প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার আম্মুর উপর ২৩ বছর আগেই তিন তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে।
তিনি আর আপনার বাবার স্ত্রী নন।
তার সাথে আপনার বাবার ঘর সংসার স্পষ্ট যেনা হচ্ছে।
,
এ অবস্থায় যেই সন্তান হয়েছে,তারা শরীয়তের দৃষ্টিতে যেনার সন্তান।
তবে আপনার বাবা যেহেতু সেই সন্তানদের পিতা বলে দাবী করছে,সুতরাং সমস্ত সন্তানের ভরনপোষণ আপনার বাবারর উপর ন্যাস্ত থাকবে।
আপনার উপর কোনো ভরনপোষণ এর দায়িত্ব নেই।
আপনি সম্পূর্ণভাবে দায়িত্ব মুক্ত।
২৩ বছর আগের আপনার বাবা মার বিবাহ শরীয়ত সম্মত নয়।
এটি পুরোপুরি ভাবে যেনা হচ্ছে।
এখন আপনার বাবা আপনার আম্মুকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে নিতে চাইলে শরয়ী হালালাহ করে নিতে হবে।
শরয়ী হালালাহ হলো,যেভাবে হোক,আপনার আম্মুর এখন অন্যত্র বিবাহ হতে হবে।
তারপর সেই ২য় স্বামীর সাথে স্বাভাবিক ঘর সংসার করতে হবে। এমন কি শারিরীক সম্পর্ক হতে হবে।
,
তারপর উক্ত ২য় স্বামী যদি আপনার আম্মুকে তালাক দেয়, অথবা সে যদি আপনার আম্মুকে তালাকের ক্ষমতা দেয়,আর সেই ক্ষমতা বলে আপনার আম্মু যদি
তার সাথে স্বাভাবিক ঘর সংসার এমন কি শারিরীক সম্পর্ক এর পর ২য় স্বামীর দেয়া ক্ষমতাবলে নিজেকে নিজে তালাক দেয়, তারপর ইদ্দত (তিন হায়েজ) শেষ হয়, তাহলেই কেবল আপনার বাবা আবার আপনার আম্মুকে বিবাহ করতে পারবেন। এবং আবার ঘর সংসার করতে পারবেন।
নতুবা আর কোনো পথ খোলা নেই।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ [٢:٢٣٠]
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে,তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়,তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা;যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। [সূরা বাকারা-২৩০]
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَجُلاً طَلَّقَ امْرَأَتَه“ ثَلاَثًا فَتَزَوَّجَتْ فَطَلَّقَ فَسُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَتَحِلُّ لِلأَوَّلِ قَالَ لاَ حَتّٰى يَذُوقَ عُسَيْلَتَهَا كَمَا ذَاقَ الأَوَّلُ.
আম্মাজান আয়েশা রা. থেকে বরণিত, রাফায়ার স্ত্রী বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমার স্বামী রাফায়া আমাকে এক সাথে তিন তালাক দিয়েছে? এরপর আমি আব্দুর রাহমানের সাথে বিবাহ করেছি। এখন রাফায়ার কাছে যেতে পারবো কিনা? নবীজী বললেন, আবদুর রহমান তোমার সাথে সহবাস করলে এরপর রাফায়ার নিকট যেতে পারবে। (সহীহ বুখারী ৫২৬১)
وقال الليث عن نافع كان ابن عمر إذا سئل عمن طلق ثلاثا قال لو طلقت مرة أو مرتين فأن النبي صلى الله عليه و سلم أمرني بهذا فإن طلقتها ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غيرك
হযরত নাফে রহ. বলেন,যখন হযরত ইবনে উমর রাঃ এর কাছে ‘এক সাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক পতিত হওয়া না হওয়া’ (রুজু‘করা যাবে কিনা) বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো,তখন তিনি বলেন-“যদি তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো তাহলে ‘রুজু’ [তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই ফিরিয়ে আনা] করতে পার। কারণ,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরকম অবস্থায় ‘রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন। যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে, সে তোমাকে ছাড়া অন্য স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত। {সহীহ বুখারী-২/৭৯২, ২/৮০৩}
আরো জানুনঃ-
যদি তিনি আপনার বাবার সাথে সংসার করতে চান,তবে দ্রুত যেভাবেই হোক,অন্যত্রে বিবাহ বসতেই হবে।