে রাখ। কেননা এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের কিছু অংশ অতিক্রম করলে তখন তাদের ছেড়ে দিতে পার। আর ঘরের দরজা বন্ধ করবে। কেননা, শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। আর তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের মশকের মুখ বন্ধ করবে এবং আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের পাত্রগুলোকে ঢেকে রাখবে, কমপক্ষে পাত্রগুলোর উপর কোন বস্ত্ত আড়াআড়ি করে রেখেও। আর শয্যা গ্রহণের সময়) তোমরা তোমাদের প্রদীপগুগুলো নিভিয়ে দেবে।
[বুখারী ৫৬২৩,৩২৮০] আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০৮)
مُوسٰى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَطْفِئُوا الْمَصَابِيحَ إِذَا رَقَدْتُمْ وَغَلِّقُوا الأَبْوَابَ وَأَوْكُوا الأَسْقِيَةَ وَخَمِّرُوا الطَّعَامَ وَالشَّرَابَ وَأَحْسِبُه“ قَالَ وَلَوْ بِعُودٍ تَعْرُضُه“ عَلَيْهِ.
জাবির হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যখন ঘুমাবে তখন বাতি নিভিয়ে দেবে, দরজাগুলো বন্ধ করবে, মশ্কের মুখ বন্ধ করবে, খাদ্য ও পানীয় দ্রব্যাদি ঢেকে রাখবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমার মনে হয় তিনি আরো বলেছেন, কমপক্ষে একটি কাঠ আড়াআড়ি করে পাত্রের উপর রেখে দেবে। [বুখারী ৫৬২৪,৩২৮০] আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০৯)
রাতের সময় রাসুল সাঃ পাত্র ঢেকে রাখার কথা পোকা মাকর ইত্যাদি থেকে পাত্রের হেফাজত জন্যই বলেছিলেন।
★★সুতরাং কেহ যদি বলে যে, তখনকার যুগে এরকম বাসন রাখার স্ট্যান্ড ছিলো না, এখন এরকম স্ট্যান্ডে কাত করে রাখলে পোকামাকড় উঠার সম্ভাবনা নেই,তাই এরকম রাখলে ক্ষতি নেই, হাদিসের খেলাফ হবে না।
(০২)
আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বেশির ভাগ সময় মুচকি হাসতেন। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারেস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) সাধারণত মুচকি হাসি দিতেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৬৪২)।
অর্থাৎ রাসুল (সা.) বেশির ভাগ সময় মুচকি হাসতেন। তিনি সাহাবায়ে কেরামের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় কথা বলতেন।
হজরত জারির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যখন ইসলাম গ্রহণ করেছি তখন থেকে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাকে তাঁর কাছে প্রবেশ করতে বাধা দেননি এবং যখনই তিনি আমার চেহারার দিকে তাকাতেন তখন তিনি মুচকি হাসতেন। (বুখারি, হাদিস : ৩০৩৫)
রাসুল সাঃ আমাদের শিখিয়েছেন, একজন মুসলিম অপর ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করবে। শুধু তাই নয়, এটিকে তিনি ছদাকা হিসেবে গণ্য করেছেন।
(‘ছদাকা’ মানে দান, যার বিনিময়ে আল্লাহ আখেরাতে পুরস্কৃত করবেন।) একটি হাদীসে নবীজী বলেছেন-
كُلُّ مَعْرُوفٍ صَدَقَةٌ، وَإِنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ أَنْ تَلْقَى أَخَاكَ بِوَجْهٍ طَلْقٍ.
প্রতিটি ভালো কাজ ছদাকা। আর গুরুত্বপূর্ণ একটি ভালো কাজ হল, অপর ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৭০
আরেক হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
تَبَسُّمُكَ فِي وَجْهِ أَخِيكَ لَكَ صَدَقَةٌ.
তোমার ভায়ের (সাক্ষাতে) মুচকি হাসাও একটি ছদাকা। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৫৬
কারো সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করলে কী হয়? সে খুশি হয়। আর কারো সাথে এমনভাবে সাক্ষাৎ করা, যা তাকে অনন্দিত করে- এ কাজটি আল্লাহ অনেক পছন্দ করেন। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ لَقِيَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ بِمَا يُحِبُّ لِيُسِرَّهُ سَرَّهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَة.
যে ব্যক্তি নিজের কোনো মুসলিম ভাইকে খুশি করার জন্য এমনভাবে সাক্ষাৎ করে, যেমনটি সে পছন্দ করে (এর বিনিময়ে) কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে খুশি করবেন। -আলমুজামুস সগীর, তবারানী, হাদীস ১১৭৮; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ১৩৭২১
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত ""নবীজির( স.) এর চারপাশে ছিলেন মুত্তাক্বী সাহাবাগণ (র.)। কাফের বা যারা মুনাফিক্ব বা মুসলিমদের মধ্যে যারা কাবিরা গুনাহে লিপ্ত থাকতেন, তাদের সাথেও নবীজি (স.) প্রায় সময় এরকম হাসিমুখেই আচরণ করতেন।
,
হ্যাঁ যুদ্ধের ময়দানে,বা কঠিন পরিস্থিতিতে কাফেরদের সাথে তিনি কঠিন চেহারাই প্রদর্শন করতেন।