আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
194 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (7 points)
বর্তমানে ইসলামি ব্যাংক এর একটা শাখা হয়েছে ফারাইস্ট ইসলামি লাইফ ইন্সুইরেন্স,,  এদের দাবী এদের ব্যাংক লেনদেন এর ব্যাপার টা নাকি জায়েজ,, এরা ব্যাবসা করে এরকম কিছু বলেছে,, আমার বাবা কয়েক বছর আগে কিছু টাকা রেখেছিলো তারা লাভ সহ ফেরত দিয়েছে এই টাকা গ্রহন করার হুকুম কি,,, আর কারো পরিবার এ যদি এমন হয় যে ব্যবসা হালাল + হালাল কৃষি কাজ এর মাধ্যমে টাকা উপার্জন করে কিন্তু ইসলামি ব্যাংক এ একসময় একটা  ডিপিএস ছিলো আর এদের ফারাইস্ট শাখায় তবে এখন আর নেই,,  তবে দ্বীনের বুঝ কম থাকার কারণে বাবা সেই টাকা এখনো দান করে দেইনি এক্ষেত্রে সেই টাকা থেকে ব্যয় করার হুকুম কেমন হতে পারে,, সেই টাকা থেকে কি দ্বীনি ইলম ও বাকি সব খাতে ব্যয় করা যাবে না কারণ এই পরিবারের সব ইনকাম হালাল,,,, ইনকামিং সোর্স এ কোন হারাম কিছু নেই,, আর একটা সমস্যা হচ্ছে একটা ব্যাংক লোন এর জন্য আমার বাবাকে লভ্যাংশ দিতে হয় বছর শেষে,, আমরা বললেও বুঝে না,, এখন কি করনীয় জানাবেন শায়েখ দয়া করে,,

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/8101/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহ তা'আলা ব্যবসা ও সুদ সম্পর্কে বলেন,

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لاَ يَقُومُونَ إِلاَّ كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُواْ إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا وَأَحَلَّ اللّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا فَمَن جَاءهُ مَوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّهِ فَانتَهَىَ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللّهِ وَمَنْ عَادَ فَأُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।(সূরা বাকারা-২৭৫)

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী সুদ স্পষ্ট হারাম।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ   

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨]

হে ঈমানদারগণ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে,তা পরিত্যাগ কর,যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮]

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَا أَضْعَافًا مُّضَاعَفَةً ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٣:١٣٠]

হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো। [সুরা আলে ইমরান-১৩০]

হাদিস শরিফে এসেছে-

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.

আল্লাহর রাসূল সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে সে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেবে।যদি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব না হয়,তাহলে গরীবদেরকে সদকাহ করে দেবে।(মা'রিফুস-সুনান১/৩৪)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

আমাদের জানা মতে ইসলামী ব্যাংক সহ বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকই শরীয়তের রুলস পূর্ণ ভাবে  মানেনা। বিস্তারিত জানুনঃ  https://ifatwa.info/4260/

সুতরাং প্রয়োজনের ভিত্তিতে ইসলামী ব্যাংকে টাকা রাখা জায়েজ হলেও মুনাফা গ্রহন করা যাবেনা।

তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ডিপিএস আকারে টাকা রাখা যাবেনা। কারণ, প্রচলিত ডিপিএস,স্কীম ডিপিএস, ফিক্সট ডিপোজিট হারাম এবং পরিত্যাজ্য।

তবে যদি কোনো ব্যাংক শরীয়তকে পুরোপুরি মেনে এই সমস্ত প্রকল্প, স্কীমগুলো প্রনয়ন করে ও যত্নসহকারে তা পালন করতে সচেষ্ট থাকে তবে তা জায়েয হবে। যেমন পাকিস্তানের মিজান ব্যাংক সম্পর্কে শুনা যায়, যে তারা সম্পূর্ণভাবে শরীয়তকে মেনে চলে। যত্নসহকারে পালনের অর্থ হচ্ছে, ডিপিএস এমন হতে হবে যে, যে মেয়াদের জন্য ডিপি এস করা হবে, মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আসল ব্যতীত মুনাফা কত? তা নির্দিষ্ট  হতে পারবে না। যদি মুনাফা নির্দিষ্ট হয়ে থাকে,তাহলে সেটা সুদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে হারাম হয়ে যাবে।

যদি কেউ টাকা জমানোর উদ্দেশ্যে তথাকথিত ইসলামী ব্যাংকগুলোতে ৫-১০ বছর মেয়াদী ডিপিএস করে নেয়,তাহলে সে শুধুমাত্র আসল নিতে পারবে।মুনাফা নিতে পারবে না। কেননা মুনাফা সুদ। আর সুদ হারাম।

সাথে সাথে আপনার বাবা লোন বাবাদ যেই লভ্যাংশ প্রতি বছর ব্যাংকে দিয়ে থাকেন তা সুদের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার কারণে হারাম ও পরিত্যায্য। যতদ্রুত সম্ভব উক্ত টাকা পরিশোধ করে সুদের গুনাহ থেকে বাঁচার সর্বাত্নক চেষ্টা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...