আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
377 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by
আমি আমার স্ত্রীকে আমার বাবা ও বন্ধুর কাছে বলেছি যে তালাক দিসি।এতে কি তালাক হবে।আমার স্ত্রীর বাবা মায়ের সাথে আমার ঝামেলা হইছে। তারা আমাকে বউ দিবে না বলেছে।তাই আমি দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য এরকম বলেছি।যেন তারা আমার জন্য বউ দেখে।

1 Answer

0 votes
by (633,180 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ইবনে আবেদীন শামী রাহ বলেন,
ولو أقر بالطلاق كاذبا أو هازلا وقع قضاء لا ديانة.(رد المحتار:3/236)
যদি কেউ রংতামাশা করে বা মিথ্যা ভাবে তালাকের স্বীকারোক্তি দেয়, তাহলে এদ্বারা দিয়ানাতান তালাক পতিত হবে না। হ্যা, কাযাআন তালাক পতিত হবে।

إذا أقر  بالطلاق  كاذبا وقع  قضاء لا  ديانة(البحر الرائق شرح كنز الدقائق:3/272)
যদি কেউ রংতামাশা করে বা মিথ্যানভাবে তালাকের স্বীকারোক্তি দেয়, তাহলে এদ্বারা দিয়ানাতান তালাক পতিত হবে না। হ্যা, কাযাআন তালাক পতিত হবে।

لو كرر مسائل الطلاق بحضرة زوجته ويقول: أنت طالق ولا ينوى طلاقا لا تطلق، (فتح القدير، كتاب الطلاق، باب ايقاع الطلاق-4/4)
যদি স্ত্রীর উপস্থিতিতে তালাকের মাস'আলা মাসাঈলকে বারংবার বলা হয়, যেমন স্বামী বলল, তুমি তালাক,এবং এমতাবস্থায় স্ত্রীকের তালাকের উদ্দেশ্য নেই, তাহলে স্ত্রী তালাক হবে না।(ফাতহুল কাদির-৪/৪)

كَمَا  لَوْ أَقَرَّ بِالطَّلَاقِ هَازِلًا أَوْ كَاذِبًا فَقَالَ فِي الْبَحْرِ، وَإِنَّ مُرَادَهُ لِعَدَمِ الْوُقُوعِ فِي الْمُشَبَّهِ بِهِ عَدَمُهُ دِيَانَةً، ثُمَّ نَقَلَ عَنْ الْبَزَّازِيَّةِ وَالْقُنْيَةِ لَوْ أَرَادَ بِهِ الْخَبَرَ عَنْ الْمَاضِي كَذِبًا لَا يَقَعُ دِيَانَةً، وَإِنْ أَشْهَدَ قَبْلَ ذَلِكَ لَا يَقَعُ قَضَاءً أَيْضًا. اهـ. 
অনুরুপ ভাবে যদি স্বামী মিথ্যা বা তামাশা মূলক তালাকের স্বীকারোক্তি দেয়,তাহলে বাহরুর রায়েক গ্রন্থে বলা হয়েছে যে এটি দিয়ানাতান তথা আল্লাহর নিকট তালাক বলে গন্য হবে না।অতঃপর বাযযাযিয়া ও ক্বুনয়া কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, যদি এই মিথ্যা স্বীকারোক্তি দ্বারা অতীতের তালাকের খবর স্বামী দেয়,তাহলে দিয়ানাতান (আল্লাহর নিকট) তালাক হবে না। (কাযা'আন তালাক হবে।)কিন্তু যদি তালাকের মিথ্যা স্বীকারোক্তির পূর্বে স্বামী এ ব্যাপারে সাক্ষী রাখে, তাহলে  কাযা'আনও (তথা কাযী সাহেবের নিকট তালাক নিয়ে স্বামী স্ত্রীর ঝগড়ার মূহুর্তেও) তালাক হবে না।(রদ্দুল মুহতার-৩/২৩৬)

يشترط بالاتفاق القصد فى الطلاق، وهو إرادة التلفظ به ولو لم ينو فلا يقع طلاق فقيه يكره ولا طلاق حاك عن نفسه أو غيره لأنه لام يقصد معناه، بل قصد التعليم والحكاية، (الفقه الاسلام وادلته، كتاب الطلاق، باب شروط الطلاق-7/368)
সর্বসম্মতিক্রমে তালাকের জন্য নিজের ইচ্ছা বা দৃঢ় মনোভাব থাকা শর্ত। অর্থাৎ এমন শব্দ উচ্ছারণ করা শর্ত যাতে নিজের ইচ্ছার কথা প্রতিফলিত হয়।যদি তালাকের নিয়ত না থাকে, তাহলে তালাক পতিত হবে না।অন্তরের প্ররোচিকা বা অন্তরের প্ররোচিকা দ্বারা তালাক হবে না।কেননা এখানেতো তালাক শব্দের অর্থকে উদ্দেশ্য নেয়া হচ্ছে না।বরং শিক্ষা বা কাহিনি বর্ণনার উদ্দেশ্যে তালাক শব্দ উচ্ছারণ করা হয়েছে। (আল ফিকহুল ইসলামি ওয়া আদিল্লাতুহু-৭/৩৬৮)

দিয়ানাতান এবং কাযাআনের ব্যখ্যা করতে যেয়ে ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন,
(قوله: المفتي يفتي بالديانة) مثلا إذا قال رجل: قلت لزوجتي أنت طالق قاصدا بذلك الإخبار كاذبا  فإن المفتي يفتيه بعدم الوقوع  والقاضي يحكم عليه بالوقوع؛ لأنه يحكم بالظاهر، فإذا كان القاضي يحكم بالفتوى يلزم بطلان حكمه في مثل ذلك، فدل على أنه لا يمكنه القضاء بالفتوى في كل حادثة، وفيه نظر فإن القاضي إذا سأل المفتي عن هذه الحادثة لا يفتيه بعدم الوقوع؛ لأنه إنما سأله عما يحكم به، فلا بد أن يبين له حكم القضاء فعلم أن ما في البزازية لا ينافي قولهم يحكم بفتوى غيره. (ردالمحتار ج:٥،ص:٣٦٥)
যদি কোনো স্বামী বলে, আমি আমার স্ত্রীকে বলেছি যে, 'তুমি তালাক', এমতাবস্থায় তার উদ্দেশ্য ছিল, তালাকের মিথ্যা খবর দেয়া। এমন পরিস্থিতিতে মুফতি সাহেব, তালাক না হওয়ারই ফাতওয়া দিবেন। তবে কাযী বা বিচারক কোর্টে তালাক হওয়ার-ই ফয়সালা দিবেন। কেননা বিচারকের দায়িত্ব হচ্ছে, বাহ্যিক বিষয়াবলি লক্ষ্য করেই বিচারকার্য সমাপ্ত করা। এখন কাজী সাহেব যদি ফাতাওয়া অনুযায়ী বিচারকার্য করেন, তাহলে এমন পরিস্থিতিতে কাজীর জন্য শরীয়ত নির্ধারিত বিচার ব্যবস্থার উল্টো ফয়সালা হয়ে যাবে। কাজেই প্রশ্ন জাগতে পারে, তাহলে কি সর্বক্ষেত্রে ফাতাওয়া দ্বারা বিচারকার্য করা সম্ভবপর নয়। এই প্রশ্নের জবাবে বলা হবে যে, কাজী সাহেব যখন মুফতি সাহেবের কাছে এই মাসআলার ব্যখ্যা তলব করবেন বা জিজ্ঞাসা করবেন, তখন মুফতি সাহেব কাজী সাহেবের জন্য নির্ধারিত যে ফয়সালা শরীয়তে রয়েছে তথা কাযাআন, সেটাই তিনি কাজী সাহেবকে বলে দিবেন।কেননা মুফতির উপর জরুরী হচ্ছে, তিনি কাজী সাহেবকে বিচারিক বিষয়ই তথা কাযাআন হুকুমই বলে দিবেন। (রদ্দুল মুহতার-৫/৩৬৫)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
তালাকের মিথ্যা স্বীকারোক্তি দ্বারা তালাক হবে কি না? এ নিয়ে দারুল ইফতা সমূহ থেকে পরস্পর বিরোধী ফাতাওয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমরা মনে করি, এ বিষয়ে দিয়ানাতানের উপর ফাতাওয়া প্রদানই উপযুক্ত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...