بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
সর্বদিক বিবেচনায় হস্তমৈথুন (Masturbation) একটি মারাত্মক বদঅভ্যাস। চিকিৎসাবিদগণ বলে থাকেন, এতে বহুমুখী ক্ষতি ও অনিষ্টের আশঙ্কা রয়েছে। এতে এমন ক্ষতি রয়েছে যা স্বাস্থ্যের পক্ষে বড় বিপজ্জনক; এ কাজ যৌনশক্তিকে দুর্বল করে ফেলে, চিন্তাশক্তি ও দূরদর্শিতার ক্ষতি সাধন করে এবং কখনো বা এর অভ্যাসী ব্যক্তিকে প্রকৃত দাম্পত্যসুখ থেকে বঞ্চিত করে। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি সীমালংঘন বিধায় কবিরা গুনাহ। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,
قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌبِمَايَصْنَعُونَ
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। (সূরা আন-নূর ৩০)
সুতরাং এ জঘন্য অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে হলে–
প্রথমত: প্রথমে এ কবিরা গুনাহ থেকে তাওবা করুন। কারণ, যদি সীমালংঘনকারী সত্যিকার অর্থে দৃঢ়চিত্তে তাওবা করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِلَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُوْلَئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًارَّحِيمًا
তবে যে তাওবা করে ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে। পরিণামে আল্লাহ তাদের পাপগুলোকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আল ফুরকান ৭০)
দ্বিতীয়ত: যদি আপনি আসলেই নিষ্কলুষভাবে আল্লাহর কাছে তাওবা করতে চান তাহলে এই পাপে পুনরায় পতিত হওয়ার সকল উপায় উপকরণ কর্তন করুন। পর্নফিল্ম এবং নোংরা ছবি দেখাসহ ইত্যকার বিষয় থেকে বিরত থাকুন। দেখুন, আল্লাহ তাআলা এ জাতীয় সীমালংঘনকারীর তাওবার আলামত হিসাবে বলেছেন,
وَمَن تَابَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَإِنَّهُ يَتُوبُ إِلَى اللَّهِ مَتَابًا
আর যে (ব্যভিচার থেকে) তাওবা করে এবং সৎকাজ করে তবে নিশ্চয় সে পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করে। (সূরা আল ফুরকান ৭১)
তৃতীয়ত: আল্লাহওয়ালাদের সোহবত গ্রহন করুন। তাদের মজলিসে আসা যাওয়া করুন। এতে নফস নিয়ন্ত্রণ করা এবং তাওবার উপর অটল থাকা আপনার জন্য সহজ হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)
চতুর্থত: দৃষ্টি সংযত রাখুন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
غُضُّوْا اَبْصَارَكمُ وَاحْفَظُوْا فُرُوْجَكُمْ
তোমরা দৃষ্টি অবনত রাখো এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত কর। (আলজাওয়াবুলকাফী, পৃষ্ঠা : ২০৪)
হাফেজ ইবনুলকাইয়িম রহ. লিখেছেন, দৃষ্টি জৈবিকচাহিদার পিয়ন ও রাহবার হয়ে থাকে। দৃষ্টির সংরক্ষণ মূলতঃ লজ্জাস্থান ও যৌনচাহিদা পূরণের অবাধ সুযোগের সংরক্ষণ হয়ে থাকে। যে দৃষ্টিকে অবাধে বিচরণ করতে দিয়েছে সে নিজেকে ধ্বংসের মাঝে ফেলে দিয়েছে। মানুষ যেসব আপদে নিমজ্জিত হয় এর মূলভিত্তি হল দৃষ্টি। (আলজাওয়াবুলকাফী, পৃষ্ঠা-২০৪)
পঞ্চমত: বিয়ে করার সুযোগ থাকলে বিয়ে করে নিন। অন্যথায় মাঝে মাঝে নফল রোজা রাখুন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ ، مَنِ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ
হে যুবক সম্প্রদায় ! তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহ করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিবাহ করে। কেননা, বিবাহ তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং যৌনতাকে সংযমী করে এবং যাদের বিবাহ করার সামর্থ্য নাই, সে যেন রোযা পালন করে। কেননা, রোযা তার যৌনতাকে দমন করে। (বুখারী,হাদীস নং-৪৯৯৬)
ষষ্ঠত: প্রিয় দ্বীনী ভাই, যদি আপনি উপরোক্ত পাঁচটি মৌলিক পন্থা অবলম্বন করতে পারেন তাহলে দেখবেন, ধীরে ধীরে আপনি এ নেশা থেকে মুক্তি পাবেন-ইনশাআল্লাহ। তবে পাশাপাশি আরো কিছু সাময়িক ব্যবস্থাপত্র আপনাকে বলে দিচ্ছি। আশা করি, এগুলোর প্রতিও যত্নবান হবেন।
১. কোন কোন সময় হস্তমৈথুন বেশি করেন, সেই সময়গুলো চিহ্নিত করুন। সে সময়গুলোর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন।
২. বাথরুম বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি উত্তেজিত থাকেন, বা হঠাৎ কোন সময়ে যদি এমন