আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,141 views
in পবিত্রতা (Purity) by (10 points)
শারীরিক সম্পর্কের পর স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই গোসল ফরজ হয়। একজন আগে করল, আরেকজন ৩-৪ ঘন্টা পরে করল। অর্থ্যাৎ এই মধ্যবর্তী সময়ে একজনের শরীর অপবিত্র থাকে। এই অপবিত্র শরীর নিয়ে যদি পবিত্র কাউকে স্পর্শ করে তাহলে তার শরীর ও অপবিত্র হয়ে যাবে? অপবিত্র শরীর নিয়ে রান্না করা খাবার কি হালাল হবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ لَقِيَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي طَرِيقٍ مِنْ طُرُقِ الْمَدِينَةِ وَهُوَ جُنُبٌ فَانْسَلَّ فَذَهَبَ فَاغْتَسَلَ فَتَفَقَّدَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا جَاءَهُ قَالَ ” أَيْنَ كُنْتَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ ” . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَقِيتَنِي وَأَنَا جُنُبٌ فَكَرِهْتُ أَنْ أُجَالِسَكَ حَتَّى أَغْتَسِلَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” سُبْحَانَ اللَّهِ إِنَّ الْمُؤْمِنَ لاَ يَنْجُسُ ”
তিনি একবার মদিনার কোন এক রাস্তায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সাক্ষাৎ পেলেন। তিনি (আবু হুরায়রা রা.) তখন (জানবাত) অপবিত্র অবস্থায় ছিলেন। এই কারণে তিনি আস্তে করে পাশ কেটে চলে গেলেন এবং গোসল করলেন।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তালাশ করলেন। পরে তিনি এলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন: আবু হুরায়রা। তুমি কোথায় ছিলে?তিনি বললেন: হে আল্লাহর রাসূল, আপনার সঙ্গে যখন আমার সাক্ষাৎ হয় তখন আমি অপবিত্র অবস্থায় ছিলাম। তাই আমি গোসল না করে আপনার সাথে উঠবস করাকে অপছন্দ করেছি।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “সুবহানাল্লাহ! মুমিন তো অপবিত্র হয় না।” (সহিহ বুখারী ও মুসলিম। সহীহ মুসলিম, হাদিস নম্বর/৭১০ অধ্যায়ঃ ৩/ হায়েজ)

হাদিসের শব্দ “মুমিন তো অপবিত্র হয় না” এর অর্থ হল, বাহ্যিকভাবে শরীরে নাপাকি লাগলে শরীর নাপাক হয় কিন্তু তার মধ্যে ঈমান থাকায় সে অভ্যন্তরিণভাবে সে পবিত্র থাকে।

ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন:
فيه جواز تأخير الاغتسال عن أول وجوبه
“এ হাদিসে গোসল ফরজ হওয়ার পর তা বিলম্ব করার বৈধতা পাওয়া যায়।” (সহিহ বুখারির ব্যাখ্যা গ্রন্থ ফাতহুল বারী)

গাযীফ ইবনুল হারিস রা. হতে বর্ণিত
عن غضيف بن الحارث، قال: قلت لعائشة: أكان النبي صلى الله عليه وسلم يغتسل قبل أن ينام؟ وينام قبل أن يغتسل؟ قالت: نعم. قلت: الحمد لله الذي جعل في الأمر سعة
তিনি বলেন: আমি আয়েশা রা. কে প্রশ্ন করলাম, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি ঘুমের পূর্বে গোসল করতেন অথবা গোসলের পূর্বে ঘুমাতেন?তিনি বললেন: হ্যাঁ।আমি বললাম: আল হামদু লিল্লাহ-সকল প্রশংসা আল্লাহর যিনি বিষয়টিতে ছাড় রেখেছেন। (সহিহ আবু দাউদ, হা/২২৬)

এ ছাড়াও সহিহ সনদে প্রমাণিত হয়েছে যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রী সহবাসের পর শরীর নাপাক অবস্থায় রমাযান মাসে ভোর রাতে সেহরি খেয়েছেন। তারপর ফজরের আজান হলে গোসল করে মসজিদে সালাত আদায়ের জন্য গেছেন।

তবে জুনবী ব্যক্তির জন্য যতদ্রুত সম্ভব গোসল করে নেয়া মুস্তাহাব।যেমন হাদীস শরীফে এসেছে,
" ثَلَاثَةٌ لَا تَقْرَبُهُمْ الْمَلَائِكَةُ جِيفَةُ الْكَافِرِ وَالْمُتَضَمِّخُ بِالْخَلُوقِ وَالْجُنُبُ إِلا أَنْ يَتَوَضَّأَ "
তিন ব্যক্তির নিকট ফিরিস্তা আসেন না।কাফিরের লাশ।জা'ফরান ব্যবহার কারীর নিকট।জুনুবী ব্যক্তির নিকট।(সুনানু আবি-দাউদ-৪১৮০)

হ্যা সালাতের সময় হলে গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করার পর সালাত আদায় করা আবশ্যক। কেননা সালাতের জন্য পাক-পবিত্রতা অর্জন করা পূর্বশর্ত।

স্ত্রী সহবাসের পর গোসল করতে বিলম্ব করলে ওজু করা মুস্তাহাব:
স্ত্রী সহবাসের পর কেউ ইচ্ছে করলে তৎক্ষণাৎ গোসল করে নিতে পারে আবার ইচ্ছে করলে বিলম্বও করতে পারে। বিলম্ব করতে চাইলে অজু করে নেওয়া উত্তম।

হাদিসে বর্ণিত রয়েছে
في الصحيحين أن عمر استفتى رسول الله صلى الله عليه وسلم: أينام أحدنا وهو جنب؟ قال: “نعم، إذا توضأ”.
ওমর রা. রাসূল-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট প্রশ্ন করলেন, শরীর নাপাক অবস্থায় কি কেউ ঘুমাতে পারে?তিনি বললেন: “হ্যাঁ, যদি অজু করে।” (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)

ইবনে আব্দুল বার বলেন,
قال ابن عبد البر: ذهب الجمهور إلى أنه ـ أي: الأمر بالوضوء للجنب الذي يريدالنوم – للاستحباب
“ জুমহুর তথা অধিকাংশ আলেম এই মত ব্যক্ত করেছেন যে, যে জুনুবি (নাপাক) ব্যক্তি ঘুমাতে চায় তার জন্য ওজু করার নির্দেশ টি মুস্তাহাব পর্যায়ের।”


সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
জুনুবী কোনো মানুষ অন্য কাউকে স্পর্শ করলে ঐ ব্যক্তি নাপাক হবে না।জুনুবী ব্যক্তির রান্না করা বা স্পর্শ করা কোনো জিনিষ নাপাক হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...