জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
ফরজ,ওয়াজিব সদকাত খাত সংক্রান্ত মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡهَا وَ الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُهُمۡ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۶۰﴾
সাদাকাহ হচ্ছে শুধুমাত্র গরীবদের এবং অভাবগ্রস্তদের, আর এই সাদাকাহর (আদায়ের) জন্য নিযুক্ত কর্মচারীদের এবং (দীনের ব্যাপারে) যাদের মন রক্ষা করতে (অভিপ্রায়) হয় (তাদের), আর গোলামদের আযাদ করার কাজে এবং কর্জদারদের কর্জে (কর্জ পরিশোধে), আর জিহাদে (অর্থাৎ যুদ্ধ সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য) আর মুসাফিরদের সাহায্যার্থে। এই হুকুম আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, অতি প্রজ্ঞাময়।
(সুরা তওবা ৬০)
এ আয়াতে নির্ধারিত খাতগুলো ফরয সদকারই খাত। হাদীস অনুযায়ী নফল সদকা আট খাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর পরিসর আরও প্রশস্ত।
যিয়াদ ইবন হারিস আস-সুদায়ী বলেন, আমি একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে হাযির হয়ে জানতে পারলাম যে, তিনি তার গোত্রের সাথে যুদ্ধ করার জন্যে সৈন্যের একটি দল অচিরেই প্রেরণ করবেন।
আমি আরয করলাম ইয়া রাসূলুল্লাহ। আপনি বিরত হোন আমি দায়িত্ব নিচ্ছি যে, তারা সবাই আপনার বশ্যতা স্বীকার করে এখানে হাযির হবে। তারপর আমি স্বগোত্রের কাছে পত্র প্রেরণ করি। পত্র পেয়ে তারা সবাই ইসলাম গ্রহণ করে। এর প্রেক্ষিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেন, ‘তুমি তোমার গোত্রের একান্ত প্রিয় নেতা। আমি আরয করলাম এতে আমার কৃতিত্বের কিছুই নেই। আল্লাহর অনুগ্রহে তারা হেদায়েত লাভ করে মুসলিম হয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন আমি এই বৈঠকে থাকাবস্থায়ই এক ব্যক্তি এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কিছু সাহায্য চাইল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জবাব দিলেন, সদকার ভাগ বাটোয়ার দায়িত্ব আল্লাহ নবী বা অন্য কাউকে দেননি। বরং তিনি নিজেই সদকার আটটি খাত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। এই আট শ্রেণীর কোন একটিতে তুমি শামিল থাকলে দিতে পারি। [আবু দাউদ ১৬৩০; দারাকুতনী: ২০৬৩]
সুতরাং ফরজ,ওয়াজিব সদকার খাতঃ
(১)ফকির, (২)মিসকীন, (৩)যাকাত উসূলকারী ও (৪)যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক (৫)এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে (৬)ঋণগ্রস্তদের জন্য, (৭)আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং(৮) মুসাফিরদের জন্যে।
এর মধ্যে চার নাম্বারটির বিধান রহিত হয়ে গেছে।
নফল সদকা আট খাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর পরিসর আরও প্রশস্ত।
নফল সদকাহ সম্পদশালী দেরকেও দেওয়া যায়,মসজিদ মাদ্রাসা,কবরস্থান ইত্যাদিতেও দেওয়া যায়।
রাস্তাঘাট,হাসপাতাল নির্মান ইত্যাদি মানবের কল্যানে যেকোনো বৈধ খাতে দেওয়া যায়।
অমুসলিমকেও দেওয়া যায়।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সে যদি উক্ত সদকার মাল কোনো গরিবকে দেয়,তাহলেও হবে।
আবার যদি মূল মালিকের কাছেই দেয়,পরবর্তীতে সেই মালিক কোনো গরিব মিসকিনকে দিতে পারে।
(০২)
এটা নফল সদকার অন্তর্ভুক্ত।
যাহা প্রদান করা আবশ্যক নয়।
দিলে ছওয়াব,না দিলে গুনাহ নেই।
যাকাত,কুরবানী চামড়ার টাকা,মান্নত এগুলো ফরজ ও ওয়াজিব সদকাহ।
এগুলো আদায় করতেই হবে, উপরে উল্লেখিত খাতেই দিতে হবে।
নফল সদকাহ আট খাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
বিস্তারিত উপরে উল্লেখ রয়েছে।