শায়খ আবার একটু তাড়াতাড়ি বলবেন দয়া করে

Question

https://www.ifatwa.info/52249/
শায়খ আমি এখানে উল্লেখ করেছি যে আমার স্বামী বলছে,,তিনি বলেছেন যে তিনি মনে কর তোমাকে তালাক দিলাম এটা বললেনি তিনি নাকি বলছেন মনে করো যদি কেউ তার স্ত্রীকে তালাক দেয়।কিন্তু আমি তখন ঐ বাক্যটাই শুনেছিলাম যে মনে করো তোমাকে তালাক দিলাম।আর এজন্যই তাকে আমি আমার শোনা কথা অনুযায়ী তাকে বার বার জিজ্ঞেস করি যে আপনি কোন উদ্দেশ্যে বলছেন তখন সে রাগে বলছে এখানে যে কেনো ২ টা উদ্দেশ্য হতে পারে হয় তোমাকে মাসয়ালা শিক্ষা দেওয়ার জন্য নয়তো তোমাকে স্ত্রী হিসেবে ত্যাগ করার জন্য।এর আগেও বলছে আমার শোনা কতার উপর ভিত্তি করে এটা একটা উদাহরণের মতো।কিন্তু সে পরবর্তী তে বলছে যে সে ঐ বাক্যটা ঐভাবে বলেনি আমি যেভাবে।এ বিষয় টা নিয়ে আগে আমাদের মাঝে অনেক ঝামেলা হয়েছে বাড়াবাড়িও হয়েছে।এখন তাকে কিভাবে জিজ্ঞেস করবো।তার তো মনেই নেই যে সে ঐ বাক্যটা বলছে কিনা। কারণ সে আগেই ঐ ঘটনার পরের দিনই বলছে যে সে ঐ ভাবে বলেনি।কিন্তু আমিতো ওরকম কিছুই শুনেছিলাম আর তখন তো সন্দেহ হয়নি।আর এখন আমারই সন্দেহ হচ্ছে।

১.শায়খ আমার স্বামীকে সন্দেহের কারণে এবাক্যের ব্যাপারে এখন জিজ্ঞেস কিভাবে করবো।সে যদি এখন উল্টো পাল্টা কিছু বলে।ঝগড়া লেগে যাবে বলে মনে হচ্ছে।এখন কি করবো জিজ্ঞেস করবো আবার?ভয় হয় যদি এটা অন্য পর্যায়ে চলে যায় আবার।

২.শায়খ আমি প্রথমে ঘটনাটা ঘটার পরের দিন ৬/৭ মাস আগে মনে করো তোমাকে তালাক দিলাম এই বাক্যটার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করি আর সেও বিবরণে উল্লেখিত উত্তর দেয় ২ টা উদ্দেশ্য নিয়ে।কারন তখন কোনো ধরনের সন্দেহ ছিলো মনে কর কথাটা নিয়ে।এখন সন্দেহ হচ্ছে যে মনে করো কথাটা বলেছে কিনা।আপনাকে আগের দিন করা প্রশ্ন এবং এখন যে বিবরণ দিয়েছি সব কথা অনুযায়ী কি তালাক হবে??

৩.যদি তালাক হয় তাহলে কয় তালাক হবে??

Answer 1

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

https://ifatwa.info/44865/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ তালাক খুবই মারাত্মক এক বিষয়। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক। (আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।)

★শরীয়তের বিধান হলো,তালাকের উদ্দেশ্য ছাড়া শুধু তালাক শব্দ উচ্চারণ করলে বা লিখলেও তালাক হয় না। কেননা, ফকিহগণ বলেছেন,

يشترط بالاتفاق القصد فى الطلاق، وهو إرادة التلفظ به ولو لم ينو فلا يقع طلاق فقيه يكره ولا طلاق حاك عن نفسه أو غيره لأنه لام يقصد معناه، بل قصد التعليم والحكاية، (الفقه الاسلام وادلته، كتاب الطلاق، باب شروط الطلاق-7/368)

সারমর্মঃ সকলের মতে তালাকের ইচ্ছা থাকতে হবে। আর তাহল, (তালাকের উদ্দেশ্যে) ইচ্ছাকৃতভাবে তালাক শব্দ উচ্চারণ করা। (আল ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু ৭/৩৬৮)

ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ

ইবনে হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে (১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها وعمل بقضيتها فإنها لا تزال تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم

অর্থাৎ, এর ঔষধ একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু সময় পর চলে যাবে; যেমনটি তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।

এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ عَلَى الْوَسْوَسَة

‘সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি শয়তানের বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ)

ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان

‘ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 (০১) প্রশ্নের বিবরণ মতে এক্ষেত্রে তালাক হবেনা। উক্ত সমস্যাটি হওয়ার মূল কারণ হলো ওয়াসওয়াসা । ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচতে উপরে উল্লেখিত আমলগুলি করুন।

(০২) এখানে আপনার সন্দেহের কোনো ধর্তব্য নেই। আপনি স্বামী যদি বলে যে আমি মনে করো/ধরে নাও ইত্যাদি টাইপের বাক্য বলে তালাকের কথা বলেছেন, তাহলে তালাক হবেনা। আর যদি সরাসরি "আমি তোমাকে তালাক দিলাম" এ রকম বাক্য বলে, তাহলে তালাক হয়ে যাবে। তবে একই বিষয়ে সন্দেহের ভিত্তিতে বারংবার আপনার স্বামীকে প্রশ্ন করতে গিয়ে শয়তান ওয়াসওয়াসা দিয়ে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিধায় এমনটা না করাই শ্রেয়।

(০৩) উক্ত কথার দ্বারা তালাক হবে না। আর যদি তালাক ধরেও নেওয়া হয় তাহলে এক তালাকে রজয়ী হবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://www.ifatwa.info/2579