ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
চুক্তিকে পূর্ণ করা ওয়াজিব।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَوْفُوا بِالْعُقُودِ ۚ أُحِلَّتْ لَكُم بَهِيمَةُ الْأَنْعَامِ إِلَّا مَا يُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ غَيْرَ مُحِلِّي الصَّيْدِ وَأَنتُمْ حُرُمٌ ۗ إِنَّ اللَّهَ يَحْكُمُ مَا يُرِيدُ
মুমিনগণ, তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ন কর।(সুরা মায়েদা-১)
এমনকি অমুসলিমের সাথে চুক্তি করলেও সেটাও পূর্ণ করার তাগিদ দেয়া হচ্ছে,
إِلَّا الَّذِينَ عَاهَدتُّم مِّنَ الْمُشْرِكِينَ ثُمَّ لَمْ يَنقُصُوكُمْ شَيْئًا وَلَمْ يُظَاهِرُوا عَلَيْكُمْ أَحَدًا فَأَتِمُّوا إِلَيْهِمْ عَهْدَهُمْ إِلَىٰ مُدَّتِهِمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِينَ
তবে যে মুশরিকদের সাথে তোমরা চুক্তি বদ্ধ, অতপরঃ যারা তোমাদের ব্যাপারে কোন ত্রুটি করেনি এবং তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্যও করেনি, তাদের সাথে কৃত চুক্তিকে তাদের দেয়া মেয়াদ পর্যন্ত পূরণ কর। অবশ্যই আল্লাহ সাবধানীদের পছন্দ করেন।
(সুরা তাওবা, আয়াত ৪)
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানু আবি দাউদ-৩৫৯৪)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
এখানে দুইটি বিষয় লক্ষণীয়
(১) শর্তকে পূর্ণ করা, এটা অবশ্যই ওয়াজিব। ভঙ্গ করা জায়েয হবে না।বিনা জরুরতে ভঙ্গ করলে অবশ্যই গোনাহ হবে।
(২) যদি কেউ ২/৩ বৎসর ম্যাচে থাকার চুক্তি করার পর ৬/৭ মাস পর ম্যাচ থেকে চলে যায়, তাহলে চুক্তির মেয়াদ পর্যন্ত পরবর্তী মাস সমূহের ভাড়া কি ঐ ব্যক্তির উপর ওয়াজিব হবে?
এই প্রশ্নের জবাবে বলা যায় যে,
এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ার কিছু ভাষ্য শুনুন-
وَرُوِيَ فِي الْأَصْلِ إذَا خَرَجَ الْمُسْتَأْجِرُ عَنْ الدَّارِ بِعُذْرٍ سَقَطَ عَنْهُ الْأَجْرُ وَفِي رِوَايَةِ الزِّيَادَاتِ لَا يَسْقُطُ إلَّا إذَا سَكَنَ الْآجِرُ الدَّارَ فَيَكُونُ رِضًا بِالْفَسْخِ. كَذَا فِي الْغِيَاثِيَّةِ.
মাবসুত কিতাবে বর্ণিত রয়েছো,যদি মুস্তা'জির(যিনি ভাড়ায় ঘর ইত্যাদি নেন) ভাড়া বাসা থেকে কোনো উযরে বের হয়ে যান, তাহলে অবশিষ্ট ভাড়া রহিত হয়ে যাবে। যিয়াদাত কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, আজির(বাড়ায় ঘর প্রদানকারী) আজির ঘরকে সমঝিয়ে নেয়ার পরই ভাড়া অবলুপ্ত হবে।
.
وَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَنْتَقِلَ إلَى حِرْفَةٍ أُخْرَى مِثْلَ أَنْ يَتْرُكَ التِّجَارَةَ وَيَأْخُذَ فِي الزِّرَاعَةِ أَوْ اسْتَأْجَرَ أَرْضًا لِلزِّرَاعَةِ فَتَرَكَهَا وَأَخَذَ فِي التِّجَارَةِ فَهُوَ عُذْرٌ. كَذَا فِي الْبَدَائِعِ.
যদি মুস্তা'জির ভিন্ন ব্যবসা করতে চান, এবং এজন্য এই ভাড়া ঘর ছাড়তে হবে, তাহলে এটা উযর হিসোবে গণ্য হবে।অর্থাৎ মুস্তা'জির ঘর ছেড়ে দিতে পারবেন।উনাকে অবশিষ্ট মাস সমূহের ভাড়া দিতে হবে না।
اسْتَأْجَرَ حَانُوتًا لِيَتَّجِرَ فِي السُّوقِ ثُمَّ كَسَدَ السُّوقُ حَتَّى لَا يُمْكِنُهُ التِّجَارَةُ فَلَهُ فَسْخُ الْإِجَارَةِ لِأَنَّهُ عُذْرٌ. كَذَا فِي الْقُنْيَةِ.
যদি কেউ কোনো ঘর ভাড়া নেয়, অতঃপর বাজারে ধ্বস নামে, বা বাজারের গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়, তাহলে ইজারাকে ভঙ্গ করা যাবে।এক্ষেত্রে অবশিষ্ট দিন সমূহের ভাড়া দিতে হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৪/৪৫৯)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
যেহেতু আপনার উযর রয়েছে, তাই চুক্তি করার পরও আপনি বাসা/ম্যাচ ছেড়ে যেতে পারবেন। এতে অবশিষ্ট ভাড়া আপনার উপর ওয়াজিব হবে না। যতদিন থেকেছেন, শুধুমাত্র ততদিনের ভাড়াই আপনার উপর ওয়াজিব। হ্যা, বিনা জরুরতে কেউ ম্যাচ ছাড়তে পারবে না। এবং ভাড়াও মাফ হবে না।