বিস্মিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
ইমাম মারওয়াযি রাহ বলেনঃ
ﺳﺄﻟﺖ ﺃﺑﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ( ﻳﻌﻨﻲ ﺃﺣﻤﺪ ﺑﻦ ﺣﻨﺒﻞ ) ﻋﻦ ﺣﻠﻖ ﺍﻟﻘﻔﺎ ﻗﺎﻝ : " ﻫﻮ ﻣﻦ ﻓﻌﻞ ﺍﻟﻤﺠﻮﺱ ﻣﻦ ﺗﺸﺒﻪ ﺑﻘﻮﻡ ﻓﻬﻮ ﻣﻨﻬﻢ "
আমি ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ. কে শুধু ঘাড় মুন্ডিয়ে ফেলা সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম,তিনি উত্তরে বললেনঃহ্যা এটা হল অগ্নিপূজারকদের ফ্যাশন, যে ব্যক্তি যে জাতীর অনুসরণ করবে,সে তাদের-ই অন্তর্ভুক্ত হবে।(ফাতাওয়া মার'আতুল মুসলিমাহ২/৫১,আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়১৮/৯৬)
হাদীসে বর্ণিত ক্বাফা (قفا)শব্দের ব্যখ্যা নিয়ে ফুকাহায়ে কিরামের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে, লিসানুল আরব, সিহাহ ইত্যাদি অভিধানের কিতাবে নিম্নোক্ত দু'টি অর্থ-ই বর্ণনা করা হয়েছে।
(ক)কেহ বলেন এর অর্থ মাথার পিছনের অংশ গ্রহণযোগ্য।(আহসানুল ফাতাওয়া)
(খ)আবার কেহ বলেন এর অর্থ ঘাড় (গলার পিছনের গর্দনার অংশ)গ্রহণযোগ্য।
সুতরাং এই(দ্বিতীয়) মতে ঘাড়কে মুন্ডানো জায়েয হবে না।
এবং অধিকাংশ কিতাবে ইহাকেই গ্রহণযোগ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে।যেমনঃ-
وَأَمَّا حَلْقُ الْقَفَا - وَهُوَ مُؤَخَّرُ الْعُنُقِ -
আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় বর্ণিত আছে ক্বাফা অর্থ ঘাড় বা গর্দনা যা গলার পিছনে থাকে।(১৮/৯৬)
ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে
وَعَنْ أَبِي حَنِيفَةَ - رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى - يُكْرَهُ أَنْ يَحْلِقَ قَفَاهُ إلَّا عِنْدَ الْحِجَامَةِ كَذَا فِي الْيَنَابِيعِ.
ঘাড়ে সিংগা লাগানোর প্রয়োজন ব্যতীত মুন্ডানো মাকরুহে তাহরিমি (৫/৩৫৭)
ইমদাদুল ফাতাওয়া এবং উর্দু জামেউল ফাতাওয়ায় ইহাকেই প্রদান্য দেয়া হয়েছে।
দোকানে যে চুল কাটা হয়,এতে মাথার সাইট ও পিছনের অংশকে ছোট করা হয়,এবং খোর দিয়ে কামানোও হয়,যা উপরোক্ত হাদিসে বর্ণিত নিষিদ্ধতার আওতাধীন বলে মনে হচ্ছে,বিদায় দুই সাইট ও মাথার পিছনের অংশ ছোট করা ও খোর দিয়ে মুন্ডানো কখনো বৈধ হবে না বরং মাকরুহে তাহরিমী হবে।
হ্যা কোনো প্রকার ডিজাইন না করে যদি কেউ সাইট ও পিছনে যৎসামান্য ছোট করে নেয়,তাহলে সেটার রুখসত হতে পারে।তবে এমন ছোট করা যাবে না যা দূর থেকে দৃশ্যমান হয়।এবং খুর ব্যবহার করাও জায়েয হবে না।বিস্তারিত জানুন-৩৪১১
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি যে পদ্ধতি চুল ছাঁটাই করার কথা বলছেন,সে পদ্ধতিতে চুল ছাঁটাই করতে পারবেন।
(২)
চুল সম্পর্কে শরয়ী বিধান হচ্ছে,পরিবেশ ও পরিস্থিতি এবং আবহাওয়া সাথে সমতা রেখে বাবড়ি চুল ও চুলমুন্ডন,এ দু-থেকে যে কোনো একটিকে গ্রহণ করা যাবে,এতে কোনোপ্রকার বিধি-নিষেধ নেই।তবে বাবড়ি চুল রাখা সুন্নাত এবং চুল মুন্ডন করাও হানাফি মাযহাব মতে সুন্নাত,অর্থাৎ উভয়টিই সুন্নাত ।(ফাতওয়ায়ে রশিদিয়া)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মাথায় তিন ধরনের চুল ছিলো।জুম্মা, লিম্মা ও ওয়াফরা।
জুম্মাঃ যা কাঁধের উপর ঝুলে পড়ত (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৬৩৫)।
লিম্মাঃ যা প্রায় কাঁধের কাছাকাছি ঘাড় পর্যন্ত ঝুলে পড়ত (নাসাঈ হা/৫০৬২)।
ওয়াফরাঃ যা কানের লতি পর্যন্ত ঝুলে থাকত।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর চুল সাধারণত জুম্মার চেয়ে ছোট এবং ওয়াফরার চেয়ে বড় থাকত (ইবনু মাজাহ হা/৩৬৩৫)।
সুতরাং লম্বা চুল রাখাই সুন্নত।তবে চতুর্দিক সমান করে ছাঁটাই করাও জায়েয রয়েছে।