আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
250 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
একজন বাচ্চা জন্মের আগে মনে মনে মানত করে আল্লাহ যদি তাকে এইবার মেয়ে সন্তান দান করেন তাহলে নাম রাখবে আমাতুল্লাহ মারইয়াম।

আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তাকে মেয়ে সন্তান দান করছেন।কিন্তু  সন্তানের বাবার এই নাম পছন্দ না।
এখন মানত করা নাম না রাখলে কি গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

ভালো নাম রাখা পিতা-মাতার সর্বপ্রথম দায়িত্ব। পিতা-মাতার উপর সন্তানের সর্বপ্রথম হক হচ্ছে, তার জন্য সুন্দর নাম নির্বাচন করা। 

 

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ও আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

من حق الولد على الوالد أن يحسن اسمه ويحسن أدبه.

অর্থ : সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তার উত্তম তারবিয়াতের ব্যবস্থা করা বাবার উপর সন্তানের হক। -মুসনাদে বাযযার (আলবাহরুয যাখখার), হাদীস ৮৫৪০

 

মানসিকতা ও স্বভাবের উপরও নামের একটা প্রভাব থাকে।

أَخْبَرَنِي عَبْدُ الحَمِيدِ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ شَيْبَةَ، قَالَ: جَلَسْتُ إِلَى سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، فَحَدّثَنِي: أَنّ جَدّهُ حَزْنًا قَدِمَ عَلَى النّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ فَقَالَ: مَا اسْمُكَ؟ قَالَ: اسْمِي حَزْنٌ، قَالَ: بَلْ أَنْتَ سَهْلٌ. قَالَ: مَا أَنَا بِمُغَيِّرٍ اسْمًا سَمّانِيهِ أَبِي قَالَ ابْنُ المُسَيِّبِ: فَمَا زَالَتْ فِينَا الحُزُونَةُ بَعْدُ.

আবদুল হুমাইদ বিন শায়বা বলেন, আমি হযরত সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিবের কাছে বসা ছিলাম। তিনি তখন বললেন, আমার দাদা ‘হাযান’ একবার নবীজীর দরবারে উপস্থিত হলেন। নবীজী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কী? দাদা বললেন, আমার নাম হাযান। (হাযান অর্থ শক্তভূমি) নবীজী বললেন- না, তুমি হচ্ছ ‘সাহল’ (অর্থাৎ তোমার নাম হাযানের পরিবর্তে সাহল রাখো; সাহল অর্থ, নরম জমিন।) দাদা বললেন, আমার বাবা আমার যে নাম রেখেছেন আমি তা পরিবর্তন করব না। সাইদ ইবনুল মুসায়্যিব বলেন, এর ফল এই হল যে, এরপর থেকে আমাদের বংশের লোকদের মেযাজে রুঢ়তা ও কর্কশভাব রয়ে গেল। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬১৯৩

 

সুন্দর নাম রাখার গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ হল, হাশরের ময়দানে- সেখানে পূর্বাপর সকল মানুষ একত্রিত হবে এবং ব্যক্তিকে তার নাম ও তার বাবার নামসহ ডাকা হবে।

 

হযরত আবুদ দারদা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِنّكُمْ تُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ، وَأَسْمَاءِ آبَائِكُمْ، فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ.

কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে ডাকা হবে তোমাদের ও তোমাদের বাবার নাম নিয়ে (অর্থাৎ এভাবে ডাকা হবে- অমুকের ছেলে অমুক)। তাই তোমরা নিজেদের জন্য সুন্দর নাম রাখ। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৪৮

,

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/12074/

 

যে কোনো জিনিষের মান্নত ওয়াজিব হবে না অর্থাৎ মান্নত করলেই যে শুধু ওয়াজিব হয়ে যাবে বিষয়টা এমন নয়। বরং কুরবতে মাকসুদাহ তথা ইবাদত হিসেবে গণ্য এমন কোনো জিনিষের মত কিছু দ্বারা মান্নত করতে হবে, তবেই তা ঐ ব্যক্তির উপর ওয়াজিব হিসেবে গণ্য হবে। যেমন, কোনো কাজ হয়ে গেলে  প্রাণী জবাহ করার দ্বারা মান্নত করা। এই মান্নত গ্রহণযোগ্য হবে। কেননা প্রাণী যবেহ করা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু আমরা প্রাণী যবেহ করেই ঈদে কুরবানি করি, ইত্যাদি ইত্যাদি। আরো জানুন- https://ifatwa.info/37784/?show=37784#q37784

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মেয়ের নাম রাখার মানত করার দ্বারা মানত সহীহ হয়নি কারণ, কুরবতে মাকসুদাহ তথা ইবাদত হিসেবে গণ্য এমন কোনো জিনিষের মত কিছু দ্বারা মান্নত করতে হবে, তবেই তা ঐ ব্যক্তির উপর ওয়াজিব হিসেবে গণ্য হবে। যেমন, কোনো কাজ হয়ে গেলে  প্রাণী জবাহ করার দ্বারা মান্নত করা। এই মান্নত গ্রহণযোগ্য হবে। কেননা প্রাণী যবেহ করা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু আমরা প্রাণী যবেহ করেই ঈদে কুরবানি করি, ইত্যাদি ইত্যাদি। আর নাম রাখা কুরবতে মাকসুদাহ নয়। তাই আপনি এই নাম না রেখে অন্য কোনো ভালো নামও রাখতে পারেন। এতে কোনো সমস্যা নেই।  এতে গোনাহও হবে না ইনশাআল্লাহ।

উল্লেখ্য যে, আমাতুল্লাহ মারইয়াম অনেক অনেক সুন্দর নাম। উলামায়ে কেরাম বলে থাকেন যে, মেয়েদের আমাতুল্লাহ নামটা আল্লাহ তায়ালার কাছে সবচেয়ে প্রিয় নাম। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...