ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
নামাজ সহীহ হওয়ার জন্য শরীর, কাপড় ও নামাজের জায়গা পাক হওয়া শর্ত।
শরীর পাক হওয়া:
এ জন্য অজুর দরকার হলে অজু বা তায়াম্মুম
করতে হবে, গোসলের প্রয়োজন
হলে গোসল বা তায়াম্মুম করতে হবে। এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেন,
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ إِذَا قُمْتُمْ إِلَى
ٱلصَّلَوٰةِ فَٱغْسِلُوا۟ وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى ٱلْمَرَافِقِ
وَٱمْسَحُوا۟ بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى ٱلْكَعْبَيْنِ ۚ
‘‘হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতে দণ্ডায়মান হতে চাও, তখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত
কর, মাথা মাসেহ কর এবং টাখনু পর্যন্ত পা ধৌত
কর’’ সূরা মায়েদা- ৬
কাপড় পাক হওয়া:
পরনের জামা, পায়জামা, লুঙ্গি, টুপি, শাড়ি- ইত্যাদি পাক পবিত্র হওয়া। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন,وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ আর তোমার পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র কর। সূরা
মুদ্দাসসির- ৪
সালাতের স্থান পাক হওয়া:
রাসূলুল্লাহ সা. বলেন,
إِنَّ هَذِهِ الْمَسَاجِدَ لَا تَصْلُحُ لِشَيْءٍ مِنْ هَذَا
الْبَوْلِ، وَلَا الْقَذَرِ
“নিশ্চয় মসজিদ গুলোতে পেশাব-পায়খানা করা
কোনো ক্রমেই সঙ্গত নয়।” সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪২৯
নাজাসাতে গালীযার হুকুম:
গালীজা নাপাক যেমন পেশাব যতটুকুই লাগুক না
কেন; যেখানে নাপাক
লাগছে কাপড়ের উক্ত অংশটি নাপাক হয়ে যাবে।
তবে এর দ্বারা নামায পড়া শুদ্ধ হওয়ার জন্য
মূলনীতি:
তরল নাপাকীর ক্ষেত্রে নাজাসাতে গলীযা যদি
কাপড়ে বা শরীরে লাগে এবং তা তরল হয় (যেমন, প্রস্রাব) তাহলে সেক্ষেত্রে তা যদি দিরহামের আয়তন (অর্থাৎ
হাতের তালুর গভীরতা সমপরিমাণ) এর কম হয়
অথবা
নাপাকি শক্ত হলে যদি দিরহামের ওজন
(বর্তমান মেট্রিক হিসাবে যা ৩.০১৬৮ গ্রাম)-এর চেয়ে কম হয় তাহলে তা না ধুয়ে নামায
পড়লে নামায সহীহ হয়ে যাবে। তবে এ পরিমাণ অল্প নাপাকিও ধুয়ে নেওয়া ভালো। তাই সাধারণ
অবস্থায় এ পরিমাণ নাপাকি নিয়ে নামায পড়া অনুত্তম।
আর যদি নাপাকি দিরহামের সমপরিমাণ হয় তাহলে
তা ধুয়ে ফেলা ওয়াজিব। এ অবস্থায় নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। তাই কেউ এ অবস্থায়
নামায পড়লে সে নামায পুনরায় পড়ে নেওয়া ওয়াজিব হবে।
قال صلى الله عليه و سلم : تعاد الصلاة من قدر الدرهم من الدم
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে র্বণতি, রাসূল সাঃ ইরশাদ করছেনে-এক দরিহাম পরণিাম
রক্তরে দরুন নামাযকে পুনরায় আদায় কর। সুনানে বায়হাকী ৩৮৯৬
হযরত আলী রাঃ এবং ইবনে মাসউদ রাঃ [কাপড়]
নাপাক হওয়ার পরমিাণ- নর্দিষ্টি করছেনে এক দরিহাম। আর আব্দুল্লাহ বনি ওমর রাঃ
নির্ধারণ করছেনে নখ পরমিাণ। উমদাতুল কারী-৩/১৪০
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
১. হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নাপাক কাপড় পরিধান করে কুরআনের মুসহাফ স্পর্শ করা যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। আবার এই অবস্থায় তেলাওয়াতও করা যাবে। তবে গোসল ফরজ
হলে বা হায়েজ অবস্থায় থাকলে কুরআনের মুসহাফ স্পর্শ করা যাবে না এবং তেলাওয়াতও করা যাবে না।
২. নাপাক কাপড় পরিধান করে
শুধু নামাজ পড়াই নিষেধ। তা ছাড়া নাপাক কাপড় পরিধান করে দুআ, যিকর ও কুরআন তেলাওয়াত
করা যাবে। তবে পাক পবিত্র কাপড় পরিধান করেই তেলাওয়াত করা উত্তম।
৩. ওজু করার পরেও পরিবর্তন
করলে হবে।