জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো bKash বিকাশ যদি সুদভিত্তিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত না থাকে, তাহলে এর আই টি IT তে চাকরি করা যায়েজ আছে।
عَنْ عَبْدِ اللّٰهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ»
‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অন্যান্য ফরয কাজ আদায়ের সাথে হালাল রুযী-রোজগারের ব্যবস্থা গ্রহণ করাও একটি ফরয।
(শু‘আবুল ঈমান ৮৩৬৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১১৬৯৫। মেশকাত ২৭৮১)
,
বিকাশ সংক্রান্ত বিস্তারিতঃ
বিকাশের মাধ্যমে লেন-দেনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, এক স্থান থেকে অন্যস্থানে টাকা প্রেরণ ও গ্রহণ।
মোবাইল ব্যাংকিং-এর পরিভাষায় যাকে বলা হয় সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউট। অর্থাৎ এটিকে ডাক বিভাগের মানিঅর্ডারের সহজ বিকল্প বলা যায়। সেবাটি পেতে হলে প্রথমে কোম্পানির(প্রতিনিধি)এজেন্টদের কাছে গিয়ে নির্ধারিত ফরম পূরণের মাধ্যমে একটি একাউন্ট খোলার প্রয়োজন হয়।(যদিও টাকা প্রেরণ ও গ্রহণের জন্য নিজস্ব একাউন্ট না থাকলেও চলে। সেক্ষেত্রে এজেন্টদের মাধ্যমে তা করা যায়।) আপনার ভাই যদি এজেন্ট হন এবং ফরম পূরণের কাজ করে থাকেন তাহলে মৌলিকভাবে এতে শরীয়া পরিপন্থী কোনো কিছু এখন পর্যন্ত নেই।
একজন মোবাইল একাউন্টধারী তার হিসাব থেকে অন্য একাউন্টধারীর হিসাবে নির্ধারিত পরিমাণে টাকা পাঠাতে পারে। এটিকে বলা হচ্ছে সেন্ড মানি। নির্ধারিত ফ্ল্যাট রেটে এই সুবিধা দেওয়া হয়। এতেও শরয়ী সমস্যা নেই।
ক্যাশ আউট। মোবাইল ব্যাংকিং-এর বহুল ব্যবহৃত সুবিধা এটি। নিজ একাউন্ট থেকে অথবা এজেন্টের কাছে প্রেরিত টাকা উত্তোলনই মোবাইল ব্যাংকিং-এর (বিকাশ,এমক্যাশ ইত্যাদি) মাধ্যমে সবচাইতে বেশি হয়ে থাকে।ফিকহে ইসলামীর দৃষ্টিতে এটি ‘আলইজারাহ’-এর অন্তর্ভুক্ত।
الإجارة هي بيع منفعة معلومة بأجر معلوم ‘ইজারা হচ্ছে নির্ধারিত বিনিময়ে নির্ধারিত সেবা বিক্রয় করার নাম।(আরো দেখুন : আলআওসাত ১১/১৩১; আলমুগনী ৮/২২; আলফুরূক ৪/৩৪)
এক্ষেত্রে টাকা জমা/উত্তোলনকারী হচ্ছে সেবাগ্রহীতা বা ‘মুসতাজির’। আর কোম্পানি হচ্ছে সেবাদাতা বা ‘আজীর’।
এজেন্ট হচ্ছে মূল সেবাদাতা বা ‘আজীরে’র ওয়াকিল বা প্রতিনিধি। ওয়াকালাহ বা Agency Contract এর ক্ষেত্রে Agent বা প্রতিনিধি পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তার Agency এর দায়িত্ব পালন করতে পারে। আর পারিশ্রমিকের ক্ষেত্রে তা নির্দিষ্ট হওয়া জরুরী। তা নির্দিষ্ট অংক বা কোনো অংকের নির্দিষ্ট হার – উভয়টিই হতে পারে। যেমন ১০০ টাকায় ১০ টাকা, বা ১০০ টাকার ১০% – উভয়টিই বৈধ।
সুতরাং এখানে আপনার ভাই মূল সেবাদাতা-কোম্পানির প্রতিনিধি( Agent )হিসাবে নির্দিষ্ট হারে পারিশ্রমিক বা কমিশন নিতে পারে। এটা তার জন্য বৈধ হবে।
তবে এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য, সার্বিক বিবেচনায় বিকাশের মাধ্যমে টাকা টাকা প্রেরণ ও গ্রহণে যদিও কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু তা যেন সুদভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের সুদভিত্তিক কার্যক্রমে সহযোগিতার পর্যায়ে না হয়, তা লক্ষ্য রাখা উচিৎ।অতএব সেবাদাতা-কোম্পানি (যেমন,এখানে bkash) যদি সুদভিত্তিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে তাদের কাছে বেশি সময় টাকা গচ্ছিত রাখা উচিৎ নয়। কারণ এতে তারা গ্রাহকের টাকা কিছু সময়ের জন্য হলেও সুদভিত্তিক খাতে বিনিয়োগ করার সুযোগ পেয়ে যাবে।
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে bKash বিকাশ যদি সুদভিত্তিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে এর আই টি IT তে চাকরি করা যায়েজ নেই।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}