জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
اجْتَنِبُوا السّبْعَ المُوبِقَاتِ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللّهِ وَمَا هُنّ؟ قَالَ: الشِّرْكُ بِاللّهِ... وَأَكْلُ الرِّبَا، وَأَكْلُ مَالِ اليَتِيمِ...
তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাক। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সেই সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ কী? তিনি বললেন-
১. আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করা, ২. জাদু করা, ৩. অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা, যা আল্লাহ নিষেধ করেছেন। ৪. সুদ খাওয়া, ৫. এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা, ৬. জিহাদের ময়দান থেকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পালিয়ে যাওয়া। ৭. সতী-সাধ্বী সরলমনা-উদাসীনা মুমিন নারীদের বিরুদ্ধে অপকর্মের মিথ্যা অপবাদ দেওয়া। (সহীহ বুখারী, হাদীস ২৭৬৬, ৬৮৫৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৮৭৪; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৩৬৭১)
অপর একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ آكِلَ الرِّبَا، وَمُؤكِلَهُ، وَشَاهِدَيْهِ، وَكَاتِبَهُ.
যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, যে সাক্ষী থাকে এবং যে ব্যক্তি সুদের হিসাব-নিকাশ বা সুদের চুক্তিপত্র ইত্যাদি লিখে দেয় সকলের প্রতি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা‘নত করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৬৬০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৩৩৩; জামে তিরমিযী, হাদীস ১২০৬)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কোনো ব্যক্তি যদি সুদের টাকা দিয়ে বাড়ি বানায় তাহলে ওই বাড়ি ব্যবহার করা ও তা দ্বারা উপকৃত হওয়া তার জন্য নাজায়েয। এখন যদি ওই ব্যক্তি এই বাড়ি থেকে বৈধভাবে উপকৃত হতে চান, তবে যে পরিমাণ সুদের টাকা উক্ত বাড়ি নির্মাণে খরচ করেছেন সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সে পরিমাণ টাকা গরীব-মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিলে ওই ব্যক্তি উক্ত বাড়ির মালিক হয়ে যাবেন। তখন তা থেকে উপকৃত হওয়া জায়েয হবে। সদকা করার আগ পর্যন্ত ঐ সম্পদ হালাল হবে না এবং এর থেকে কোনো প্রকার উপকৃত হওয়াও তার জন্য বৈধ হবে না। আর পিছনের জীবনে হারাম উপার্জন ও তার ভোগব্যবহারের কারণে আল্লাহ তাআলার নিকট তাওবা-ইস্তিগফারও করতে হবে।
(তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/৬১৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৩২২)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই বাড়িতে যেই পরিমান হারাম টাকা ব্যবহার হয়েছে, আপনার বাবার অনুমতি স্বাপেক্ষে আপনারা যদি সেই পরিমান টাকা গরিব মিসকিনকে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দেন,তাহলে আর কোনো সমস্যা থাকবেনা।
,
এখন কথা হলো,সেই বাড়ির ভাড়া দিয়ে এটা শোধ করা যাবে কিনা?
এখানে যেহেতু বাড়ি নির্মানে হালাল টাকাই অনেক বেশি ছিলো,হারাম টাকা নিতান্তই কম ছিলো,তাই সেই বাড়ি ভাড়ার পুরো টাকাকে হারাম বলা যাবেনা।
তাই আপনারা উক্ত বাড়ি ভাড়ার টাকা দিয়ে সূদের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন।
তবে এই বাড়ি ভাড়ার টাকা দিয়ে সূদ পরিশোধ করতে চাইলে এর মধ্যে যেহেতু কিছুটা হারাম টাকা রয়েছে,তাই সদকাহ করার ক্ষেত্রে কিছু বেশি টাকা সদকাহ করে দিবেন।
★যত টাকা দিয়ে উক্ত বাড়ি নির্মান করা হয়েছিলো,তার মধ্যে যেউ পরিমান হারাম টাকা ছিলো,পার্সেন্ট আকারে হিসেবে করে বাড়ি ভাড়ার সেই পরিমান টাকাকে হারাম হলা হবে।
পরিপূর্ণ ভাবে সূদের টাকা দান করার আগ পর্যন্ত ভাড়ার টাকাকে সম্পূর্ণ হালাল বলা হবেনা।
★আপনার উপর এখন কোনো গুনাহ হবেনা।
★আপনার বাবার পরে যদি পরবর্তীতে অপনারা ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তিটা পান এবং আপনারা যদি সুদের টাকা শোধ করেন, তাহলে হবে।