আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
79 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (40 points)
আসসালামু আলাইকুম , হুজুর আমার একটা প্রশ্ন ছিল অন্যের  হক নিয়ে ।
আমার এলাকায় একটি রাস্তার পাশে একটা গাছ আছে । আজ থেকে অনেক বছর আগে একদিন এই রাস্তা দিয়ে আমি এবং আমার বন্ধু আসার সময় ওই গাছটা থেকে ফল পেরে নিই ।  তখন তেমন কোন কিছু বুঝতাম না হক কি জিনিষ ।। কয়েকদিন আগে আমার ছোট এক ভাইয়ের সাথে রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে ওই গাছ প্রসঙ্গ এলে আমার মনে পড়ে ওই ফল ছিরার কথা । তখন থেকে মনে এই ব্যাপারে প্রশ্ন জাগে যে আমি কি করব । আমি যে অন্যের হক নষ্ট করছিলাম তখন । এতদিন পর ওই একটা ফল এর কথা কিভাবে বলব । এখানে যদিও আমার মনে নেই যে ফলটা আমি ছিড়ে ছিলাম নাকি আমার বন্ধু !  আমি যদি ভেবে দেখি তাহলে এরকম আরও অনেক ঘটনা আছে যে আমি অনেকের গাছের ফল খেয়েছিলাম ।
১. এখন হুজুর এগুলার জন্য আমাকে কি মাপ চাইতে তাদের কাছে ?
২. ওই গাছগুলোর মালিক কে হবে ,জায়গার মালিক নাকি যে গাছটা রুপন করছে সে ?
৩. হুযুর আশঙ্কা করছি যে আমি যদি এখন ওই গাছটার মালিককে খুঁজতে যায় তাহলে অনেক মানুষ হয়ত জানবে । সেটা কি ঠিক হবে ? কারণ আমি যখন মালিক কে খুঁজতে যাব তখন আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞাস করে যে কি জন্য ওই মালিক কে প্রয়োজন ,তখন আমি কি বলব ?

1 Answer

0 votes
by (711,440 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
অন্যর মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত কারো জন্য হালাল হয় না।
কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ
তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু। (সূরা নিসা(২৯)

এবং হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,
عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ " 
নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য  অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না। (তালখিসুল হাবীর-১২৪৯)আরো জানুন- https://www.ifatwa.info/3747


সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
ঐ গাছ যে জায়গায় অবস্থিত রয়েছে, সেই জায়গার মালিককে আপনি খুঁজে বের করবেন। কি জন্য খুজছেন? সেটা কাউকে বলবেন না।এমনকি গোনাহকে গোপন রাখতে আপনি মিথ্যা পর্যন্ত বলতে পারবেন। মালিককে খুজে বের করে আপনি ঐ ব্যক্তির কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে নিবেন। সম্ভব হলে আপনার ঐ বন্ধুকেও সাথে নিয়ে যাবেন বা তার সাথেও এব্যাপারে আলোচনা করবেন। মালিককে খুজে না পেলে ঐ ফলের আনুমানিক একটি মূল্য ঐ মালিকের নামে সদকাহ করে দিবেন।


বিখ্যাত ফাতাওয়া গ্রন্থ আলফাতাওয়াল হিন্দিয়াতে লেখা রয়েছে—
إذا مر الرجل بالثمار في أيام الصيف وأراد أن يتناول منها والثمار ساقطة تحت الأشجار فإن كان ذالك في المصر لا يسعه التناول إلا إذا علم أن صاحبها قد اباح إما نصا أو دلالة بالعادة… وان كان في الحائط فإن كان من الثمار التي تبقي مثل الجوز وغيره لا يسعه الأخذ إلا إذا علم الإذن وإن كان من الثمار التي لا تبقي تكلموا فيه… والمختار أنه لا يأكل منها مالم يعلم أن أربابها رضوا بذالك.
অর্থ : গ্রীষ্মকালে কোনো লোক যদি ফলের (গাছের) পাশ দিয়ে যায় আর ফল নিতে চায়, এদিকে গাছের নিচে ফল পড়ে থাকে, যদি তা শহর বা বসতিতে হয়ে থাকে, তাহলে তা নেয়া জায়িয হবে না৷ তবে এটা যদি জানা যায় যে, তার মালিক এটা গ্রহণের বৈধতা দিয়েছে, সুস্পষ্টভাবে হোক বা পরোক্ষ ইশারা-ইঙ্গিতে হোক৷ আর ফল যদি বাগানে পাওয়া যায় এবং এমন ফল হয় যা অবশিষ্ট থাকে (নষ্ট হয় না), যেমন আখরোট জাতীয় ফল, তাহলে মালিকের অনুমতির বিষয়টি না জেনে ফল গ্রহণ করা যাবে না৷ আর যদি এমন ফল হয়, যা অবশিষ্ট থাকে না, (অর্থাৎ নষ্ট হয়ে যায়) তাহলে এ ব্যাপারে ফকীহগণ মতবিরোধ করেছেন৷ গ্রহণযোগ্য কথা হলো, এটাও গ্রহণ করা যাবে না, যতক্ষণ না মালিক পক্ষ থেকে এ ধরনের ফল নেয়ার ব্যাপারে তাদের সন্তুষ্টি জানা যাবে৷ (আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ৫/৩৩৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 103 views
...