আমি একজন নওমুসলিম। প্রায় দেড় বছর হবে আমি ইসলাম গ্রহন করেছি। ইসলাম গ্রহনের ৭ দিনের মাথায় আমি আমার বর্তমান স্বামীর সাথে ঘর থেকে পালিয়ে আসি,,,,কারন তখন আমার একটাই চিন্তা ছিল বাবার বাড়ীতে থাকলে আমি নামাজ পড়তে পারবো না, আমার বাবার বাড়ী নোয়াখালী লক্ষীপুর আর আমার শশুড় বাড়ি কুমিল্লা, যেদিন পালিয়ে আসবো সেইদিন আমি প্রথম আমার স্বামীকে দেখি এর আগে শুধু ফেসবুকে কথা হতো,যদিও আমার স্বামীকে আমার পছন্দ ছিলো না তবুও আমি আল্লাহর জন্য তাকে বিয়ে করি,তার সাথে পালানোর পরে যখন তার পরিবার জানতে পারে তখন তারা বলে আমাদের মেনে নিবে আমরা যাতে বাড়ীতে আসি,,, তখন বাড়িতে আসার পর তারা আমাদের বিয়ে দেয়,,,কিন্তু বিয়ের কয়দিন পরেই নাকি জামেলা শুরু হয় তাদের এলাকার নেতারা নাকি ঝামেলা করতেছে এটা বলে আমার ননদের জামাই আমার স্বামীর থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা নেয় নেতাকে দেওয়ার জন্য,,, আমার শশুড় আর বাসুর বিদেশ থাকে তারা এই সম্পর্কে কিছুই জানে না,,ঘরে শুধু আমি আর আমার শাশুড়ী আর আমার স্বামী থাকি,আমার ননদকে বাড়ির পাশেই বিয়ে দেওয়া হইছে উনি প্রায় প্রতিদিন ই আসেন আমাদের বাড়ীতে উনার ৪ মেয়েকে নিয়ে,,, প্রথম প্রথম সব ঠিকই চলে আমি সব কাজ করতাম রান্না থেকে শুরু করে বাথরুম পরিস্কার পর্যন্ত,,, বাবার বাড়ীতে আমি খুব আদরে বড় হইছি,, যেদিন বাড়ী থেকে চলে আসবো সেদিন ও ঘুম থেকে উঠে গরম ভাত সামনে পাইছি তাই শশুড় বাড়ির কাজগুলো করতে আমার খুব কষ্ট হতো কিন্তু তবুও কিছু না বলেই করতাম,,,,বিয়ের ৬ মাস পরেই আমি প্রেগন্যান্ট হই,,,তখন কাজ করতে পারতাম না বলে সংসারে অশান্তি শুরু হয়,,,শাশুড়ী কাজ করলে বকাঝকা করে,মুখ কালো করে রাখে কথা বলতে চায় না,,,যখন আমার ৩ মাস তখন একদিন আমার শাশুড়ী আমায় কাজ নিয়ে বকাঝকা করলে আমি কাউকে না বলে বাবার বাড়ীর চলে যাই,,, আর অনেক পথ জার্নি করার কারনে আমার জ্বর হয় আর আমার প্রথম বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়,,,এরপর আমি আবার শশুর বাড়িতে চলে আসি,,,তখন আমি ধিরে ধিরে মা বাবা শুন্যতা অনুভব করতে থাকি বিশেষ করে আমার ননদ আসলে আমার শাশুড়ী তাকে অনেক আদর যত্ন করে আর আমার ননদ ও রোজ ই আসে তারপরেও তার আদর যত্নের কোনো কমতি হয়না,,,এইদিকে আমার ননদ তার ৪ মেয়ে নিয়ে আসলে তাদের খাওয়া দাওয়ার জন্য আবার রাতে রান্না করতে হয় আমার খুবই কষ্ট হয় তাই ধিরে ধিরে উনাকে আমার ভালো লাগে না,,,এরপরে ৩ মাস পরে আমি আমার প্রেগন্যান্ট হই,,, তখনও কাজ করতে পারি না ভালো করে তাই শাশুড়ির সাথে ঝগড়া মনমানিল্য লেগেই থাকে,,,আমার যখন ৯ মাস তখন আমার বেবি হওয়ার জন্য পানি ভাঙা শুরু হয় আর পেট ব্যাথা শুরু হয় আমার ননদ আমায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধ এনে দেয়,,, দুইদিন আমি পেট ব্যাথা নিয়ে থাকি কিন্তু ঔষধ কাজ হয়না তারপরে আমার ননদ আমায় হাসপাতালে নিয়ে যায় আর আমায় শিখিয়ে দেয় যে বলতে আমার যে পানি ভাঙে আর পেট ব্যাথা আমি যাতে ডাঃ কে না বলি।আমিও উনার কথা শুনে বলি নি,,, ডাঃ বলছে আমার বাচ্চা পেটে উল্টিয়ে রইছে ভাগ্য বেশি ভালো হলে নরমালে হবে না হলে সিজার করতে হবে,,,পরে সেই রাতেই আমার ব্যাথা উঠে এবং আমি এক পর্যায়ে আমার ননদকে অনেকবার বলি আমায় হসপিটাল নিতে কিন্তু উনি বলে এত রাতে কী করব আমি,,,,উনি আমার স্বামীকে পাশের রুমে এসে একবারও বলে নি আমি যে হসপিটালের কথা বলতেছি,,,, পরে উল্টা হওয়ার সময় আমার বাচ্চা মারা গেছে,,,,তখন উনারা আমার বাচ্চার নামে অনেক কথা উঠিয়ে দিচে যে আমার বাচ্চা প্রতিবন্ধী, হিজড়া হইছে মরে গেছে ভালো হইছে,,,,এইসবের পরে আমায় সেলাই ও করতে হইছে উল্টা বাচ্চা হওয়ার কারনে আমার সব ছিড়ে গেছে,,,একন সেলাইয়ের জন্য আমি সারাদিন শুয়ে বসে থাকতে হয় কিন্তু আমার শাশুড়ী একদমি অবহেলার করে খাওয়া দাওয়া সবকিছুতে,,,,আমার স্বামী আমার সব সেবা করে,,,আমার স্বামী খুবই শান্ত সে তার বড়বোন মানে আমার ননদের উপর কোনো কথা বলে না আমার শাশুড়ীর উপর ও।এখন আমি চাচ্ছি আলাদা থাকতে,,,এখানে থাকলে রোজ রোজ ননদ আসে তাদের এতো আমোদ প্রমোদ আমি অনেক কষ্ট পাই,,,কিন্তু আমার শাশুড়ী আমরা চলে গেলে একলা থাকবে তাই আমার স্বামী যেতে চাচ্ছে না,,,এখন আমি কি করবো?? এখানে আমার মানসিক শান্তি মিলছে না,,,,আমার স্বামীর আলহামদুলিল্লাহ যথেষ্ট সামর্থ্য আছে আলাদা থাকার কিন্তু যেহেতু আমরা চলে গেলে আমার শাশুড়ী একলা থাকবে তাই উনি যেতে চাচ্ছে না আর এখানে থাকলে আমার আর আমার শাশুড়ীর মধ্যে খুবই ঝামেলা হয় আমি কোন কথা বললেই উনি আর কথা বলতে চায় না,,,পরে আমার আগে গিয়ে কথা বলতে হয় বিয়ের পর এমন মনমালিন্য ১০ বারেরও বেশি হইছে।আমি চাই আমার স্বামী তার মায়ের সব দ্বায়িত্ব পালন করুক,,, উনি অসুস্থ হলে আমি এসেও সেবা করবো,,, শুধু আমি আলাদা থাকতে চাই যাতে উনার সাথে ঝগড়া না হয়,,, দূরে থাকলে যদি সম্পর্ক ভালো থাকে,,,, এখন যেহেতু আমরা চলে গেলে উনি একলা থাকতে হবে সেক্ষেত্রে আমার কি কোন গুনাহ হবে বা আমার এই সিদ্ধান্ত কি ঠিক??