ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
১. সলাতুল হাজত সম্পর্কে এক হাদিসে এভাবে এসেছে–
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ ﷺ مَنْ كَانَتْ لَهُ إِلَى اللَّهِ حَاجَةٌ أَوْ إِلَى أَحَدٍ مِنْ بَنِي
آدَمَ فَلْيَتَوَضَّأْ وَلْيُحْسِنِ الْوُضُوءَ ثُمَّ لْيُصَلِّ رَكْعَتَيْنِ
ثُمَّ لْيُثْنِ عَلَى اللَّهِ وَلْيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ ﷺ ثُمَّ لْيَقُلْ لاَ
إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ
الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ
رَحْمَتِكَ وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ وَالسَّلاَمَةَ
مِنْ كُلِّ إِثْمٍ لاَ تَدَعْ لِي ذَنْبًا إِلاَّ غَفَرْتَهُ وَلاَ هَمًّا إِلاَّ
فَرَّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلاَّ قَضَيْتَهَا يَا أَرْحَمَ
الرَّاحِمِينَ
অর্থাৎ, আবদুল্লাহ্ ইবনু আবী আওফা থেকে বর্ণিত যে, রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন যে, আল্লাহর কাছে বা কোন আদম-সন্তানের কাছে যদি কারো কোন প্রয়োজন
হয় তবে সে যেন অজু করে এবং খুব সুন্দরভাবে যেন তা করে। পরে যেন দু’রাকআত নামাজ আদায়
করে, এরপর যেন আল্লাহর
হামদ করে ও রাসূল ﷺ-এর
উপর দরূদ সালামের পর এই দোয়াটি পড়ে:
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ
اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ وَالْغَنِيمَةَ مِنْ
كُلِّ بِرٍّ وَالسَّلاَمَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ لاَ تَدَعْ لِي ذَنْبًا إِلاَّ
غَفَرْتَهُ وَلاَ هَمًّا إِلاَّ فَرَّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلاَّ
قَضَيْتَهَا يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
অর্থ- আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি অতি
সহিষ্ণু ও দয়ালু, সকল দোষ-ক্রটি থেকে
পবিত্র তিনি, মহান আরশের প্রভু।
সকল প্রশংসা আল্লাহর, তিনি সারা জাহানের
রব। আপনার কাছেই আমরা যাঞ্ছা করি, আপনার রহমত আকর্ষণকারী সকল পূণ্যকর্মের ওয়াসীলায়, আপনার ক্ষমা ও মাগফিরাত আকর্ষণকারী সকল ক্রিয়াকাণ্ডের
বরকত, সকল নেক কাজ সাফল্য
লাভের এবং সব ধরনের গুনাহ থেকে নিরাপত্তা লাভের। আমার কোন গুনাহ যেন মাফ ছাড়া না থাকে।
কোন সমস্যা যেন সমাধান ছাড়া না যায় আর আমার এমন প্রয়োজন যাতে রয়েছে আপনার সন্তুষ্টি
তা যেন অপূরণ না থাকে, হে আর রাহমানুর রাহিমীন; হে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। (ইবনু মাজাহ ১৩৮৪, তিরমিজী ৪৭৯)
দোয়ার ক্ষেত্রে হাদিস শরিফে বর্ণিত উপরোক্ত
দোয়াটি অন্যান্য দোয়ার সাথে নামাজের শেষে বিশেষভাবে পড়া যেতে পারে। তবে পড়তেই হবে–এমন
নয়। আপনি আপনার মত করে দোয়া করলেও কোনো অসুবিধা নেই।
২. শায়খ ইবনু ঊছাইমীন রহ. বলেন, ‘গর্ভবতীর সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে কষ্টের সময়
এসমস্ত আয়াত পড়ার মাধ্যমে আল্লাহ্ অনেকের উপকার দান করেছেন।
একজন মহিলা এআয়াতগুলো পাঠ করে সন্তান প্রসবীনীর উপর ফুঁক দিবে। অথবা যে কোন লোক
তা পাঠ করে পানিতে ফুঁক দিবে। তারপর সে পানি গর্ভবতীকে পান করাবে এবং তা দিয়ে তার
পেট মালিশ করবে।’
এই আয়াতগুলো পাঠ করে মহিলার উপর ফুঁক দিবে:
১) সূরা রা‘দের ৮নং আয়াত
اللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَحْمِلُ كُلُّ أُنثَىٰ وَمَا تَغِيضُ
الْأَرْحَامُ وَمَا تَزْدَادُ ۖ وَكُلُّ شَيْءٍ عِندَهُ بِمِقْدَارٍ
আল্লাহ জানেন প্রত্যেক নারী যা গর্ভধারণ করে
এবং গর্ভাশয়ে যা সঙ্কুচিত ও বর্ধিত হয়। এবং তাঁর কাছে প্রত্যেক বস্তুরই একটা পরিমাণ
রয়েছে।
২) সূরা ফাতির ১১ নং আয়াত
وَاللَّهُ خَلَقَكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ
جَعَلَكُمْ أَزْوَاجًا ۚ وَمَا تَحْمِلُ مِنْ أُنثَىٰ وَلَا تَضَعُ إِلَّا
بِعِلْمِهِ ۚ وَمَا يُعَمَّرُ مِن مُّعَمَّرٍ وَلَا يُنقَصُ مِنْ عُمُرِهِ إِلَّا
فِي كِتَابٍ ۚ إِنَّ ذَٰلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ
আল্লাহ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে, অতঃপর বীর্য থেকে, তারপর করেছেন তোমাদেরকে যুগল। কোন নারী গর্ভধারণ
করে না এবং সন্তান প্রসব করে না; কিন্তু তাঁর জ্ঞাতসারে। কোন বয়স্ক ব্যক্তি বয়স পায় না। এবং তার বয়স হ্রাস পায়
না; কিন্তু তা লিখিত আছে কিতাবে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর
পক্ষে সহজ।
৩) সূরা নাহল ৮৭নং আয়াত এবং
وَأَلْقَوْا إِلَى اللَّهِ يَوْمَئِذٍ السَّلَمَ ۖ وَضَلَّ
عَنْهُم مَّا كَانُوا يَفْتَرُونَ
সেদিন তারা আল্লাহর সামনে আত্নসমর্পন করবে
এবং তারা যে মিথ্যা অপবাদ দিত তা বিস্মৃত হবে।
৪) সূরা যিলযাল।
إِذَا
زُلْزِلَتِ الْأَرْضُ زِلْزَالَهَا. وَأَخْرَجَتِ الْأَرْضُ أَثْقَالَهَا. وَقَالَ الْإِنسَانُ مَا
لَهَا. يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا. بِأَنَّ رَبَّكَ أَوْحَىٰ
لَهَا. يَوْمَئِذٍ يَصْدُرُ النَّاسُ أَشْتَاتًا لِّيُرَوْا أَعْمَالَهُمْ. فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ. وَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ
যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে, যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে। এবং মানুষ বলবে, এর কি হল ? সেদিন সে তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে, কারণ, আপনার পালনকর্তা তাকে আদেশ করবেন। সেদিন মানুষ বিভিন্ন দলে প্রকাশ পাবে, যাতে তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম দেখানো হয়। অতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে
পাবে এবং কেউ অণু পরিমাণ
অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলার ৯৯টি
গুণবাচক নাম রয়েছে; যে ব্যক্তি এ গুণবাচক
নামগুলোর জিকির করবে; সে জান্নাতে যাবে।’
আল্লাহ তাআলার এ গুণবাচক নামগুলোর দৈনন্দিন জীবনে পালনীয় আলাদা আলাদা আমল এবং অনেক
ফজিলত ও উপকারিতা রয়েছে।
আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নাম সমূহের মধ্যে (اَلْمُبْدِئُ)
‘আল-মুবদিয়ু’ একটি। এ পবিত্র নামের আমলের মাধ্যমে গর্ভের সন্তানের হেফাজত এবং সহজে
নিরাপদে নারীদের সন্তান প্রসব হয়। (সংগৃহীত)
আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/44791/?show=44791#q44791