আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
374 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (24 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
হুজুর,

আমি ভিষনভাবে তালাকের ওয়াসওয়াসা গ্রস্ত। যতটা বেশি একজন মানুষ হতে পারে। সারাটাদিন তালাক দিলাম,তালাক দিলাম, মাথায় ঘুরতে থাকে। এই যে এখন, "তালাক দিলাম "লিখলাম মনে হচ্ছে আমি আমার ওয়াইফকে তালাক দিয়ে দিলাম। পানি খেতে খেতে মনে তালাক শব্দ চলে আসছে। মনে হচ্ছে আমি উচ্চারন করলাম।তখন আবার পানি খাচ্ছি ও চেক করছি যে পানি খেতে খেতে উচ্চারন করা যায় কিনা! অনেক চেষ্টা করেও এসব চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি।

★অনেকদিন আগে ওয়াসরুমে বসে তালাকের মাসালা পড়ছিলাম। পড়তে পড়তে সম্ভবত আমি মুখে উচ্চারণ করে অথবা মনে মনে বলে ফেলি যে,যা ১ তালাক দিলাম।তখন আমার ওয়াইফ ঘরে শুয়ে ছিল। তার সাথে কোন ঝগড়া বিবাদ আমার ওই সময় ছিল না। আর আমার তার তালাক দেবার কোন ইচ্ছা ও ছিল না।
আমি পরে মনে করতে পারছি না এটা আমি মনে মনে না উচ্চারণ করে বলছিলাম। ১ বার বলছিলাম না ২ বার বলছিলাম। ১ বার মনে হচ্ছে  উচ্চারন করছি তো আরেকবার মনে হচ্ছে মনে মনে বলছি। মনে হচ্ছে উচ্চারণ করার মত পাগল তো আমি ছিলাম না। এসব ভাবতে ভাবতে আমি পাগলপ্রায়। আমি শান্তি পাচ্ছি না।  এই অবস্থায় আমার এখন কি করনীয়?

★★ মুখ খুললে মনে হচ্ছে তালাক দিলাম বেরিয়ে যাবে। খুব কষ্ট হচ্ছে। মনে মনে কথা বললেও মনে হচ্ছে বোধহয় উচ্চারণ করলাম। যখন তালাক শব্দটি মনে আসছে তখন মুখ দিয়ে বিভিন্ন অস্পষ্ট সাউন্ড করছি। তাতেও মনে হচ্ছে উচ্চারণ করে ফেললাম মনে হয়।  স্বাভাবিকভাবে তালাক দেবার কোন ইচ্ছা আমার নাই। ওয়াইফ এর সাথে কথা বলতে গেলে ও মনের ভিতর হচ্ছে "তালাক দিলাম। কথা বলা শেষে আমি আবার সন্দিহান হয়ে যাচ্ছি। মনে হচ্ছে আমি মনে হয় উচ্চারণ কারলাম। মনে যেহেতু সবসময় তালাক দিলাম, তালাক দিলাম  চলতে থাকে তাই কোন সময় যদি মুখ থেকে উচ্চারণ হয়ে যায় তাহলে কি আমার ওয়াইফ তালাক হয়ে যাবে?

★★★ একদিন ওয়াইফকে "তোমাকে প্রয়োজন নেয়" বলছিলাম। যতদুর মনে পড়ে তালাক  দেবার উদ্দেশ্যে বলিনি। কিন্তুু শুধু মনে হয় তখন আমার নিয়ত কি ছিল? এটা নিয়ে সারাখন ভাবতে থাকি। আর মনে মনে তোমাকে প্রয়োজন নেই বলি আর ভাবি তখন আমার নিয়ত কি ছিল। এই চিন্তা থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারছি না। এটা থেকে কিভাবে রেহায় পাবো?

&& খুব ভয়ে আছি হুজুর। আশা করি আমার ভয় কাটানোর কোন উপদেশ দিবেন। &&
by (24 points)
উচ্চারন হয়ে গেলে কি কোন সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
وَعَنْ أَبِي اللَّيْثِ لَا يَجُوزُ طَلَاقُ الْمُوَسْوِسِ  يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ عَنْ الْحَاكِمِ هُوَ الْمُصَابُ فِي عَقْلِهِ إذَا تَكَلَّمَ تَكَلَّمَ بِغَيْرِ نِظَامٍ
ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে,এবং ঐ ব্যক্তি বিবেকবুদ্ধিতে সমস্যা চলে এসেছে, তাদের তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।(রদ্দুল মিহতার-৪/২২৪, বাহরুর রায়েক্ব-৫/৯১)

চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ: 
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়। ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তি ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলাটের দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাক গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/835

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি যতগুলি বিষয় উল্লেখ করেছেন, সবগুলোই পড়েছি, এগুলো পড়ার পর আমরা বলছি যে, আপনি ওয়াসওয়াসার রোগী,আর ওয়াসওয়াসা রোগীদের তালাক হয়না।সুতরাং আপনার বেলায়ও তালাক হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...