আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
87 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামুলাইকুম শায়খ।

আমি ক্লাস থ্রি এর একটা মেয়েকে টিউশনিতে পড়াই।বয়স আনুমানিক 9 বছর।পড়ানোর সময় সতর ঢেকে শালীন ড্রেস পড়ে। কিন্তু হিজাব পড়ে না।ওকে দেখলে মনে হয়,ওর বয়সংন্ধি কাল এখোনো শুরু হয় নাই।

1. ওর কী আমার সামনে পর্দা করা ফরজ?

2. আমার কী টিউশনি করানো হালাল হবে?

1 Answer

0 votes
by (63,200 points)

 بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পরিপূর্ণ পর্দা করা ফরজ।
■ মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠)

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}
■ আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}
وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ
অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}
বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা বলতে হলে পর্দার আড়াল থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে হুকুমটি কত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত তা তো সহজেই অনুমেয়।

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রিয় ভাই, মনে রাখতে হবে, ইসলাম ফিতনার দিকে টেনে নিতে পারে এমন সকল পথ থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেয়। আর এ কথায় কোনও সন্দেহ নাই যে, কোন পুরুষের জন্য বড়, বুঝমান বা প্রাপ্ত বয়স্ক গাইরে মাহরাম মেয়েদেরকে সামনাসামনি প্রাইভেট পড়ানো নি:সন্দেহে বিশাল ফিতনা এবং দ্বীন ও চারিত্রিক দিক থেকে মারাত্মক ক্ষতির কারণ। যে পড়ায় আর যারা পড়ে উভয়ের জন্য তা সমানভাবে সত্য। শুধু প্রাইভেট পড়ানো নয় বরং স্কুল, মাদরাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, কোচিং সেন্টার ইত্যাদিতে পুরুষ শিক্ষক দ্বারা মেয়েদেরকে এবং মহিলা শিক্ষক দ্বারা ছেলেদেরকে পড়ানো মারাত্মক ফিতনার কারণ। চতুর্দিকে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকের মাধ্যমে নারী কেলেঙ্কারী এবং এ জাতীয় ফেতনা-ফ্যাসাদ ও বিভিন্ন দুর্ঘটনার অভাব নাই-সচেতন মানুষ মাত্রই তা অবগত। সুতরাং ইসলামের দৃষ্টিতে এভাবে পড়ানো জায়েজ নাই।
১. সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে উক্ত মেয়েকে সতর্কতা  মূলক পর্দা ছাড়া না পড়ানোই উচিত। কারণ, এই বয়সের মেয়েরা বালেগা না হলেও বালেগা হওয়ার নিকটবর্তী হয়। তবে পর্দার সাথে হলে জায়েজ আছে৷ সব চেয়ে উত্তম হলো যে, সে পর্দার এক পাশে বসলো আর আপনি আরেক পাশে বসলেন৷ এভাবে পড়ালেন৷ তবে এ ক্ষেত্রেও আপনার জন্য পূর্বে উল্লিখিত শর্তসমূহ মেনে চলা আবশ্যক।

২,  যদি পুরুষ শিক্ষক  প্রাপ্ত বয়স্ক  মেয়ে শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়িয়ে টাকা নেন, তাহলে যদিও এমনটা করা জায়েয হচ্ছে না, তথাপি বিনিময় হিসেবে পারিশ্রমিক হারাম হবে না।কেননা শিক্ষার বিনিময়ে টাকা গ্রহণ করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রদাণের পদ্ধতি সঠিক হচ্ছে না, সেটা ভিন্ন কথা। আর কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা ভিন্ন কথা।
সর্বপরি আপনি মেয়েকে না পড়িয়ে ছেলেকে পড়ানোর চেষ্টা করবেন। এটাই আপনার জন্য কল্যাণকর হবে। আপনার অন্তর শয়তানের ধোকা থেকে নিরাপদে থাকবে ইনশাআল্লাহ। 
 আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুনঃ https://ifatwa.info/4638/?show=4638#q4638

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...