বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
খতমে বোখারী বা খতমে কুরআন কুরআন হাদীস দ্বারা সরাসরি প্রমাণিত নয়।তবে কুরআন মু’মিনের জন্য শিফা।সমস্ত কুরআনে কারীম-ই মু'মিনের জন্য হেদায়ত, শে'ফা ও রহমত স্বরূপ।এবং খতমে বোখারী সম্পর্কে বুজিুর্গানে কেরামের অভিজ্ঞতা যে,তার মধ্যে বরকত নিহিত রয়েছে।
আল্লাহ তা'আলা বলেন-
ﻭَﻧُﻨَﺰِّﻝُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥِ ﻣَﺎ ﻫُﻮَ ﺷِﻔَﺎﺀ ﻭَﺭَﺣْﻤَﺔٌ ﻟِّﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ الخ
আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত।(সূরা বনী ইসরাঈল-৮২)
ﻗُﻞْ ﻫُﻮَ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻫُﺪًﻯ ﻭَﺷِﻔَﺎﺀٌ
বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার।(সূরা হা-মীম সেজদা-৪৪)
কুরআনে কারীম অন্তর এবং শরীর উভয়ের জন্যই শে'ফা স্বরূপ।এ সম্পর্কে আল্লামা শাওকানী রাহ বলেন,
" ﺍﺧﺘﻠﻒ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻌﻠﻢ ﻓﻲ ﻣﻌﻨﻰ ﻛﻮﻧﻪ ﺷﻔﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﻗﻮﻟﻴﻦ : ﺍﻷﻭﻝ : ﺃﻧﻪ ﺷﻔﺎﺀ ﻟﻠﻘﻠﻮﺏ ﺑﺰﻭﺍﻝ ﺍﻟﺠﻬﻞ ﻋﻨﻬﺎ ﻭﺫﻫﺎﺏ ﺍﻟﺮﻳﺐ [ ﺃﻱ : ﺍﻟﺸﻚ ] ﻭﻛﺸﻒ ﺍﻟﻐﻄﺎﺀ ﻋﻦ ﺍﻷﻣﻮﺭ ﺍﻟﺪﺍﻟﺔ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ .ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺍﻟﺜﺎﻧﻲ : ﺃﻧﻪ ﺷﻔﺎﺀ ﻣﻦ ﺍﻷﻣﺮﺍﺽ ﺍﻟﻈﺎﻫﺮﺓ ﺑﺎﻟﺮﻗﻰ ﻭﺍﻟﺘﻌﻮﺫ ﻭﻧﺤﻮ ﺫﻟﻚ .ﻭﻻ ﻣﺎﻧﻊ ﻣﻦ ﺣﻤﻞ ﺍﻟﺸﻔﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻌﻨﻴﻴﻦ
কুরআন কি প্রকারের শে'ফা দানকারি? সে সম্পর্কে দু'টি মতামত পাওয়া যায়।যথাঃ-
(এক) কুরআন অন্তরের বক্রতা ও অজ্ঞতা এবং আল্লাহর মা'রেফত অর্জনের প্রতিবন্ধকতাকে দূর করে দেয়।
(দুই)কুরআন শরঈ ঝাড়-ফুক ও তাবিজের মাধ্যমে শরীরের বাহ্যিক রোগের শে'ফা।(ফাতহুল ক্বাদির-৩/৩৬২)বিস্তারিত জানুন-
997
প্রশ্ন হল, রাসূলুল্লাহ সাঃ বা সাহাবায়ে কেরামগণ কি খতমে কুরআন বা খতমে বোখারী পড়েছেন?
উত্তর হল, না।
তাহলে কি এ বা এজাতীয় খতম বিদ'আতের অন্তর্ভুক্ত ?
এর উত্তর বুঝার পূর্বে এ সম্পর্কীয় একটি মূলনীতি আমাদের বুঝতে হবে। এসম্পর্কে বিস্তারিত জানুন-
1286
এসব খতমের অবস্থান হল, ডাক্তারদের অভিজ্ঞতালব্দ পথ্যের মত। অভিজ্ঞ ডাক্তারগণ যেমন তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বের করেছেন যে, জ্বর হলে প্যারাসিটামল খেলে ভাল হয়, ঠান্ডা লাগলে ওরাডিন ইত্যাদি ঔষধ খেলে ভাল হতে পারে,তেমনি বুযুর্গানে দ্বীন তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জেনেছেন যে, কিছু কিছু নির্দিষ্ট খতমের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু ফায়দা হয়ে থাকে। তাই তারা বুযুর্গানে দ্বীন থেকে বিভিন্ন খতমের প্রমাণ পাওয়া যায়।এসবই অভিজ্ঞতালব্দ বিষয়। কোনটিই দ্বীনের বিষয় নয়। বা কুরআন ও হাদীস থেকে প্রমাণিত বিষয় নয়। এসবকে কেউ সওয়াবের কাজও মনে করে না। বরং প্রয়োজন পূরণের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।যেমন ডাক্তারের সাজেশন অনুপাতে ঔষধ সেবন। তা’ই ডাক্তারের পরামর্শ অনুপাতে পথ্য সেবন যেমন হারাম ও বিদআত নয়, তেমনি কতিপয় দুনিয়াবী উদ্দেশ্য হাসিলের আশায় বুযুর্গদের অভিজ্ঞতালব্দ উপরোক্ত খতম পড়াও হারাম বা বিদআত নয়।হ্যাঁ, এসবকে সুন্নত মনে করা, কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি মনে করা বিদআত। কেননা দু'আয়ে ইউনুস হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলে ও সংখ্যা কোনো হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।নতুবা এমনিতে আমল করতে কোন সমস্যা নেই।
সুপ্রিয় পাঠকবর্গ!
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতিয়মান হয় যে,বিপদআপদ থেকে মুক্তি ও মাকসাদ হাসিল করতে উক্ত খতম কেউ যদি ঈমান ও ইয়াকিনের সাথে পড়ে তবে তার মাকসাদ পূর্ণ হতে পারে।তবে এক্ষেত্রে কোনো সময় বা সংখ্যা হাদীসে নির্ধারিত নেই।যে কোনো সময়ই পড়া যাবে।এবং যত ইচ্ছা পড়া যাবে।এক্ষেত্রে কোনো কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যাকে সুন্নাত মনে করা যাবে না।এটা বেদাআত হবে।কুরআন বা বোখারী কে সম্পূর্ণ পড়তে হবে ,এমনটা জরুরী মনে করা বিদ’আত।সম্পূর্ণ না পড়লে পড়লে দু'আ কবুল হবে না এবং পড়লে দু'আ কবুল হবে, এরকম আকিদা-বিশ্বাস পরিত্যাগ করে যদি কেউ পূর্ববর্তী বুজুর্গানে কেরামদের তরিকাকে গ্রহণ করে তবে তা অবশ্য নিন্দনীয় হবে না।নির্দিষ্ট সংখ্যা সম্পূর্ণ কিতাব সম্পন্ন্ করে বিভিন্ন খতম পড়া সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-
1145