আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
4,240 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম, শ্বশুর-শাশুড়িকে কীভাবে সম্বোধন করা সুন্নাত? আম্মা-আব্বা/চাচা-চাচী/আঙ্কেল-আন্টি ইত্যাদির মধ্যে কোনটা ইসলামের সৌন্দর্যের অধিকতর নিকটবর্তী? এক্ষেত্রে কোনো জায়েজ-নাজায়েজ আছে কিনা।

1 Answer

+1 vote
by (574,200 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো শশুর শাশুড়িকে আব্বা,আম্মা,   চাচা-চাচী/আঙ্কেল-আন্টি, ইত্যাদি সবই ডাকা জায়েজ আছে।   
তবে এগুলো সবই জায়েজ বিধান , কোনো একটি বাধ্যতামূলক বিধান নয়।
,
তাই এটা বলা যাবেনা যে আঙ্কেল-আন্টি বলে তাদেরকে ডাকাই যাবেনা,ইত্যাদি,,,
তবে তারা যেহেতু নিজের স্ত্রীর বাবা/মা, তাই  তাদেরকে আব্বা,আম্মা, বলে ডাকাই ইসলামের সৌন্দর্যের অধিকতর নিকটবর্তী।
,
শশুর-শাশুড়িকে বাবা-মা ডাকা নিষেধ নয়; বরং এটি সৌহার্দ্যতা ও উত্তম শিষ্টাচারের নিদর্শন। কেননা বংশপরিচয় প্রকাশ করা উদ্দেশ্য না হলে বরং কোন সন্মানিত ব্যক্তিকে সন্মানপ্রদর্শণ উদ্দেশ্য হলে তাঁকে বাবা কিংবা মা বলার নজির কোরআন-সুন্নাহ এ রয়েছে। 

যেমন পবিত্র কোরআনে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদেরকে মুমিনদের মা এবং ইব্রাহিম আলাইহিসসালামকে মুসলিম-উম্মাহর বাবা বলা হয়েছে।
النَّبِيُّ أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنفُسِهِمْ وَأَزْوَاجُهُ أُمَّهَاتُهُمْ নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মা ।
(সূরা আহযাব ৬)

 مِّلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ هُوَ سَمَّاكُمُ الْمُسْلِمينَ 
এটা তোমাদের বাবা ইব্রাহিমের মিল্লাত (ধর্মাদর্শ); তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন ‘মুসলিম’। (সূরা হাজ্জ ৭৮)

অনুরূপভাবে হাদীস এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর চাচী আবু তালিবের স্ত্রী আলী রাযি.এর মাকে মা বলে ডেকেছেন। তাঁর নাম ছিল ফাতিমা বিনতে আসাদ বিন হাশিম রাযি.।

 ফাতিমা যখন মারা যান তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরে এসে তাঁর মাথার কাছে বসেন এবং বলেন, 
رحِمَك اللَّهُ يا أمِّي كنتِ أمِّي بعدَ أمِّي تجوعينَ وتُشبِعينَني وتَعرَينَ وتُكسينني وتمنعينَ نفسَك طيِّبَها وتطعمينَني تريدينَ بذلِك وجهَ اللَّهِ 
অর্থাৎ, ও আম্মা! আল্লাহ আপনার ওপর রহম করুন। আমার মায়ের পর আপনিই আমার মা ছিলেন। আপনি ক্ষুধার্ত থেকেও আমাকে পেট ভরে খাইয়েছেন, আপনি নিজে কাপড় না পরেও আমাকে কাপড় পরিয়েছেন, নিজেকে না দিয়ে আপনি আমাকে ভালো খাবার খাইয়েছেন, আপনি শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখেরাত চেয়েছিলেন। (মাজমাউযযাওয়াইদ ১৫৩৯৯)

উল্লেখ্য, যেসব হাদীসে অন্যকে বাবা বলতে নিষেধ করা হয়েছে, 
যেমন এক হাদীসে এসেছে, 
من ادعى إلى غير أبيه وهو يعلم أنه غير أبيه فالجنة عليه حرام
 “যে ব্যক্তি পরের বাবাকে নিজের বাবা বলে, অথচ সে জানে যে, সে তার বাবা নয়, সে ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম।” (বুখারী, ৬৩৮৫)(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ১২৩)
— এ জাতীয় হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হল, বংশপরিচয় প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আসল পরিচয় গোপন রেখে নিজের বাবার নাম উল্লেখ না করে, অন্যের নাম উল্লেখ করা। যেমন-আইডি কার্ড, পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন অথবা এমন কোনো দলিল বা স্থান যেখানে কোনো ব্যক্তির জন্মদাতা বাবার নাম উল্লেখ করা জরুরি হয়, সেখানে যদি অন্য কারো নাম উল্লেখ করা হয় তাহলে তা হারাম হয়।

কিন্তু যেহেতু শশুর-শাশুড়িকে বাবা-মা ডাকার দ্বারা বংশপরিচয় গোপন হয় না, তাই শশুর-শাশুড়িকে বাবা-মা বলা হাদীসের নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত নয় বিধায় তা জায়েয।
,
উল্লেখ্য যে এটা জায়েজ একটি বিধান , এটা কোনো বাধ্যতামূলক বিধান নয়।
 সে আপনার আসল বাবা/মা নয়।
আপনি চাইলে তাকে খালা,চাচি,মামি,আন্টি ইত্যাদি বলেও ডাকতে পারেন। 
কোনো সমস্যা নেই। 

কিন্তু তিনি যেহেতু তিনি আপনার স্ত্রীর বাবা/মা,তাই তাদেরকে সম্মান করতে হবে।
তাদের সম্মানের ক্ষেত্রে ত্রুটি করা ঠিক হবেনা। 
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

وَعَن عَمرِو بنِ شُعَيبٍ، عَن أبِيهِ، عَن جَدِّهِ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَرْحَمْ غِيرنَا، وَيَعْرِفْ شَرَفَ كَبيرِنَا حديث صحيح رواه أَبُو داود والترمذي، وَقالَ الترمذي: حديث حسن صحيح.وَفي رِوَايَةِ أبي دَاوُد: حَقَّ كَبيرِنَا

আমর ইবনু শুআইব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাঁর পিতা থেকে এবং তিনি (শুআইব) তাঁর (আমরের) দাদা (আব্দুল্লাহর ইবনু আমর) রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘সে আমার দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি আমাদের ছোটদের প্রতি দয়া করে না এবং আমাদের বড়দের সম্মান জানে না।’’ (সহীহ হাদীস, আবূ দাঊদ, তিরমিযী, হাসান সহীহ)  আবূ দাঊদের এক বর্ণনায় আছেঃ ‘‘আমাদের বড়দের অধিকার জানে না।’
(তিরমিযী ১৯২০, আহমাদ ৬৬৯৪, ৬৮৯৬, ৭০৩৩)
,
★★রাসুল সাঃ তার শশুর আবু বকর রাঃ,ওমর রাঃ,,,,,,,দেরকে তাদের নিন নাম/উপাধী বলেই ডাকতেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
বাবা তো বংশ পরিচয়। তাহলে শ্বশুর তো বাবার মতন বংশ পরিচয় নয়। তাই শ্বশুরকে বাবা কেন বলবেন। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...