আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
295 views
in পবিত্রতা (Purity) by (42 points)
reopened by
আসসালামু আলাইকুম হুজুর,,, আমি হোস্টেলে থাকি। হোস্টেলে আমাদের বাথরুম নোংরা থাকে। আবার প্রস্রাব খানা কম ঢালু এবং একটু ছোট। প্রস্রাব করলে মনে হয় কিছু কিছু ছিটা পায়ে লাগছে। কাপড়ে লাগে কিনা জানি না। কিন্তু সহজে দেখা যায় না। এইটা ১ দিরহামের কম। এখন পা ধোয়ার সময় কাপড়তো নিচে নেমে যায়। তাই কিছু লাগলে তা মুছে যাবে। এখন পা ধোয়ার পর কি ওই কাপড় নাপাক থাকবে?? পা ধুলে কাপড়ও ভিজে। যা ১ দিরহামের থেকে বেশি। কিন্তু আমি যদি বার বার কাপড় পরিবর্তন করতে থাকি তাহলেতো দিনে ৪/৫ টা কাপড় পরিবর্তন করতে হবে। এখন আমার করণীয় কি??

আর আরেকটা সমস্যা,,, আমরা বাইরে জুতা খুলা রাখি। এখন দেখা যায় বাথরুম থেকে আসার পর একজন আরেকজনের জুতার উপর জুতা রাখে। এই হিসাবে প্রস্রাব খানায় বসতে গেলে হয়ত পায়ের তলার নাপাকি কাপড়ে লাগতে পারে (জুতার নয়)। কারণ কাপড় একটু ঢিলা থাকতে পারে। যদিও সতর্ক থাকি। আগে এর জন্য টয়লেট করে সরাসরি গোসল করতাম। সন্দেহ দূর করার জন্য। দিনে ৩/৪ বার। কিন্তু এইটাতো এখন ঠিক করা লাগবে। কিছুদিন পর আল্লাহ চাইলে কর্মজীবনে যাব। সবকিছু মিলিয়ে একটা সমাধান দেন। জাজাকাল্লাহ খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

প্রস্রাব-পায়খানা ও পবিত্রতা অর্জন করার সময় প্রস্রাব ও নাপাক পানির ছিটা থেকে সতর্ক থাকা।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন

مَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم بِقَبْرَيْنِ، فَقَالَ: إِنَّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ، وَمَايُعَذَّبَانِ فِيْ كَبِيْرٍ، أَمَّا أَحَدُهُمَا فَكَانَ لاَ يَسْتَتِرُ مِنَ الْبَوْلِ، وَأَمَّا الآخَرُ فَكَانَ يَمْشِيْ بِالنَّمِيْمَةِ.

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তিনি বললেন: কবর দু’টিতে শায়িত ব্যক্তিদ্বয়কে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে উভয়কে বড় কোনো গুনাহ’র কারণে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। তাদের একজন প্রস্রাব থেকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্রতা অর্জন করতো না। আর অপরজন চোগলখোরী করতো (একজনের কথা আরেক জনকে বলে পরস্পরের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে দিত)” সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২১৬

 

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে আছে:

البول المنتضح قدر رؤوس الإبر معفو للضرورة

মর্মার্থ: সুঁইয়ের মাথার মত প্রস্রাবের ছিটা শরীর ও কাপরে লাগার দ্বারা উক্ত শরীর ও কাপড় নাপাক হয়ে যায় না। তবে যদ্দূর সম্ভব তা থেকে সতর্ক থাকা উচিৎ। ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১০১

 

নাজাসাতে গালীযার হুকুম:

গালীজা নাপাক যেমন পেশাব যতটুকুই লাগুক না কেন; যেখানে নাপাক লাগছে কাপড়ের উক্ত অংশটি নাপাক হয়ে যাবে।

 

তবে এর দ্বারা নামায পড়া শুদ্ধ হওয়ার জন্য মূলনীতি:

তরল নাপাকীর ক্ষেত্রে নাজাসাতে গলীযা যদি কাপড়ে বা শরীরে লাগে এবং তা তরল হয় (যেমন, প্রস্রাব) তাহলে সেক্ষেত্রে তা যদি দিরহামের আয়তন (অর্থাৎ হাতের তালুর গভীরতা সমপরিমাণ) এর কম হয়

অথবা

নাপাকি শক্ত হলে যদি দিরহামের ওজন (বর্তমান মেট্রিক হিসাবে যা ৩.০১৬৮ গ্রাম)-এর চেয়ে কম হয় তাহলে তা না ধুয়ে নামায পড়লে নামায সহীহ হয়ে যাবে। তবে এ পরিমাণ অল্প নাপাকিও ধুয়ে নেওয়া ভালো। তাই সাধারণ অবস্থায় এ পরিমাণ নাপাকি নিয়ে নামায পড়া অনুত্তম।

আর যদি নাপাকি দিরহামের সমপরিমাণ হয় তাহলে তা ধুয়ে ফেলা ওয়াজিব। এ অবস্থায় নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। তাই কেউ এ অবস্থায় নামায পড়লে সে নামায পুনরায় পড়ে নেওয়া ওয়াজিব হবে।

قال صلى الله عليه و سلم : تعاد الصلاة من قدر الدرهم من الدم

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে র্বণতি, রাসূল সাঃ ইরশাদ করছেনে-এক দরিহাম পরণিাম রক্তরে দরুন নামাযকে পুনরায় আদায় কর। সুনানে বায়হাকী ৩৮৯৬

হযরত আলী রাঃ এবং ইবনে মাসউদ রাঃ [কাপড়] নাপাক হওয়ার পরমিাণ- নর্দিষ্টি করছেনে এক দরিহাম। আর আব্দুল্লাহ বনি ওমর রাঃ নির্ধারণ করছেনে নখ পরমিাণ। উমদাতুল কারী-৩/১৪০

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পা ধোয়ার পরও কাপড় পাক থাকবে। কারণ, : সুঁইয়ের মাথার মত প্রস্রাবের ছিটা শরীর ও কাপরে লাগার দ্বারা উক্ত শরীর ও কাপড় নাপাক হয়ে যায় না। তবে যদ্দূর সম্ভব তা থেকে সতর্ক থাকা উচিৎ। ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১০১

 

২. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রেও কাপড় নাপাক হবে না যতক্ষণ না আপনি সরাসরি নাপাকি লেগেছে এটা না দেখবেন। শুধু সন্দেহের কারণে কাপড় বা শরীর নাপাক হবে না। তাই এই সন্দেহের কারণে দিনে ৩/৪ বার গোসল করার প্রয়োজন নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (42 points)
হুজুর এইটার উত্তর দিলে খুবই উপকৃত হতাম।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...