আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
135 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (48 points)
আসসালামু আলাইকুম।
গীবতের ভয়াবহতা আমি জানি। আমি চেষ্টা করি গীবত এড়িয়ে থাকার।
১) কিন্তু, এমন প্রায়ই হয় যে,  কারোও সাথে কথা বলছি, হুট করেই সে আরেকজনের দোষ নিয়ে বলা শুরু করলো। আমি সায় না দিয়ে চুপ করে থাকি যেনো কথা সে আরও না বাড়ায়।  তাকে কথার মাঝখানে থামানোও যায় না। এক্ষেত্রে কি আমার গুনাহ হবে?
২) কিছু নিকটবর্তী আত্মীয়ের স্বভাবই হচ্ছে গীবত করা। প্রতিটা কথাই গীবত তাদের। গীবত ছাড়া কোনো কথাই বলে না। তারা বাসায় যখন মেহমান হয়ে আসে, তাদের খেদমতে তাদেরকে সময় দেয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু যতক্ষণ তাদের কাছে বসে থাকি, এর গীবত, ওর গীবত করতেউ থাকে৷ আমি শুনতে চাই না এবং সাড়াও দেই না। তাদেরও থামানো যায় না কোনোভাবেই। কথা না শুনলে তারা মিথ্যা অভিযান তুলে যে আনার আচারণে কষ্ট পেয়েছে এবং তারা কষ্ট পেলে আমার স্বামী রেগে যায় তখন সংসারে ঝামেলা হয়৷ কি কারণে কষ্ট পেয়েছে সেটা  মূখ্য নয় তার কাছে।
৩) যখন একই ঘটনা / কারও আচরনের আমিও প্রত্যক্ষদর্শী এবং অন্যরাও৷ এক্ষেত্রে আমরা নিজেরা (প্রতক্ষ্যদর্শীরা) যদি পরে ঘটনাটি / সে ব্যাক্তির আচার-আচরণ নিয়ে কথা বলি এটাও কি গীবত হবে????

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


গীবতের গুনাহ খুবই মারাত্মক, তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে গীবত শোনা থেকে বাঁচতে সেই ব্যাক্তিকে গীবতের সংজ্ঞা আর আর এর ভয়াবহতা সম্পর্কে জানাতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ؟» قَالُوا: اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: «ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ» قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ؟ قَالَ: «إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ، فَقَدِ اغْتَبْتَهُ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম বলেছেনঃ তোমরা কি জান, গীবত কি? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ গীবত হল তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কিছু আলোচনা করা, যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্ন করা হলঃ আমি যা বলেছি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থেকে থাকে, তাহলে আপনি কি বলেন? তিনি বললেনঃ তুমি তার সম্পর্কে যা বলেছ তা যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে, তাহলে তো তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ করলে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৫৮৯, ৭০, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-১১৪৫৪, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৭৫৮, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬২৯৩, মুজামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-১৪১৭, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২১১৬৩}

https://www.ifatwa.info/13153/ ফতোয়াতে আছেঃ- 

গীবত করা কবীরা গোনাহ। এটি হারাম। তাই এটি শোনাও হারাম। কারণ যে কাজ করা হারাম। সে কাজ করতে সহযোগিতা করাও হারাম।

কারণ যে শুনছে, সে যদি না শুনতো, তাহলে গীবতকারী গীবত করতে পারে না। যদি যে শ্রোতা সে যদি বাঁধা দেয়, তাহলে গীবতকারী গীবত করতে পারে না। তাহলে শ্রোতা শোনার দ্বারা গীবতকারীকে গীবতের মত কবীরা গোনাহ করতে সহযোগিতা করছে। আর গোনাহের সহযোগিতা করাও নিষিদ্ধ। তাই উভয় কাজই নিষিদ্ধ ও হারাম।

وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ [٤٩:١٢] 

তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী,পরম দয়ালু। [সূরা হুজুরাত-১২}

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। [সূরা মায়িদা-২] 

وَإِذَا رَأَيْتَ الَّذِينَ يَخُوضُونَ فِي آيَاتِنَا فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ حَتَّىٰ يَخُوضُوا فِي حَدِيثٍ غَيْرِهِ ۚ وَإِمَّا يُنسِيَنَّكَ الشَّيْطَانُ فَلَا تَقْعُدْ بَعْدَ الذِّكْرَىٰ مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ [٦:٦٨] 

যখন আপনি তাদেরকে দেখেন, যারা আমার আয়াত সমূহে ছিদ্রান্বেষণ করে, তখন তাদের কাছ থেকে সরে যান যে পর্যন্ত তারা অন্য কথায় প্রবৃত্ত না হয়,যদি শয়তান আপনাকে ভূলিয়ে দেয় তবে স্মরণ হওয়ার পর জালেমদের সাথে উপবেশন করবেন না। [সূরা আল আনআম-৬৮] 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার গুনাহ হবে।
এক্ষেত্রে আপনাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে,  বাধা দেওয়ার পরেও যদি কাজ না হয়,তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত মজলিস পরিত্যাগ করতে হবে।
অন্যথায় আপনারও গুনাহ হবে।       
,
আরো জানুনঃ 

(০২)
সে গীবত শুরু করলেই আপনি স্পষ্ট জানিয়ে দিবেন যে শরীয়তে গীবত করা ও তাহা শোনা হারাম।
তাই আমি আপনার কথা আর শুনতে পারছিনা।
আমাকে ক্ষমা করবেন,এভাবে বলে আপনি মজলিস ত্যাগ করবেন।

শরীয়ত মানতে গিয়ে দুনিয়াবি কাহারো কথা,কষ্ট সহ্য করলে আল্লাহ তায়ালা এর বিনিময়ে উত্তম জাযা দিবেন,ইনশাআল্লাহ।

(০৩)
এটিও গীবত হবে।

তবে বিশেষ প্রেক্ষাপটে সেই দোষ কাউকে বলা বা আলোচনা করার অনুমতি রয়েছে। 

গীবতের বৈধ ও অবৈধ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1715


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...