আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
288 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (189 points)
edited by
ওলিউল্লাহ হুজুর, আপনি গত কালের উত্তরে বলেছেন, স্বামীর এই কথায়- "পড়াশোনা না করলে যেই জামাই খুশি হবে ওই জামাইরে বিয়া কইরো যাও"
স্বামীর এই কথা বলার পর কি এটা তালাকের মজলিশ হবে না।

কিন্তু যেইদিন স্বামী স্ত্রীকে এই কথাটি বলে "পড়াশোনা না করলে যেই জামাই খুশি হবে ওই জামাইরে বিয়া কইরো যাও" -এটি স্ত্রীকে বলার পরে স্ত্রী তখন ভুল ভেবে স্বামীকে বলে, "এই কথায় স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দেওয়া বুঝায়।( স্ত্রী না জেনে বুঝে বলে এই কথা, স্ত্রী ভাবসে অধিকার দেওয়া হয় এই কথা বলে)"

যেহেতু অধিকার দেওয়া বুঝাবে না, কিন্তু স্ত্রী স্বামীকে এই ভুল কথা বলে। আর স্ত্রীও স্বামীর কাছে তালাকের অধিকার চায় নাই। স্ত্রী ওয়াসওয়াসার রোগী।

১. "এই কথায় স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দেওয়া বুঝায়" স্ত্রীর এই বাক্যটি স্বামীকে বলার জন্য কি সেটা তালাকের মজলিশ হবে?

আশা করি প্রশ্নটি বুঝাতে পেরেছি। দয়া করে সন্দেহ দুর করে দিন। স্ত্রীর এই বাক্যটি বলাতে তালাকের মজলিশ হবে কি না।

২. "কিছু হইলে তোমার জন্য হবে"

"আল্লাহ না করুক কিছু হইলে তোমার জন্য হবে"

"কিছু হইলে তোমার বাড়াবাড়ি জন্য হবে।"

এইগুলা কি কেনায়া বাক্য? নিয়ত থাকলেও কি কেনায়া বাক্য হবে?

৩. "তোমার সংসার অশান্তির হবে"

"তোমার জীবন এইভাবেই যাবে"

"তুমি কখনও ভাল থাকবা না"

এইগুলা কি কেনায়া বাক্য?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
স্ত্রীর এই বাক্যটি স্বামীকে বলার জন্য সেটা তালাকের মজলিশ হবেনা।

(০২)
এইগুলা কেনায়া বাক্য নয়।
নিয়ত থাকলেও কেনায়া বাক্য হবেনা।

(০৩)
এইগুলো কেনায়া বাক্য নয়।
তবে এগুলো অভিশাপ মূলক কথা।
যাহা কোনো মুসলিমকে বলা জায়েজ নেই।

কেননা শরীয়তের বিধান হলো নির্দিষ্ট ভাবে কোনও ব্যক্তির উপর অভিশাপ দেওয়া জায়েজ নেই।

চাই সে মুসলিম হোক অথবা অমুসলিম হোক। কেননা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

سَالِمٌ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ الرُّكُوْعِ فِي الرَّكْعَةِ الْآخِرَةِ مِنَ الْفَجْرِ يَقُوْلُ : اللهُمَّ الْعَنْ فُلَانًا وَفُلَانًا وَفُلَانًا بَعْدَ مَا يَقُوْلُ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ فَأَنْزَلَ اللهُ {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ} إِلَى قَوْلِهِ {فَإِنَّهُمْ ظَالِمُوْنَ} رَوَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ رَاشِدٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ.

সালিম (রহ.) থেকে বর্ণিত, তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেছেন যে, তিনি ফজরের সলাতের শেষ রাকআতে রুকু থেকে মাথা তুলে ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ্ (আল্লাহ তাঁর প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন। হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা)’, ‘রব্বানা ওয়ালাকাল হামদ’ বলার পর এটা বলতেনঃ হে আল্লাহ! অমুক, অমুক এবং অমুককে লানত করুন। তখন আল্লাহ এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ ….. فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ “তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদের শাস্তি দিবেন, এ বিষয়ে তোমার করণীয় কিছুই নেই। কারণ তারা জালিম।”(সূরা আলু ‘ইমরান ৩/১২৮)

[সহিহ বুখারী, অধ্যায়: তাফসীর, অনুচ্ছেদ: আল্লাহর বাণীঃ এই বিষয়ে আপনার করণীয় কিছুই নেই।]

এ হাদিস থেকে জানা গেল, আল্লাহ তাআলা নির্দিষ্টভাবে কোন কাফিরকেও অভিশাপ দেয়ার অনুমতি দেন নি।

 আরেকটা হাদিস:

উমর ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তির নাম ছিল ‘আবদুল্লাহ, কিন্তু তাকে ‘হিমার’ (গাধা) উপাধিতে ডাকা হতো। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হাসাতো। একদিন মদপানের অপরাধের জন্য নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ওপর দণ্ড প্রয়োগ করেছিলেন। এরপর আবার একদিন তাকে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আনা হলে তিনি তাকে চাবুক মারার নির্দেশ করলেন। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল, হে আল্লাহ, এই লোকের উপর তোমার অভিসম্পাত হোক। কতবারই না তাকে এ অপরাধে আনা হল!

তখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:

«لَا تَلْعَنُوْهُ فَوَ اللهِ مَا عَلِمْتُ أَنَّه يُحِبُّ اللّٰهَ وَرَسُوْلَه»

“তাকে অভিশাপ দিও না। আল্লাহর শপথ! আমি তার সম্পর্কে জানি যে, সে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালোবাসে।” (বুখারী)

এ হাদিসে দেখা গেলো ,প্রিয় নবি সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দিষ্টভাবে একজন পাপী ব্যক্তিকে অভিশাপ দেয়ার অনুমতি দেন নি।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এভাবে অভিশাপ দেয়া মারাত্মক অপরাধ। তাই এহেন  বাক্য বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...